শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
সংসদ ভবন এলাকা থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধি সরিয়ে নেওয়া হলে এর জন্য ক্ষমতাসীনদের চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
যারা সমাধি সরানোর চিন্তা করছে, তারা ‘আহাম্মকের স্বর্গে’ বাস করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের প্রতিবাদে এর আয়োজন করে ঢাকা মহানগর বিএনপি।
ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ সাংগঠনিক আবদুস সালাম আজাদ, সহ সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, ছাত্রদলেল সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ।
জিয়াউর রহমানের পদক প্রত্যাহার এবং জাতীয় জাদুঘর থেকে তা সরিয়ে নেওয়ার কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে নিকৃষ্টতম সিদ্ধান্ত। আজ পর্যন্ত এই ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানা নেই।
‘পদক কেড়ে নেওয়া শুধু জিয়াউর রহমানকে অপমান করা নয়, এর মধ্য দিয়ে গোটা জাতি এবং মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করা হয়েছে। সরকার বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে চায়। তার স্বাধীনতা পদক কেড়ে নেওয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়া হলো।’
সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় জাদুঘর থেকেও তার পদক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের নাম ওঁৎপ্রোতভাবে জড়িত। এ থেকে জিয়াউর রহমানকে কখনো বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।’
জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সমালোচনা করায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যারা বিষোধগার করছেন, তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোথায় ছিলেন? তাদের অনেকে তখন পালিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে চলে গিয়েছিলেন। তারা যখন পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তখন বলতে হয় তারা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।’
ক্ষমতাসীনরা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে দাবি করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিভেদ ভুলে সংঘবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দেন মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তুমুল গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে হটাতে হবে।’
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ইতিহাস রচনা করেছেন, ইতিহাসের নায়ক হয়েছেন; এটিই ক্ষমতাসীনদের ইর্ষার কারণ। পদক প্রত্যাহার করায় বিএনপির কোনো ক্ষতি হয়নি, ক্ষতি যা হওয়ার আওয়ামী লীগেরই হয়েছে।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মামলা-মোকাদ্দমা ও সম্পদ হারানোর ভয়ে চুপ করে থাকলে সবই যাবে, এমনিক জীবনও চলে যেতে পারে। তাই রাজপথে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিতে হবে।’