শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১২ আগস্ট ২০১৬
অনেক মানুষেরই সকালে ঘুম থেকে উঠার পর নড়াচড়া করার সময় কোমরে ও জয়েন্টে মট মট করে শব্দ হয়। অনেকক্ষণ বসে থাকার পর বা রিক্সায় উঠার সময় ও হাঁটুতে শব্দ হয় অনেক মানুষেরই। আবার অনেকেরই আঙ্গুল ফোটানোর অভ্যাস আছে এবং এতেও বেশ শব্দ হয়। এরকম শব্দ হলে বিশেষ করে হাঁটুতে হলে বেশিরভাগ মানুষ ভয় পান। আসলে কি কোন সমস্যার কারণে এমন শব্দ হয়? নাকি এটি স্বাভাবিক? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত জেনে নিই চলুন।
লস এঞ্জেলসের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার স্পোর্টস মেডিসিন প্রোগ্রামের ডাইরেক্টর David McAllister বলেন – “অনেক জয়েন্টেই শব্দ হয় এবং হাঁটুতে শব্দ হওয়া খুবই সাধারণ”। তিনি আরো বলেন, “বেশিরভাগ মানুষেরই হাঁটু ভাঁজ করে কাজ করার সময় শব্দ হয়। আমরা সাধারণত এই চিড় ধরার মত শব্দে চিন্তিত হইনা যদিনা হাঁটুতে ব্যথা বা ফোলা থাকে”।
কিন্তু কেন এমন শব্দ হয়? হাড়কে ঢেকে রাখে যে টিস্যু তাকে কার্টিলেজ বলে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই টিস্যুর এবড়ো-থেবড়ো ভাবে বাড়তে থাকে। আমরা যখন উবু হয়ে বসি বা দাঁড়াই তখন এই অমসৃণ টিস্যুগুলোর একে অপরের সাথে ঘষা লাগার ফলে শব্দ হয়। আবার এটাও হতে পারে যে, একটি হাড়ের সাথে অন্য হাড়কে যুক্ত করতে সাহায্য করে যে লিগামেন্ট নামক সংযোজক কলা নড়াচড়া করার সময় এই কলা টাইট হয়ে যায় অথবা জয়েন্টের আস্তরণ ঘুরে যায়।
যদি হাঁটুতে শব্দ হওয়ার সাথে সাথে ব্যথা ও ফোলা না থাকে তাহলে চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই। যদি জয়েন্টে মট মট করে শব্দ হওয়ার পাশাপাশি ব্যথা থাকে তাহলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। এটি আরথ্রাইটিসের লক্ষণ হতে পারে এবং এক্সরে করানোর মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়। যদি নরম টিস্যুতে ইনফ্লামেশন হয় তাহলে এক্সরে রিপোর্ট নরমাল আসতে পারে। লক্ষণ যদি থেকেই যায় এবং আরো খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তাহলে MRI করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাড়ের ব্যথাহীন শব্দ হওয়াকে অক্ষতিকর বলে গণ্য করা হয়। এর জন্য কোন চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হয়না। এটি স্বাভাবিক এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে জয়েন্টের শব্দও বাড়তে পারে।
হাঁটুর সুস্থতার জন্য কিছু টিপস
– নিয়মিত ব্যায়াম করলে পা ও হাঁটু শক্তিশালী হয়। সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করা ও সাইকেল চালালে হাঁটুর পেশী ভালো থাকে।
– ভারী ব্যায়াম করার পূর্বে ওয়ার্মআপ করে নিন। নাহলে জয়েন্ট ও মাসেলে আঘাত পেতে পারেন।
– ভালোমানের ও সঠিক মাপের জুতা পরুন।
– ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অতিরিক্ত ওজন হাঁটুর উপর বেশি চাপ ফেলে।