শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ৪ এপ্রিল ২০১৬
ফার্নেস অয়েলের পর এবার অন্য জ্বালানি তেলের দামও কমানো হচ্ছে। তবে এ দাম কামনো হবে তিন ধাপে । তিন ধরনের জ্বালানি তেল অকটেন, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ছয় মাসে ধাপে ধাপে লিটার প্রতি মোট ২০ টাকা কমানো হবে। প্রথমে লিটারে ১০ টাকা, পরে দুই ধাপে ৫ টাকা করে কমানো হতে পারে।
সোমবার জ্বালানি বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, প্রথম ধাপের প্রজ্ঞাপন আগামী সপ্তাহে জারি করা হতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) একটি সূত্র জানায়, গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মূল্য সমন্বয়ের বিষয়ে কথা বলেন। এ বৈঠকেই তিন ধাপে দাম কামনোর বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়।
অনেক আলোচনা সমালোচনার পর গত বৃহস্পতিবার ফার্নেস অয়েলের দাম লিটার প্রতি ৬০ টাকা থেকে কমিয়ে ৪২ টাকা করা হয়।
এর আগে গত সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তেলের দাম কমানের বিষয়ে আলোচনা হয়। দাম কমানোর ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্তও আসে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ২০১৪ সালের জুন থেকে। কিন্তু দেশে এখন পর্যন্ত দাম না কমানোয় গত দুই বছর ধরে লাভ করছে বিপিসি।
আন্তর্জাতিক বাজারের বর্তমান দাম (অপরিশোধিত প্রতি ব্যারেল বা ১৫৯ লিটার) অনুযায়ী প্রতি লিটার ফার্নেস অয়েল বিপিসি কিনছে ৩০ টাকায়, অকটেন ৫৫ টাকায় ও পেট্রল ৫০ টাকায়। আর ডিজেল আর কেরোসিন কিনছে ৩৮ টাকায়।
কিন্তু দেশের বাজারে বিপিসি বিক্রি করছে বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯, পেট্রোল ৯৬, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কম দামে কিনে দেশে বেশি দামে বিক্রি করায় গত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বিপিসি পাঁচ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ৭ হাজার কোটি টাকা লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এরমধ্যেই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মুনাফা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। যার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়। এ তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে, ৪৫ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ, কৃষি খাতে ১৯ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪ শতাংশ এবং গৃহস্থালী ও অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। তখন পেট্রোল-অকটেন লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজেল কেরোসিনের দাম ৭ টাকা করে বাড়ানো হয়েছিল।