বাবার সব সম্পত্তি একমাত্র মেয়েকে দেওয়া যাবে কি?

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ২৪ অক্টোবর  ২০১৬

বাবার সব সম্পত্তি একমাত্র মেয়েকে দেওয়া যাবে কি?

বাবার সব সম্পত্তি একমাত্র মেয়েকে দেওয়া যাবে কি?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ১৮৯৪তম পর্বে বাবার সম্পত্তি মেয়েকে পুরোপুরি দিয়ে দেওয়া যায় কি না, সে সম্পর্কে ঢাকা থেকে ই-মেইলে জানতে চেয়েছেন রফিকুল ইসলাম। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন : আমার একটি মাত্র মেয়ে। আমি মৃত্যুর পর আমার জীবনের সব সম্পত্তি মেয়েকে দিয়ে যেতে চাই। আমি শুনেছি, যে পরিবারে কোনো ছেলেসন্তান থাকে না, সে পরিবারের সব সম্পত্তি একমাত্র মেয়েকে দেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিত অলোচনাপূর্বক আমাকে পরিচ্ছন্ন ধারণা দেবেন?

উত্তর : অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছেন। একমাত্র মেয়েকে আপনি সব সম্পত্তি দিয়ে যেতে চাইছেন। না, এই ভুল কাজটি করবেন না। এই বণ্টনের দায়িত্ব আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা আপনাকে দেননি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিজের জন্য রেখে দিয়েছেন। তিনি নিজেই বণ্টন করেছেন কোরআনে কারিমের মধ্যে। সুতরাং আপনার জন্য ওয়াজিব হচ্ছে, আপনি আপনার সম্পদ থেকে আপনার জন্য যতটুকু ব্যবহার করার দরকার বা প্রয়োজন, ততটুকু ব্যবহার করুন। এ কথার মধ্যে অনেক মৌলিক কথা রয়েছে। আপনার প্রয়োজনে আপনি পুরা সম্পদই ব্যবহার করতে পারবেন। যদি আপনি বণ্টন করতে চান, তাহলে শরিয়ার যে বিধান রয়েছে, তার বাইরে আপনি যেতে পারবেন না।

আপনার যেহেতু একমাত্র মেয়ে, শরিয়ার বিধান অনুযায়ী সে সম্পত্তির অর্ধেকটা পাবে। যদি মেয়েকে সব সম্পত্তি দিয়ে যান, তাহলে স্ত্রী কোথায় যাবে? তারপর আপনার বাবা-মা যদি থাকে, তাঁরা কোথায় যাবেন? আপনার ভাইরা যদি থাকে, তাঁরা কোথায় যাবেন? এ জন্য সে কাজটি আপনি কোনোভাবেই করবেন না; বরং শরিয়তের বিধান অনুযায়ী আপনার সম্পদ বণ্টিত হবে। কিন্তু আপনার নিজের সম্পদ হিসেবে যতটুকু দরকার, ততটুকু ব্যবহার করুন।

বলতে পারেন, নিজের সম্পদ হিসেবে যতটুকু দরকার বলতে কী বোঝাচ্ছেন? এর মানে হচ্ছে আপনি যেটা রেখে যাবেন, সেটা আপনার দরকার না; আপনি যেটা অগ্রিম পাঠিয়ে দেবেন, সেটা আপনার দরকার হবে পরবর্তী জীবনের জন্য। এ জন্য বুদ্ধিমান ব্যক্তি সম্পর্কে আল্লাহর নবী (সা.) বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তিই সত্যিকার বুদ্ধিমান যে নিজের নাফসকে হেফাজত করতে পারল এবং মৃত্যুর পরের জন্য নিজের আমলকে গোছাতে পারল।’ আপনাকে এখানে গোছাতে হবে যেটা সেটা হলো, আপনার জন্য যতটুকু দরকার, ততটুকু আপনি গোছাবেন, ওই যারা ওয়ারিশ থেকে যাবে, তাদের কী গোছানো দরকার, এই চিন্তা আপনার করার দরকার নেই। এই চিন্তার পেছনে বেশি সময় দেওয়ার দরকার নেই। আপনার সময় দেওয়ার দরকার হচ্ছে আপনার নিজের সম্পদটাকে গোছানোর জন্য সেটা হলো আখিরাতকে গোছানোর জন্য। তাই আপনি চেষ্টা করুন যে আখিরাতের জন্য ভালো কিছু করে যেতে পারেন কি না। তাহলে আপনি সবচেয়ে ভালো কাজ করলেন।

 

Related posts