শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১৭ জানুয়ারি ২০১৭
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘দেশের অগ্রগতি ও অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে দেওয়া হবে না। দুই দুই বার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি শিক্ষা না পেয়ে থাকে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার পক্ষে রায় দিয়ে বিএনপিকে চিরদিনের মতো গণতন্ত্রের শিক্ষা দেবে।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত।
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- মোজাজফর হোসেন পল্টু, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ফজলে নূর তাপস, আবু আহম্মেদ মান্নাফী, মোর্শেদ কামাল, গোলাম আশরাফ তালুকদার প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সুজিত রায় নন্দী, আব্দুস সবুর, দেলোয়ার হোসেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাসেল স্কয়ারে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে এ সভায় উপস্থিত হন। তবে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি। সভা পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেন এবং মামুনুর রশিদ শুভ্র।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আজ ৫ জানুয়ারি। ২০১৪ সালের এই দিনে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে আন্দোলনের নেমে গণহত্যা চালিয়েছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে রক্ষা করে গণতন্ত্রের বিজয় সূচিত করেছিলেন। বিএনপি এত কিছু করার পরও সেই নির্বাচন বন্ধ করতে পারে নাই। কারণ, সেই দিন বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার পক্ষে ছিল। বাংলার মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে ছিল। বাংলার মানুষ গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল। সেদিন যারা সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি করে দেশকে একটি অনিশ্চয়তার পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, শেখ হাসিনা তাদেরকে প্রতিহত করে সংবিধানকে রক্ষা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি, ২০২১ সালের অনেক আগে, ২০১৮ সালের মধ্যেই তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। কারণ, ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংকের রেটিং অনুযায়ী বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।’
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ‘এমন একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আবার তারা পানি ঘোলা করতে চায়। আবার তারা আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করতে চায়, যেমন করেছিল ২০১৫ সালে। আন্দোলনের নামে নিরীহ মানুষকে পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। তারা আবার সেই ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে চায়। এই দেশে আর কোনো গণহত্যা করতে দেওয়া হবে না।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে গণতন্ত্রের বিজয়যাত্রাকে অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তার কন্যার নেতৃত্বে কায়েম করতে হবে। এই হোক আজকের শপথ।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপি অতীতে যতই ভুল করুক, তারা আর সন্ত্রাস ও নাশকতার পথে যাবে না। যদি তারা যায়, তাহলে তাদেরকে চরম মূল্য দিতে হবে। অতীতেও আমরা তাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করেছি, ইনশাল্লাহ আগামী দিনেও বিএনপি-জামায়াত কোনো ষড়যন্ত্র করলে সেই ষড়যন্ত্রও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ও ২০১৫ সালে বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আজ সকল ব্যর্থতার দায় নিয়ে বেগম জিয়া এখন জনগণের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আজকেও তিনি কর্মসূচি দিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের কোথাও ম্যাডাম জিয়ার কোনো লোক রাজপথে নামতে সাহস পায় নাই। কালো দিবস পালন তো দূরের কথা, কোনো কর্মসূচি বাংলাদেশের জনগণ তাদেরকে পালন করতে দেয় নাই।’
খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘এই বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে বহুবার ছিনিমিনি খেলেছেন। বহুবার আঘাত হেনেছেন। আর জনগণ আপনাকে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার সুযোগ দেবে না। ভবিষ্যতেও যদি কোনো রকম অশুভ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার ষড়যন্ত্র করে থাকেন তাহলে এই বাংলার জনগণ আপনাকে শক্তভাবে প্রতিহত করবে।’