শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২৮ এপ্রিল ২০১৭
ডলারের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানিকৃত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যাতে বৃদ্ধি না পায়, সে বিষয়ে সরকার সচেতন রয়েছে বলেছেন,বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শুভাশীষ বসু এবং পরিচালক ট্রেড অর্গানাইজেশন (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকায় নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ত্রান ভান খোয়ার বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে মতবিনিময় শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, সামনে রমজান মাস। নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। এ মহুর্তে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেলে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। সে জন্য সরকার ডলারের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করা হয়েছে, আশা করা হচ্ছে অবিলম্বে ডলারের মূল্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, সরকার ভোক্তার অধিকার সুরক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে যাতে কোন ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্তিতির সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সরকার সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ মহুর্তে ছোলা, ডাল, চিনি, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের মজুত প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি রয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বছরের মতো টিসিরি’র মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ন্যায্যমূল্যে বাজারে সরবরাহ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, সারা দেশে ডিলারের মাধ্যমে এবং প্রধান শহরে ট্রাক সেলের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় করা হবে। বিগত বছরের মতো রমজান মাসসহ সারা বছর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক থাকবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভিয়েতনাম বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য খুব বেশি নয়। গতঅর্থ বছর বাংলাদেশ ভিয়েতনামে রপ্তানি করেছে ৬৫.০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করা হয়েছে ৩৮৭.৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। দু’দেশ বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে একমত।
তিনি বলেন, বিশে^র অনেক দেশ থেকে ভিয়েতনাম পণ্য রপ্তানিতে জিএসপি সুবিধা পেয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। বিনিয়োগে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করে পণ্য রপ্তানি করলে ভিয়েতনাম বেশি লাভবান হবে। সেজন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য ভিয়েতনামের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জনাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, হাওর অঞ্চলের দুর্যোগ অপ্রত্যাশিত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকার দুর্গত মানুষের জন্য সবকিছু করে যাচ্ছে। ১০ টাকা মূল্যে চাউল বিক্রয় অব্যাহত থাকবে। দরিদ্র মানুষের মাঝে বিনামূল্যে খাদ্য ও প্রয়োজনী ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত ত্রান ভান খোয়া বলেন, বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আমরা একমত। এতে বাণিজ্য ব্যবধান কমে আসবে। আসন্ন যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সভায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে স্বাক্ষরিত এমওইউ এর মেয়াদ শেষ হয়েছে, তা নবায়ন করা হবে। আগামী দিনগুলোতে উভয় দেশের বাণিজ্য অনেক বাড়বে।