ঢাকায় মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমানের সঙ্গে বৈঠক হয় মামুনের

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২১  এপ্রিল  ২০১৬

ঢাকায় মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমানের সঙ্গে বৈঠক হয় মামুনের

ঢাকায় মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমানের সঙ্গে বৈঠক হয় মামুনের

সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণের ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বৈঠকের কথা স্বীকার করার পর এবার একই ইস্যুতে বাংলাদেশে মোহাম্মদ উল্লাহ্ মামুনের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করছেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। তিনি আরো জানিয়েছেন, তার সঙ্গে বৈঠক শেষেই আর্থিক বিষয়গুলোর নিষ্পত্তির জন্য আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সঙ্গেও বৈঠক করেন মামুন।

বুধবার চতুর্থ দিনের রিমান্ডে রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় মামুনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সেখানকার জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ও তার ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেন শফিক রেহমান। এফবিআইয়ের তথ্য ফাঁস করা ও অপহরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৩০ থেকে ৪০ হাজার ডলার লেনদেনের বিষয়ে আলোচনা হয় সেই বৈঠকে। তবে বৈঠকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সময়মত বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে টাকা পাঠানো হয়নি। আর তাই পাওনা টাকা আদায়ে বাংলাদেশে আসেন মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন।

জিজ্ঞাসাবাদে শফিক রেহমান জানান, ২০১২ সালে মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন বাংলাদেশে পাওনা টাকার খোঁজ খবর নিতে এসেছিলেন। সেসময় রাজধানীর ইস্কাটনের বাড়িতে শফিক রেহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে তার বৈঠক হয়।

ডিবি সূত্র জানায়, চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের বৈঠকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। বৈঠকে কোনো কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেগুলো জানার চেষ্টা চলছে। মামুন বাংলাদেশে আর কারো সঙ্গে বৈঠক করেছে কিনা তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার শফিক রেহমানকে সঙ্গে নিয়ে তার বাসায় তল্লাশি চালায় ডিবি। এসময় তার বাড়ি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসার ঠিকানা ও গাড়ির নম্বর সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে সেসব নথি ও শফিক রেহমানের দুটি পাসপোর্ট জব্দ করে ডিবি অফিসে নেয়া হয়।

এ বিষয়ে ডিবির দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ২০১২ সালে শফিক রেহমানের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া, বৈঠক করার স্থান ও হোটেলে রুম ভাড়া করার প্রমাণাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা এসব যাচাই বাছাই করছেন।

এদিকে মামুনের ছেলে সিজার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডেক্স কুরিয়ারের মাধ্যমে মাহমুদুর রহমানকে জয়ের গাড়ির নম্বর, গাড়ির রং, জয়ের কোথায় কোথায় আসা যাওয়া ছিল এ সংক্রান্ত তথ্য পাঠিয়েছে। তাকে এই মামলায় গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেছে ডিবি। আগামী ২৬ এপ্রিল রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

 

রিমান্ডে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানকে মুখোমুখি করা হবে কিনা জানতে চাইলে ডিবির ডিসি বলেন, আদালত যদি মাহমুদুর রহমানের রিমান্ড মঞ্জুর করে, তবে প্রয়োজন হলে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

জয়ের অপহরণের বিষয়ে তদন্ত করতে খুব শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে ডিবির তদন্ত দল। তদন্ত দলে থাকছেন মামলার তদারকি কর্মকর্তা ডিসি মাশরুকুর রহমান খালেদ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রাজীব আল মাসুদ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) হাসান আরাফাত।

যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তদন্তের বিষয়ে মাশরুকুর রহমান খালেদ  বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া চলছে। ভিসা হলেই যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে তদন্ত কাজ করা হবে।

এর আগে শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণের পর হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার তার রিমান্ড শেষ হবে।

 

Related posts