শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২১ মার্চ ২০১৬
মাঠ পর্যায়ের রিটার্নিং কর্মকর্তারা কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা করছে না জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ বলেছেন, নির্বাচনী সহিংসতা আমরা কমিয়ে আনতে পারছি না।
নির্বাচনী সহিংসতা কমাতে না পারার বিষয়টিকে চরিত্রগত বিষয় উল্লেখ করে সিইসি আরো বলেন, উন্নত দেশের তুলনায় নির্বাচনের সহিংসতা আমাদের ও প্রতিবেশি দেশে বেশি। এটাকে আমরা কমিয়ে আনতে পারছি না। এটা চরিত্রগত বিষয়। এটা দূর করতে সময় লাগবে। ট্রাডিশন ও কালচার গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল, প্রার্থীর সহযোগিতা লাগবে।
সোমবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। মঙ্গলবার থেকে প্রথম ধাপে শুরু হচ্ছে ইউপি নির্বাচন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ভোট চলাকালীন সময়ে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কোনো সদস্য অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব করলে আমরা তাৎক্ষনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব। কোনো কেন্দ্রে ভোট কারচুপি ও সহিংসতা হলে ওই কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়ী হবেন।
কাজী রকিব বলেন, নির্বাচনের সময় আমরা অন্য ডিপার্টমেন্টের উপর নির্ভর করি। অন্য ডিপার্টমেন্টের লোকজনকে আমাদের রির্টানিং কর্মকর্তাও করতে হয়েছে। তাদের আমরা খুব অল্প সময়ের জন্য ট্রেনিং দেই। তাদের উপর আমাদের তেমন কর্তৃত্বও নেই। সেজন্য কাঙ্ক্ষিত সহযোগিত কিংবা, যে মাপের সেবা চাই তা পাই না। এজন্য এসব ঘটনা ঘটছে।
এখন নির্বাচন অর্থকেন্দ্রিক হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যার ফলে যার গায়ে জোর বেশি তিনিই নিজেকে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি মনে করেন। এগুলোর সব সমাধান হবে ভোটারদের রায়ে। ভোটারদের ভোটে ভালো ব্যক্তি নির্বাচিত হবে। এভাবেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
প্রতিটি ভোটার যাতে স্বতস্ফূর্তভাবে নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেলক্ষে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সিইসি বলেন, আগামীকালের নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে করার জন্য জেলা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো বাড়ানো হবে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে থাকবে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, এপিবিএন, আনসার ব্যাটালিয়ন ও আনসার-ভিডিপির প্রহরা। টহলে থাকবে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ জন আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য থাকবে।
বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকানোর নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, বহিরাগতরা যেন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনে এলাকায় প্রবেশ না করেন। অবৈধ অস্ত্র যেন ব্যবহার না করে। ভোটাররা যেন নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তার জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী, মো. শাহ নেওয়াজ ও নির্বাচন কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।