সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ৭৩ তম জন্মবার্ষিকী পহেলা এপ্রিল

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ৩০  মার্চ  ২০১৭

সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ৭৩ তম জন্মবার্ষিকী পহেলা এপ্রিল

সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ৭৩ তম জন্মবার্ষিকী পহেলা এপ্রিল

ঢাকার রাজনীতির নন্দিত নায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ও স্নেহভাজন, জনতার মঞ্চের রুপকার, ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত সফল মেয়র ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ এর ৭৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এই জনপ্রিয় অগ্রনায়ক ১৯৪৪ সালের এই দিনে পুরাতন ঢাকার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা আবদুল আজিজ, মাতা মুন্নি বেগম এর পরিবারে মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন সবচেয়ে ছোট ছেলে। ১৯৬৭ সালে ঢাকার প্রখ্যাত পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মাজেদ সরদারের কন্যা ফাতেমা খাতুন সাথে পরিনয়সূত্রে আবদ্ধ হন, ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি ১ পূত্র ও ২ কন্যার জনক।

যৌবনের শুরু থেকে জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল। মোহাম্মদ হানিফের সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল তিনি সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুব কাছে থেকেছেন এবং তাঁর মাধ্যমে রাজণীতিতে হাতেরখড়ি। উদার চিন্তাচেতনা, প্রখর ব্যক্তিত্ব ও সংবেদনশীলতা তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ঠকে উজ্জ্বল করে তিনি পরিণত হন দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষের প্রিয় নেতায়। মোহাম্মদ হানিফ ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। এসময় ছয়দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তীতে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহাম্মদ হানিফ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মোহাম্মদ হানিফকে অত্যান্ত স্নেহ ও ভালোবাসতেন। তাই ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর তার ঢাকা-১২ আসন ছেড়ে দিয়ে তাকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত করিয়ে আনেন। পরবর্তীতে সংসদে হুইপেরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ’৭৬ সালে মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ৩০ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালে লক্ষাধিক ভোটের ব্যাবধানে ঢাকার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন এই নেতা আর তারই নেতৃত্বে ’৯৬-এর মার্চের শেষ সপ্তাহে ”জনতার মঞ্চ” গঠন করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য এটি টানির্ং পয়েন্ট তৈরী হয়। তাই ’৯৬-এর ১২জুন দেশের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পক্ষে গনজোয়ার সৃষ্ঠি করে পরবর্তীতে দেশ পরিচালনার জন্য আওয়ামী লীগের বিজয়ে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছেন মোহাম্মদ হানিফ।

২০০৪ সালের ২১শে আগষ্ঠ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশের শেখ হাসিনার ওপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে তার প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে রক্ষার প্রানান্তর চেষ্টা করেন মোহাম্মদ হানিফ। একের পর এক ছোড়া গ্রেনেডের সামনে নির্ভয়ে পেতে দিলেন নিজেকে, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রানে রক্ষা পেলেও মারাত্বক আহত হন তিনি। সে সময়ে মস্তিক সহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য ঘাতক স্পিন্টার ঢুকে পড়ে। দীর্ঘ দিনের চিকিৎসাতেও কোন ফল দেয়নি বরং মাথার গভীরে বিধে থাকায় অস্ত্রোপ্রচার করেও অপসারন করা সম্ভব হয়নি ওই সব স্পিন্টারের। দুঃসহ যন্ত্রনা সহ্য করেই মোহাম্মদ হানিফ জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন।

২০০৬ এর ৮ ফেব্রয়ারী মুক্তাঙ্গণে এক সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। মাথায় বিদ্ধ স্পিন্টারের প্রতিক্রিয়া পরবর্তী সময়ে তার শাররীক অবস্থার অবনতি ও অকাল মৃত্যু কারন হিসেবে কাজ করেছে। ব্যাংককে তীব্র যন্ত্রনা ভোগ করে র্দীঘ দিন চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফিরে ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাতে ৬২ বছর বয়সে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে মৃৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এরই মধ্যে অবসান ঘটে মোহাম্মদ হানিফের কর্মময় বণার্ঢ্য রাজনৈতিক জীবনের।

মোহাম্মদ হানিফের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন কবর জিয়ারত, দোয়া, মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হইবে। নন্দিত এই নেতার একমাত্র পুত্র ঢাকা ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশন মাননীয় মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন পিতার জন্মবার্ষিকীতে দেশবাসীর দোয়া কামনা করেছেন।

 

Related posts