নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের তাগিদ দুই সিটি করপোরেশনের

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৩১  আগস্ট   ২০১৬

এ বছর কোরবানির পশু জবাইয়ের নির্ধারিত স্থান ব্যবহারের জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তরফ থেকে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের জন্য নগরবাসীর মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ঈদের তিন দিন আগে থেকেই মাইকিং করা হবে।

এ ছাড়া এক লাখের উপর লিফলেট বিতরণ করা হবে। লিফলেটে জবাইয়ের স্থানের তালিকা উল্লেখ থাকবে। পাশাপাশি মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসসিসি।

একইভাবে নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ে বাধ্য করতে উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. সাইদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘কোরবানির সময় সরকার নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের জন্য ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সেই মোতাবেক ডিএসসিসি এলাকায় কোরবানির পশু জবাইয়ের ব্যবস্থা গ্রহণে জোড় দেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘কেউ যদি নির্ধারিত স্থানে কোরবানি না দেন সেক্ষেত্রে তাকে নিজ বাড়ির আঙিনায় কোরবানি দিতে হবে। রাস্তায় বা খোলা স্থানে কোরবানি দেয়া যাবে না।

পশুর রক্ত ও বর্জ থেকে যাতে দুর্গন্ধ না ছড়াতে না পারে এবং পরিবেশ দূষণরোধের জন্য স্থান নির্ধারন করার উদ্যোগ এবার প্রথমবারের মতো নিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। সেই অনুয়ায়ী এ বছর দেশের সকল সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দাদের নির্ধারিত স্থানে কোরবানি দেয়ার জন্য সচেতনতা বাড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানান মেয়র সাঈদ খোকন।

অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘ডিএনসিসি এলাকায় কাউকে রাস্তায় পশু জবাই করতে দেয়া হবে না। এছাড়া কোরবানির ৪৮ থেকে ৭২ ঘোণ্টার মধ্যে বর্জ অপসারণ করা হবে।’

এ বছর দেশের ১১টি সিটি করপোরেশন ও ৫৩টি জেলা শহরে ছয় হাজার ২৩৩টি পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারন করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ে বাধ্যবাধকতা নেই।

এদিকে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট এক হাজার ১৫০টি স্থানে কোরবানির পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫৮৩টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫৬৭টি।

এ ছাড়া পশু জবাইয়ে সহায়ক হিসেবে সারা দেশে ৪ হাজার ৮৮৫ জন মাওলানা এবং মাংস কাটার জন্য ১২ হাজার কসাই নির্ধারণ করা হয়েছে।

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণের ৫৭টি ওয়ার্ডের জন্য ৫৮৩ জন মাওলানা ও ৪৫৪ জন কসাই এবং ঢাকা উত্তরের ৩৬টি ওয়ার্ডের জন্য ৭৮৫ জন মাওলানা ও ৪৮৪ জন কসাই।

সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি দেয়ার জন্য ঈদের তিন দিন আগে থেকেই মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও মসজিদে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

সিটি করপোরেশনের নির্দেশনায় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা নির্দিষ্ট কিছু সড়ক, মাঠ ও স্কুলের সামনে পরিষ্কার করে পশু কোরবানির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সেক্ষেত্রে মাংস পরিবহণের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মেয়ররা।

এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নতুন সংযুক্ত আট ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় শ্যামপুর বাদে নয়টি করে পশু জবাইয়ের জন্য ৭৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্যামপুর এলাকায় ১২টি পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫টি জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করা হবে। তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় নতুন সংযুক্ত ইউনিয়নের স্থান নির্ধারণের হিসেব পাওয়া যায়নি।

রাজধানী ছাড়াও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৮৭টি, গাজীপুরে ৪২৬টি, নারায়ণগঞ্জে ১৮১টি, বরিশালে ১৪০টি, খুলনায় ১৬০টি, রাজশাহীতে ২২৪টি, সিলেটে ২৭টি, রংপুরে ৯৯টি এবং কুমিল্লায় ১৪৯টি স্থানে পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিভিন্ন তথ্য মতে, এ বছর দেশের ৮৩ হাজার সাত’শ গ্রামে গড়ে ২০টি পশু কোরবানি হলে ১৬ লাখের বেশি পশু কোরবানি হবে। আর শহর মিলিয়ে প্রায় ৪০ লাখ পশু কোরবানি হবে।

 

Related posts