শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২৪ অক্টোবর ২০১৬
বর্তমানে ডাক্তাররা মানুষকে সচেতন করার বিপরীতে কিভাবে বেশি বেশি ঔষধ খাওয়ানো যায় সেই চেষ্টায় নিয়োজিত আচেন। তার কারণ কোম্পানিগুলো তাদেরকে (ডাক্তার) কিনে নিয়েছে। এসব ডাক্তারদের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। এছাড়া তামাকের ন্যায় অস্বাস্থ্যকর খাবারেও সারচার্জ আরোপ করা প্রয়োজন।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘তামাকের ন্যায় অস্বাস্থ্যকর খাবারে সারচার্জ আরোপ : প্রয়োজনীয়তা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
এছাড়া আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যগত উন্নয়নে অস্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ন্ত্রণে ‘স্বাস্থ্যে কর’ আরোপসহ উদ্ভট তথ্য সম্বলিত অস্বাস্থ্যকর খাবারের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগসহ নীতিমালার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবারের বিজ্ঞাপন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- বারডেমেরে ল্যাবরেটরি সার্ভিসের পরিচালক ডা. শুভাগত চৌধুরী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ডা. এম মোস্তফা জামান, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আবু সাইদ।
ডা. শুভাগত চৌধুরী বলেন, তামাকের কারণে যেসব রোগ হয়, অস্বাস্থ্যকর বা জাঙ্ক ফুড সেবনেও একই রোগ হয়ে থাকে। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা এই জাঙ্ক ফুড জাতীয় খাবারই বেশি খেয়ে থাকি। জাঙ্ক ফুডের হাত থেকে রেহাই পেতে এর উদ্ভট বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি এবং বেসরকারি অনুষ্ঠানে জাঙ্ক ফুড দিয়ে আপ্যায়নে নিরুৎসাহিত করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. এম মোস্তফা জামান বলেন, কোমল শব্দটি খুব সংবেদনশীল একটি শব্দ। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা এই শব্দটিকে জাঙ্ক ফুডের ক্ষেত্রে ব্যবহার করছি। আমাদের উচিত এটার জন্য একটি সচেতনমূলক শব্দ ব্যবহার করা।
তিনি আরো বলেন, সংবাদপত্র ও টেলিভিশনগুলোতে জাঙ্ক ফুডের বিভিন্ন আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে শিশুরা অকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। ফলে তাদেরকে অস্বাস্থকর খাবার কিনে দিতে বাধ্য হচ্ছে অবিভাবকরা। এ থেকে মুক্তি পেতে কর আরোপসহ একটি সুস্থ্য নীতিমালা দরকার।
অধ্যাপক আবু সাইদ বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যারা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে তারা আমাদের মগজ কিনে নিচ্ছে এবং পরবর্তি প্রজন্মের মগজধোলই করছে। এর থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সামাজিক আন্দোলন করতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করনে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোজেক্ট কর্মকর্তা শারমিন আক্তার রিনি। ১০০ জন শিশু এবং ১৬ জন অবিভাবকের উপর চালানো একটি জরিপের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি বাচ্চারা বিজ্ঞাপনের প্রভাবে স্বাস্থ্যকর খাবারের বিপরীতে অস্বাস্থ্যকর খাবারের নামসহ অনেক কিছুই জানে।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু শাক-শবজিসহ স্বাস্থ্যকর খাবারের নাম জানলেও তারা সেগুলোর নাম বলতে বা চিনতে পারে না। অতএব উদ্ভট সব বিজ্ঞাপনই আমাদের পরবর্তি প্রজন্মকে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি ঠেলে দিচ্ছে।