আদালতে খালেদার জামিন আবেদন মঞ্জুর

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১০ আগস্ট ২০১৬

আদালতে খালেদার জামিন আবেদন মঞ্জুর

আদালতে খালেদার জামিন আবেদন মঞ্জুর

সকালে নিজের বাসা থেকে বের হয়ে আদালতে যাওয়ার পথে অসংখ্য বিএনপি নেতাকর্মী ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মীরা খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করেন। এদিন বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রবেশ করেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপারসন ১০ মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। অপরদিকে তিনি দুই মামলায় হাজিরা প্রদান করেন। এরপর বিকেল ৩টা ৮ মিনিটে ঢাকা সিএমএম আদালত থেকে বের হয়ে যান। আদালতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা (৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট) অবস্থান করেন তিনি।

প্রথমে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুর হোসেন মোল্লার আদালতে। এসময় তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতকে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিনে রয়েছেন। তিনি তিন বারের প্রধানমন্ত্রী। তাই তাকে জামিন দিলে পলাতক হবেন না। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন, এ মামলায় তাকে জামিন দিলে রাষ্ট্রের আপত্তি রয়েছে।

আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন প্রদান করেন এবং এ মামলায় অভিযোগ গ্রহণ করে চার্জ শুনানির জন্য ১০ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করেন।

এরপর তিনি রাজধানীর দারুস সালাম থানায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা ৮টি মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, তাকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে তার নাম নেই। তাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্য এ মামলায় চার্জশিটে নাম দেয়া হয়েছে। তিনি বয়স্ক ও তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, তাই তাকে জামিন দেয়া হোক। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন, তার জামিনে রাষ্ট্রের আপত্তি রয়েছে।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা ৮ মামলায় তাকে জামিন প্রদান করেন।

এরপর তিনি ঢাকার ২ নং বিশেষ জজ হোসনে আরা বেগমের আদালতে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলায় হাজিরা প্রদান করেন। আদালত মামলার অপর আসামিদের হাইকোর্টের আদেশ দাখিলের জন্য ৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় হাজিরা শেষে তিনি ঢাকার ৯ নং বিশেষ জজ আদালত হাজিরা প্রদান করেন। আদালতের বিচারক আমিনুল ইসলাম মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ১৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

এরপর খালেদা জিয়া দারুস সালাম থানার আরেকটি নাশকতার মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুন নাহার ইয়াসমিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।

শুনানিতে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নাশকতার ৮ মামলায় মহানগর দায়রা জজ আদালত জামিন দিয়েছেন। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাকে জামিন দিলে তিনি পলাতক হবেন না। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সালমা হাই টুলি তার জামিনের বিরোধিতা করেন।

সরব ছিলেন নেতাকর্মীরা

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই এলাকাটির আশপাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন দলটির নেতাকর্মীরা। এ উপলক্ষে আদালত এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

বুধবার বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে খালেদা জিয়ার আদালতে উপস্থিত হওয়ার পর থেকে কোনো বাধাই থামাতে পারেনি তাদের। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এরপর দুপুরে হঠাৎ মুষল ধারে বৃষ্টি শুরু হলে বিপাকে পড়েন তারা। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও সড়কে অবস্থান নেয়া দলটির নেতাকর্মীরা সরে যাননি।

জামিন ও হাজিরা শেষে বুধবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে নিজ বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছান বিএনপি নেত্রী।

 

Related posts