খালেদাকে কোনো কারাগারেই বন্দি রাখা যাবে না : রিজভী

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২৫  মে  ২০১৬

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের কোনো কারাগারেই বন্দি করে রাখা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সরকারের প্রতি এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

খালেদাকে কোনো কারাগারেই বন্দি রাখা যাবে না : রিজভী

খালেদাকে কোনো কারাগারেই বন্দি রাখা যাবে না : রিজভী

প্রসঙ্গত, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রোলবোমা হামলায় বিস্ফোরক আইনের মামলায় বুধবার খালেদা জিয়াকে আগামী ১৮ জুলাই আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া দেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত। কারণ, খালেদা জিয়া হচ্ছেন গণতন্ত্রের প্রতীক, হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আপোষহীন সিপাহসালার। উনাকে নানা দিক দিয়ে বিপর্যস্ত করার জন্য সরকার অনেকদিন ধরেই চক্রান্ত এঁটে আসছে।’

রিজভী বলেন, ‘এই কারণেই তারা জনগণের ইচ্ছা-সমর্থন ছাড়া জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। যে সময় ঘটনাটি (যাত্রাবাড়ীতে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ) ঘটেছে বিএনপির চেয়ারপারসন তখন গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন। বালির ট্রাক দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তার কার্যালয়ের টেলিফোন ও বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয়া হয়। উনি (খালেদা) তাহলে কোন দিক দিয়ে নির্দেশ দিলেন?

প্রধানমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতার জোরে নিজেদের মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অথচ খালেদা জিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনারও মামলা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেখ হাসিনা নিজের সব মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নিজেদের দলের নেতাকর্মীদের সব মামলাও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অথচ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলো চলছে। এটা সরকারের বেআইনি কাজ।’

সরকারকে গণবিচ্ছিন্ন আখ্যা দিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করছেন। তাকে ভয় পেয়েই সরকার এই কাজগুলো করছেন, যাতে বিএনপির চেয়ারপারসন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু এটা তাদের ভুল ধারণা। উনার উপস্থিতি দেশের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত করে, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে অনুপ্রাণিত করে। সুতরাং দেশের কোনো কারাগারেই তাকে (খালেদা জিয়া) বন্দি করে রাখা যাবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘কারাগারের ভয় দেখাচ্ছেন, মামলা দিচ্ছেন। আপনাদেরও যে কারাগার রচিত হচ্ছে, সেখানে যাওয়ার জন্য সরকারি মহল প্রস্তত থাকবেন।’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এত সুন্দর জেলখানা বানাইছেন, সেখানে থাকবেন না, এটা কী করে হয়?’

গয়েশ্বর আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা যেভাবে লণ্ডভণ্ড করছেন, দুর্যোগ খুব কাছে। আলীবাবা চল্লিশ চোরা একসঙ্গে জেলখানায় যাবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, আব্দুল আউয়াল খান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম পটু, ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, দফতর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ-সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার বসু (মিন্টু) প্রমুখ।

 

Related posts