শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৭ এপ্রিল ২০১৭
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ দিল্লি নিতে জানে কিন্তু দিতে জানে না বলে মন্তব্য করেছেন।বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মু. রহমতুল্লাহ প্রমুখ।
তিনি বলেন, আজকের মতোই জনমতকে তাচ্ছিল্য করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অঙ্গচ্ছেদ করে বেরুবাড়ী দিল্লির দরবারে উপহার হিসেবে দিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখা ভূমি সীমান্ত সমস্যার এক ধরনের লোক দেখানো সমাধানের কথা বলা হলেও এখনও কঠিন জটিল আবর্তের মধ্যে পড়ে আছে ছিটমহলবাসীরা।
রিজভী বলেন, উপরন্তু চুক্তি ছাড়াই ভারতের পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকদিনের জন্য ফারাক্কা বাঁধ চালুর প্রস্তাব তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার মেনে নিয়ে অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু ভারত সেই সুযোগ নিয়ে স্থায়ীভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালু রেখেছে, ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে রুক্ষ ও মরুময় অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে। অতি নতজানু হওয়ার কারণেই দিল্লির মতলব টের পায়নি তৎকালীন আওয়ামী সরকার।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক সর্বোচ্চ শিখরে রয়েছে বলে দুদেশের সরকারি মহল থেকে একাধিকবার দাবি করা হয়েছে। যদি আকাশছোঁয়া সম্পর্কই থাকে তবে এতো তড়িঘড়ি করে চুক্তি কেন? ভারতের নীতিনির্ধারকরা তো খুশী থাকবেনই, কারণ বাংলাদেশ থেকে না চাইতেই অনেক কিছু পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ২০১০ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর করেছিলেন। সেই সময় তিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য প্রায় ৫০টির মতো চুক্তি করেছিলেন। অপ্রকাশ্য চুক্তিগুলির বিষয়ে এখনও জনগণ কিছুই জানতে পারেনি। সীমান্ত সমস্য সমাধানের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু এর বিনিময়ে যে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডকেই একরকম ইজারা দেয়া হয়েছে, যেমন-নামমাত্র মাশুলের বিনিময়ে ভারতকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে বহুমূখী ট্রানজিটের নামে করিডোরের সুবিধা দেয়া হয়েছে। অবকাঠামো না থাকলেও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করার সুযোগ পাবে ভারত।
তিনি আরো বলেন, সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ’র হাতে প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশি নাগরিক খুন হচ্ছেন। দুই দেশের মধ্যেও বাংলাদেশের পণ্য রফতানিতে ভারত বাধা সৃষ্টি করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া কোন প্রতিরক্ষা চুক্তি এদেশের মানুষ মেনে নেবে না। বাংলাদেশের জনগণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল হতে দেবে না। বাংলাদেশের দু’একজন লোক ভারতে চাকরি করতে পারে, কিন্তু জনগণ একাত্তরের মতোই তাদের বীরত্ত্ব দিয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।