শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ১৯ জুন ২০১৬
যে মেয়েরা শৈশবে বাবা হারিয়েছে, তাদের বাবা হয়েছেন তিনি। যারা মা হারা হয়েছে, তাদের বুঝতে দেননি মায়ের ভালোবাসার অভাব। ভরণ-পোষণে তাদের বড় করে এখন বিয়েও দিচ্ছেন ঘটা করে।
গত বেশ ক’বছর ধরেই তিনি এই কাজ করছেন। এমন করতে করতে এ পর্যন্ত ৪৭২ জন পালিত মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন গুজরাটের ভাবনগর গ্রামের বাসিন্দা মহেশ শিভাঙ্গি। চলতি বছর বিয়ে দেবেন আরও ২১৬ কন্যাকে।
এতেই জীবনের সব সুখ আর আনন্দ পান ডায়মন্ড ব্যবসায়ী মহেশ। মহেশের এই আনন্দের ভাগিদার তার পরিবারও। পরিবারের লোকেরা এই কন্যাদের ভরণ-পোষণ ও বিয়েতে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছেন তাকে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, মা-বাবা হারা কন্যাদের ভরণ-পোষণ আর তাদের বিয়ে দেওয়ার কাজে ক্লান্ততো ননই, বরং দারুণ গর্ববোধ করেন মহেশ শিভাঙ্গি।
বড় আয়োজন করে একসঙ্গে অনেককে বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেক মেয়েকেই সোনার গয়নায় সাজিয়ে এবং নতুন সংসার পাততে সব সরঞ্জামসহ ৪ লাখ রুপি করে খরচ করেন মহেশ।
মহৎপ্রাণ মহেশ ৪০ বছর আগে বাবার হাত ধরে ভাবনগরে আসেন। এখানেই বাবার সঙ্গে পূর্বসূরীদের ব্যবসা শুরু করেন। বাবার মৃত্যুর পর সেই কাজের দায়িত্ব পুরোপুরি বর্তায় তার ওপর।
ব্যবসার পাশাপাশি মহেশ সিদ্ধান্ত নেন সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োগ করার। সেই চিন্তা থেকেই মা-বাবা হারা মেয়েদের ভরণ-পোষণের কাজ বেছে নেন। দায়িত্ব নেন সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার, যাদের কোনো অভিভাবক নেই বলে বিয়ে হচ্ছে না। ২০০৭ সাল থেকে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার এ কার্যক্রম শুরু করেছেন মহেশ।
তিনি বলেন, আমি এই গণ বিয়ের জন্য কখনোই অনুদানের আহ্বান জানাইনি। এটা আমারই চেষ্টামাত্র। কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার চেয়ে বড় পূণ্যের কাজ আর হতে পারে না।
নববধূ হয়ে সংসারে মনোযোগী মহেশের পালিত কন্যাদের একজন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তিনি কেবল আমার বাবাই নন, আমার ভাই-বোনেরও বাবা। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, তার মতো একজনকে আমাদের জীবনে পাঠিয়েছেন বলে।