সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে আলেম-উলামাদেরকে সোচ্চার হবার আহবান প্রধানমন্ত্রী

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১২  আগস্ট ২০১৬

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে আলেম-উলামাদেরকে সোচ্চার হবার আহবান প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে আলেম-উলামাদেরকে সোচ্চার হবার আহবান প্রধানমন্ত্রী

দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে দেশ থেকে এই দুই অশুভ শক্তিকে উচ্ছেদে আলেম-উলামাদেরকে আরো সোচ্চার হবার আহবান জানিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য সুখবর। দেশের মানুষের মধ্যে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ বিরোধী একাট চেতনা সৃষ্টি হয়েছে। এই চেতনাটাকে আরো শাণিত করা দরকার। আপনারা যারা ধর্ম শিক্ষা দেন এটা মানুষকে আরো ভালোভাবে বোঝাতে হবে এবং ওলামায়ে কেরামগণ এখানে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন।.. আর কেউ যেন এই ভুল পথে না যায়।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে উলামা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শোলাকিয়া ঈদ জামাতের গ্রান্ড ইমাম ও জমিয়তুল উলামার সভাপতি আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমৃকর্তাবৃন্দ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর প্রধানগণ, রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান স্বামী ধ্রুবেশানন্দ মহারাজ, খ্রীস্টান ধর্মীয় প্রধান আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি শুদ্ধানন্দ মহাথেরোসহ বিভিন্ন ধর্মের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিকবৃন্দ এবং আলেম-উলামা সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ইসলামের দৃষ্টিতে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও আমাদের করণীয় বিষয়ে দেশের এক লাখ আলেম উলামা স্বাক্ষরিত ‘ফতওয়া’র প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়।

আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ অনুষ্ঠানে এই এক লাখ আলেমের স্বাক্ষর সম্বলিত ৩০ খন্ড ‘ফতওয়ার’ একটি খণ্ড প্রতীকি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইসলামের সঠিক শিক্ষাটা যেন সবাই পায় সে ব্যবস্থাটা আলেম-উলামাগণকে নিতে হবে। সে কারণে আমি মনে করি- আমাদের দেশব্যাপী যে জনমত সৃষ্টি হয়েছে। এটা আমাদের জন্য সুখবর। দেশের মানুষের মধ্যে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ বিরোধী একাট চেতনা সৃষ্টি হয়েছে। এই চেতনাটাকে আরও শাণিত করা দরকার। আপনারা যারা ধর্ম শিক্ষা দেন এটা মানুষকে আরো ভালোভাবে বোঝাতে হবে এবং ওলামায়ে কেরামগণ এখানে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পরেন।’

 

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা যে নির্দেশ দিয়েছি সারাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একটা কমিটি করে জনমত সৃষ্টি করা সেখানে মসজিদের ইমামগণ রয়েছেন, ওলামায়ে কেরামগণ রয়েছেন সবাই মিলেই এটার ব্যাপক প্রচার চালাবেন।’

তিনি স্বাক্ষর সংগ্রহকে মহৎ একটি উদ্যোগ উল্লেখ করে বলেন, নিশ্চই এই এক লাখ আলেম কখনও মিথ্যা কথা বলবেন না। তারা সত্য কথা বলেন। কোরআনের কথা বলেন। সন্ত্রাসের পথ ইসলামের পথ নয়, এটি সাধারণ মানুষকে বোঝানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী তাদের দায়িত্ব দেন।

প্রধানমন্ত্রী ইসলামের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট স্মরণ করে বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম, শান্তির বাণী ইসলামই প্রথম ছড়িয়েছে-এটাকে আমরা মানুষের কাছে নিয়ে যাব। কারণ ইসলামের যে শৌর্য-বীর্য ছিল- পুরনো ইতিহাস খুললে দেখা যাবে- মানুষের জীবনমান উন্নত করার সব শিক্ষা কিন্তু আমরা সেখান থেকে পেয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে সমান্য কয়েকটা লোকের জন্য আমাদের এই পবিত্র শান্তির ধর্ম হেয় প্রতিপন্ন হবে সেটা কাম্য নয়।

অবশ্যই এটা কোরআনের বাণী, আমাদের নবী করিম (সা.) এর বাণী এবং হাদিসে যা আছে তার ভিত্তিতেই আমরা ইসলামের সমৃদ্ধ মূল বাণীটা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। যাতে করে আর কেউ বিভ্রান্ত না হয়। আমাদের ধর্মকে আর যেন কেউ হেয় প্রতিপন্ন করতে না পারে, বদনাম করতে না পারে।

তিনি বলেন, এগুলো যারা করছে তারাতো আমাদের ধর্মটাকে একবারে হেয় করে দিচ্ছে। এটা সব চেয়ে কষ্টের, দুঃখের। তারা কি বুঝে করছে আমি জানি না। তারা কোন বেহেশত পাবে জানি না। তবে, মানুষ খুন করা যে কত বড় অপরাধ সেটা জানি- উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

 

Related posts