শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২৭মে ২০১৭
শিশু ও নারীর উপর নির্যাতন এবং নারী-পুরুষের মধ্যে বিদ্যমান অসম অবস্থা এমনএকটি জটিল সমস্যা যা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ, প্রতিষ্ঠান প্রতিটি স্তরেই প্রভাব ফেলে। এই জটিলতা দূরকরা সম্ভব যদি আমরা বেসরকারীসংগঠন, সরকারীপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসকলেতাদেরনিজনিজঅবস্থান থেকে এই জটিলতা নিরুপন করে একসাথে কাজ করে কোন একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে একা জেন্ডার সম্পর্কিত সহিংসতা রোধ করা সম্ভব নয়, একত্রে সমস্যাটি বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ী কৌশলগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্যøান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর আর্থিক সহযোগিতায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে বাস্তবায়িত নারী ও শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম সমন্বয়করনের লক্ষ্যে অপরাজেয়-বাংলাদেশ স্থানীয় সরকার এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আজ ২৫ মে ২০১৭ইং বৃহসপতিবার ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন নগর ভবনের সেমিনার কক্ষে একটি পরামর্শকরণ সভা (ঈড়হংঁষঃধঃরড়হ গববঃরহম) অনুষ্ঠিত করে। সভাতে ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের বিভাগীয় প্রধানগন, আঞ্চালিক নির্বাহী কর্মকর্তগন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরগন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রধান অতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব খান মোহাম্মাদ বিলাল। সভাপতিত্ব করেন অপরাজেয়-বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক জনাব ওয়াহিদা বানু। সভায় বিষয়ভিাত্তক উপস্থাপন করেন অপরাজেয়-বাংলাদেশ-এর সহকারি পরিচালক জনাব আমিনা খাতুন। সভায় প্রায় ৫০ জন অংশগ্রহনকারি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নিম্নলিখিত ইস্যুগুলির উপর অত্যন্ত জোরালোভাবে প্রাধান্য পায়ঃ
জাতিয়এবং স্থানীয় সরকারে যারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন তারাবাল্য বিয়েবন্ধ, শিশু ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিদ্যমান যত আইন ও পাবলিক পলিসি আছে তার বাস্তবায়ন জোরদার করবে। সম্ভাব্য অন্যান্য যারা এ বিষয়ে কাজ করতে পারে তাদের ভূমিকা চিহ্নিত করবে।
প্রতিটি ওয়ার্ডে মাননীয়ওয়ার্ড কাউন্সিলর-এর সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারি সংস্থাকে অর্ন্তভুক্তি করে শিশু আইন ২০১৩ এর আলোকে কমিটি তৈরী করার জন্য সুপারিশ করা
নানা কারনে প্রতিনিয়ত শিশুরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। এমন জরুরী অবস্থার ভিত্তিতে শিশু উদ্ধার ও নিরাপদ আশ্রয় দিতে পারে এমন শিশুবান্ধব সরকারি ও বেসরকারি অংশীদার সংগঠন তালিকাভূক্তি করা এবং সমন্বয় করে এরতদারকি মূল্যায়ন ও প্রতিবেদন করার একটি কর্ম পন্থা প্রতিষ্ঠা করা।
নারী ও শিশু নিযৃাতন প্রতিরোধে একজন দায়িত্ববাহক হিসেবে কেন আমরা এই ইস্যুটি নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আইনি বাধ্যবাধকতা কী রয়েছে এ বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়।
প্রধান অতিথী তার বক্তব্যে অপরাজেয়-বাংলাদেশের এই সময়োপযোগি উদ্যোগকে স্বাগত জানান। নারী নির্যাতনের কারন হিসেবে তিনি বলেন আইন বাস্তবায়ন করতে পারছি না ও আইনের যথেচ্ছাচার ব্যবহার, ব্রিটিশ আইন ও কোরআন-সুন্নাহর মধ্যে কিছু কিছু সাংঘর্ষিকতা বলে মনে করেন। ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন পথবাসির শিশু এবং অটিস্টিক মানুষের উন্নয়নে কাজ করবে এবং এলক্ষ্যে সদরঘাট এলাকাতে একটি বিল্ডিং বরাদ্দ দিয়েছেন যার ডিজাইন এর কাজ চলছে।এই কাজটি এনজিওদের সম্পৃক্ত করে বাস্তবায়ন হবে বলে জানান। তিনি সকল ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের আইনি বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন দিবার প্রয়োজন বলে মনে করেন। সামাজিকভাবে শিশু ও নারী সুরক্ষা নিশ্চিত হতে প্রতিটিওয়ার্ডে মাননীয়ওয়ার্ড কাউন্সিলর-এর সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারি সংস্থাকে অর্ন্তভুক্তি করে শিশু আইন ২০১৩ এর আলোকে কমিটি তৈরী করার জন্য বলেন। তিনি শিশু ও নারীদের উন্নয়নের ব্যাপারে অপরাজেয়-বাংলাদেশকে সম্ভব সব ধরনের সহায়তা করবেন বলে মন্তব্য করেন।
এই সভার বিশেষ অতিথী জনাব ফরিদা ইয়াসমিন উপ-পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি, উইমেন সাপোর্ট এ্যান্ড ইনভেষ্টিগেশন বলেন এনজিও, জুডিশিয়ারি,মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়, পুলিশ বিভাগ সকলের সমন্বয়ে একটি প্লাটফর্ম তৈরী হওয়া জরুরী যে খানে নারী নির্যাতন ইস্যুগুলির ধরন নিরুপন করে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তিনি মেয়ে শিশুদের বড় হওয়ার আকাঙখা ও জীবন দক্ষতা দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভার বিশেষ অতিথী মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাল্টিসেক্টোরাল প্রোগ্রাম অন ভায়োলেন্স এগেইনইষ্ট উইমেন এর প্রকল্প পরিচালক জনাব ডঃ আবুল হোসেন বলেন- জেলা ও থানা পর্যায়ে নারী ও শিশু সুরক্ষা কমিটির মত নগরেও নারী ও শিশু নির্যাতন সুরক্ষা কমিটি করার উপর গুরত্বারোপ করেন। সরকারি ও বেসরকারিভাবে পরিচালিত সমস্ত শেল্টার হোমগুলির মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক করার কথা বলেন। তিনি বাল্য বিয়ে নিরোধ এ্যাক্ট এবং এর উপর একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরী হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এবং স্থানীয় সরকারকে সংগে নিয়ে বাস্তবায়ন করবে বলে জানান।