বিনা অপারেশনে পাইলস চিকিৎসা

ডা. একেএম ফজলুল হক

বৃহদান্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ

সহযোগী অধ্যাপক, সার্জারি বিভাগ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ

………………………

বিনা অপারেশনে পাইলস চিকিৎসা**

বিনা অপারেশনে পাইলস চিকিৎসা

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে কয়েক আউন্স ভুসির অভাবে আজ ইউরোপের ইতিহাস অন্যভাবে রচিত হয়েছে। কারণ ওয়াটারলু’র যুদ্ধে নেপোলিয়ন পাইলসে আক্রান্ত থাকায় সঠিক নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হননি। খাদ্যে আঁশ জাতীয় খাবার কম থাকার কারণে নেপোলিয়ন তীব্র পাইলস সমস্যায় ভুগছিলেন বলে এ উক্তি করা হয়েছে…চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে কয়েক আউন্স ভুসির অভাবে আজ ইউরোপের ইতিহাস অন্যভাবে রচিত হয়েছে। কারণ ওয়াটারলু’র যুদ্ধে নেপোলিয়ন পাইলসে আক্রান্ত থাকায় সঠিক নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হননি। খাদ্যে আঁশ জাতীয় খাবার কম থাকার কারণে নেপোলিয়ন তীব্র পাইলস সমস্যায় ভুগছিলেন বলে এ উক্তি করা হয়েছে। একজন রোগী পাইলস বলতে বোঝেন মলদ্বারের চুলকানি, চাকা হওয়া, ব্যথা, ফুলে যাওয়া, রক্তপড়া, মলদ্বার ঝুলে পড়া ইত্যাদি। পাইলসের শিরাগুলো সাধারণভাবে সবার শরীরেই বিদ্যমান। পাইলসের উপসর্গগুলো পশ্চিমা সভ্যতায় খুবই সাধারণ। এ সমস্যাটি যে কোনো বয়সে যে কোনো লিঙ্গেই হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে ৪.৪% লোকের পাইলসের সমস্যা রয়েছে। পঞ্চাশোর্ধ্ব লোকদের ৫০% কোনো না কোনো সময় পাইলসের উপসর্গ অনুভব করেন। উচ্চবিত্ত লোকদের এই রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।কারণ পাইলস কোনো বিশেষ একটি কারণের জন্য হয় না। অনেকগুলো কারণ এ জন্য দায়ী। যার অন্যতম হচ্ছে উত্তরাধিকার, গঠনগত বৈশিষ্ট্য, পুষ্টি, পেশা, আবহাওয়া, মানসিক সমস্যা, বার্ধক্য, হরমোনের পরিবর্তন, খাদ্য ও ওষুধ, সংক্রমণ, অন্তঃসত্ত্বা, ব্যায়াম, কাশি, মলত্যাগের শক্তিপ্রয়োগ, বমি, আঁটসাঁটো কাপড় পরা ও কোষ্ঠকাঠিন্য। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের গঠনকে ধরে রাখার কলার ক্ষয় হতে থাকে যার কারণে মলদ্বারের ভেতরের কুশনটি ঢিলা হয়ে ঝুলে পড়তে থাকে। এমতাবস্থায় শিরাগুলো স্ফীত হতে থাকে এবং রক্তপাত হতে থাকে। উপসর্গ ও লক্ষণসমূহ এ রোগে রোগীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মলদ্বারে রক্ত পড়ার অভিযোগ করেন। এটি সাধারণত মলত্যাগের সময় অথবা তার পরে হয়ে থাকে। মলত্যাগের শক্তি প্রয়োগ করা অথবা বারবার মলত্যাগ করলে রক্ত যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এটা কমোডে বা টয়লেট পেপারে দেখা যেতে পারে। অতিরিক্ত রক্ত যাওয়ার কারণে তীব্র রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। পাইলসে সাধারণত ব্যথা হয় না। কিন্তু যদি থ্রম্বসিস (রক্ত জমাট বাঁধা) ঘা অথবা পচন ধরে তখন ব্যথা হতে পারে। মলদ্বারে ব্যথার প্রধান কারণ এনালফিশার। মলদ্বারের ভেতর থেকে মাংসপিন্ড ঝুলে পড়া বা গেজ হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। এটি হলে কখনও কখনও হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে হয়। এমন হতে পারে যে এটা বাইরে ঝুলে আছে এবং কখনও ভেতরে যায় না। মাঝে মধ্যে মলদ্বারে চুলকানি হতে পারে। পাইলসের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না। কিন্তু ঘন ঘন পায়খানা হলে অথবা থ্রম্বসিস হলে অনেকে রক্তপড়া বা ব্যথার জন্য টয়লেটে যেতে চায় না যার জন্য আস্তে আস্তে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা মলদ্বারে রক্ত পড়ার অনেক কারণ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে পায়ুপথের ক্যান্সার। সিগময়ডস্কপি মলদ্বার, পায়ুপথ ও বৃহদান্ত্রের ভেতরে এ যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। প্রকটস্কপি এ যন্ত্র দিয়ে মলদ্বার ও পায়ুপথের নিচের দিক পরীক্ষা করতে হয়। রোগী যদি ৫০ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে হয় এবং যদি পরিবারে কেউ বৃহদান্ত্র ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে বেরিয়াম এনেমা বা কোলনস্কপি করা উচিত।

চিকিৎসা

প্রতিরোধ: কিছু অভ্যাস এবং উপদেশ পালন করলে পাইলস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আঁশ জাতীয় খাবার যেমন শাকসব্জি, ইসপগুলের ভুসি এ ব্যাপারে উপকারী। আফ্রিকায় কিছু সম্প্রদায় আছে যারা মূলত শাকসব্জি ও ফলমূলের ওপর নির্ভর করে। এদের সাধারণত পাইলস দেখা যায় না। টয়লেটে অনেকক্ষণ বসে বই পড়া বা অহেতুক দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা উচিত নয়। কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা করা উচিত। গরু এবং খাসির মাংস কম খাওয়া উচিত। ডায়রিয়া বা আমাশয়ের চিকিৎসা যথাসময়ে করিয়ে নেয়া উচিত। পাইলসের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন চিকিৎসা রয়েছে। যদি কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় তার চিকিৎসা করতে হবে যেমন ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য। ক্যান্সার অথবা বৃহদান্ত্রের অন্য কোনো রোগ আছে কিনা অবশ্যই দেখে নিতে হবে। আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে বিনা অপারেশনে ৮০-৯০% পাইলসে চিকিৎসা এ পদ্ধতিতে ছোট যন্ত্রের সাহায্যে পাইলসে চিকিৎসা করলে সপ্তাহ খানেকের ভেতর পাইলসের মাংসপিন্ডটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে পড়ে যায়। চিকিৎসার সময় বা পরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনোরূপ ব্যথা হয় না। কোনো অজ্ঞান বা অবশ করার প্রয়োজন নেই। প্রখ্যাত আমেরিকান সার্জন ডা. মারভিন এল করমান ও ডা. ডিএস স্টিনবার্গ এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে বলেন, এ পদ্ধতিটি আবিষকারের ফলে ৮০-৯০% রোগী বিনা অপারেশনে ভালো হয়েছে। চিকিৎসায় ব্যয় খুবই কম। এ পদ্ধতি ব্যবহারের পূর্বে এনেমা দিলে ভালো হয়। পায়ুপথের ভেতর যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করে নিতে হয়। যেহেতু আমাদের শরীরে প্রধান তিনটি পাইলস আছে অতএব সর্বোচ্চ তিনবার এরূপ চিকিৎসা লাগতে পারে। দু’বার চিকিৎসার মধ্যে সাধারণত ৩-৪ সপ্তাহ ব্যবধান থাকতে হয়। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি অনেক রোগী চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয়েছেন। অপারেশন সাধারণত ১০/২০% রোগীর ক্ষেত্রে অপারেশন দরকার, যখন মলদ্বারের গঠন প্রণালী ভীষণভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায় যেমন বহির্স্থিত পাইলস, ঘা, পচন ধরা, বিসতৃত থ্রম্বোসিস, মলদ্বারের ভেতরের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মাংসপিন্ড অথবা সঙ্গে ফিসার থাকলে। অজ্ঞান না করে কোমরে ইনজেকশন দিয়ে রোগী সজাগ অবস্থায় অপারেশন করা যায়। আমি সাধারণত বিকেলে ভর্তি করে এনেমা দিয়ে সকালে অপারেশন করে পরের দিন বা তার পরের দিন ছুটি দেই। কোনো এন্টিবায়োটিক, স্যালাইন অথবা প্যাক দেয়ার প্রয়োজন নেই। অপারেশনের ৬ ঘন্টা পর স্বাভাবিক খাবার দেয়া উচিত যাতে পরদিন রোগী স্বাভাবিক মলত্যাগ করতে পারে। দিনে ২ বার নিতম্ব লবণসহ গরম পানিতে ডুবিয়ে শেক দিতে হয় ১০ মিনিট ধরে। ব্যথা নাশক ওষুধ ও মলম ব্যবহার করা যেতে পারে।…………

ওষুধ ও পথ্যের সাহায্যে পাইলস চিকিৎসা

মানুষের রোগ ব্যাধির মধ্যে মলদ্বারের রোগেই সবচেয়ে বেশি স্ব-চিকিৎসা এবং হাতুড়ে চিকিৎসা হয়। কিছুটা ভয় এবং বিব্রতকর অনুভূতির জন্য এ জাতীয় রোগ হলে রোগীরা ডাক্তার দেখাতে চান না। রোগীরা নিজে নিজে অথবা সস্তায় পাওয়া হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে যান বেশি। বিভিন্ন কুসংস্কার এবং মলদ্বারের সব রোগই পাইলস এই ভ্রান্ত ধারণার কারণে চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরী করেন যা কখনও কখনও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে। হয় রোগটি শুরু থেকেই ক্যান্সার অথবা অবহেলার কারণে ইতোমধ্যে সেখানে ক্যান্সার হয়ে গেছে। পাইলসের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে টয়লেটে রক্ত যাওয়া, মাংসপিন্ড ঝুলে পড়া ও ব্যথা হওয়া। পাইলস যখন বাইরে ঝুলে পড়ে তখন শুধুমাত্র ওষুদের মাধ্যমে এর চিকিৎসা সম্ভব নয়। যদি মাংস পিন্ডটি ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় তাহলে বিনা অপারেশনে রিং লাইগেশন পদ্ধতিতে এর চিকিৎসা সম্ভব। আর যদি মাংসপিন্ডটি ভেতরে ঢুকানো না যায় তাহলে অপারেশন করতে হবে। আবার পাইলসে ব্যথা হলে তার কারণ হচ্ছে থ্রম্বসিস, পঁচনধরা (গ্যাংথ্রিন) বা ঘা হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে অপারেশনই যথাযথ চিকিৎসা। যখন টয়লেটে টাটকা লাল রক্ত যায় এবং বাইরে কোনো বড় ধরনের মাংপপিন্ড ঝুলে না থাকে সেক্ষেত্রে ওষুধ ও পথ্যের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে চিকিৎসককে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে কি কারণে রক্ত যাচ্ছে। বিশেষ করে পায়ুপথের ভেতর কোনোরূপ ক্যান্সার আছে কি না। যে রোগীরা পাইলসে ভোগেন তাদের সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া জাতীয় সমস্যা থাকে। অনেক রোগী আছেন যাদের পেটে গ্যাস হয়। পায়খানার সাথে মিউকাস বা আম যায়। পায়খানা করার পর মনে হয় ক্লিয়ার হয়নি। দুধ, পোলাউ, ঝাল, গরুর মাংস ইত্যাদি খেলে হজমে গোলমাল হয়। টয়লেটে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। অনেকে মলদ্বারের ভেতর আঙ্গুল দিয়ে মলত্যাগ করেন। রোগীরা এ সমস্যাগুলোকে গ্যাস্ট্রিক বা ক্রনিক আমাশয় হিসেবে মনে করেন। চিকিৎসা পরিভাষায় একে আমরা বলি ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রাম’ বা ‘আইবিএস’। এ জাতীয় রোগীদের দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, পোলাউ, ঝাল, বিরিয়ানি খাওয়া নিষেধ। উপদেশ

পাইলসে যে দুটি রোগ সবচেয়ে বেশি সমস্যা করে তা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া। বেশির ভাগ রোগীর খাদ্যাভ্যাসে ত্রুটি থাকে এবং মলদ্বার ভালভাবে পরিষ্কার রাখেন না। যদি রোগীর নরম পায়খানা, চুলকানি ও সামান্য রক্ত যায় তাহলে তাকে আঁশ জাতীয় খাবার দেয়া যেতে পারে। ডায়রিয়া হয় এমন খাবার পরিহার করতে হবে। মলত্যাগের পর মলদ্বার ভালভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মলত্যাগের কু-অভ্যাস ত্যাগ পাইলস রোগীদের তিনটি কু-অভ্যাস দেখা যায়। ১. যেভাবেই হোক প্রতিদিন অন্তত একবার পায়খানা করতে হবেই। এটি না হলে তারা সারাদিন শারীরিক ও মানসিক টেনশনে ভোগেন। ২. সকাল বেলা প্রথমবার যখন মলত্যাগের বেগ হয় তখন তাতে সাড়া দেন না। ৩. পায়খানা ক্লিয়ার হযনি ভেবে টয়লেটে অনেকক্ষণ বসে থাকেন এবং কোথ দেন যেন রেকটাম থেকে পায়খানা সম্পূর্ণরূপে বের হয়ে যায়। তাদের বিশ্বাস এই যে যদি সামান্য মল ভেতরে থেকে যায় তাহলে সারাদিন অস্বস্তিতে কাটাতে হবে। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আমরা প্রচুর রোগী পাই বিশেষ করে শিশুদের সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ হয়। পায়খানার পরিমাণ বাড়ে এমন খাবার খাওয়া উচিত। যেমন শাক, সবজি, সালাদ, ফল, ইসুপগুলোর ভূষি, গমের ভূষি ইত্যাদি। দৈনিক পরিমিত পানীয় খেতে হবে। একজন পূর্ণ বয়স্ক লোকের জন্য ৬-৮ গ্লাস পানি প্রতিদিন পান করতে হবে। অনেক রোগীকে এসব উপদেশ দিলে তারা ক’দিন পরে ভুলে যান অথবা আবার ঐ চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার ক’দিন আগে আবার খান যাতে তাকে বলতে পারেন যে হ্যাঁ, আমি ভূষি বা সালাদ খেয়েছি। ইসুপগুলের ভূষি দোকানে পাওয়া যায় আবার ওষুধ কোম্পানিও বানায়। এছাড়া আঁশ হিসেবে মিথাইল সেলুলেজ ট্যাবলেট ও পাওয়া যায়। বিভিন্ন বিজ্ঞানী আঁশ জাতীয় খাবারের কার্যকারিতা সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ডাঃ ওয়েবস্টার (ইংল্যান্ড) ও ডাঃ মোয়েসগার্ড (ডেনমার্ক)। পাইলসের ওষুধ পাইলসের রক্ত বন্ধের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার হয়ে আসছে যেমন ট্রানেক্স ক্যাপসুল ১টি করে ২ বার ৫ দিন অথবা এনারক্সিল ১টি করে তিনবার ৫দিন। সর্বশেষ যে ওষুধটি বাজারে এসেছে তার নাম ফ্লাভোনয়িক এসিড। এটির কার্যকারিতা নিয়ে এখনও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চলছে। প্রাথমিক পাইলসে এটি ভাল কাজ দেবে বলে আশা করা যায়। এটির রোগীদের প্রতি অনুরোধ দয়া করে কোনও চিকিৎসাই নিজে নিজে করবেন না। মলদ্বারে ব্যবহৃত ওষুধ পাইলসের সমস্যা এত বেশি যে বেশিরভাগ রোগীই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বা মলম লাগিয়ে থাকেন। এমনকি বাসার জন্য কারো কোনো কারণে একটি অয়েন্টমেন্ট দেয়া হয়েছিল সেটিই নিজে নিজে লাগাতে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের অয়েন্টমেন্ট ক্রীম, সাপোজিটরী, জেল বাজারে পাওয়া যায়। এসব ওষুদের ভেতর বিভিন্ন ধরনের ওষুদের সংমিশ্রণ থাকে যেমন অবশকারী ওষুদ, স্টেরয়েড ও এন্টিসেপ্টিক। এসব ওষুদের ভেতর অবশকারী ওষুধটি ব্যথা ও চুলকানি কমাতে পারে কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চামড়ায় এলার্জি হতে পারে। লোকাল এনেন্থেটিক ও স্টেরয়েড ওষুদের সংমিশ্রণ মলদ্বারের কষ্ট কমাতে কোনো বাড়তি ভূমিকা রাখে না। আমাদের দেশে যে সমস্ত অয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায় যেমন ইরিয়ান, এনুস্ট্যাট, নুপারকেইনাল ও হেডেনসা এবং রিলিচ রেকটাল অয়েন্টমেন্ট। এগুলো মলদ্বারের সামান্য ভেতরে দিনে ২-৩ বার লাগাতে হয় ৭-১৪ দিন।

 

Related posts