শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২৮ জুলাই ২০১৬
জঙ্গিবিরোধী কমিটিতে সবার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সারাদেশে সন্ত্রাস ও নাশকতাবিরোধী কমিটিগুলোতে বিএনপি ও জামায়াতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও থাকবেন। প্রশাসনের আওতায় স্থানীয় পর্যায়ে সন্ত্রাস ও নাশকতাবিরোধী যেসব কমিটি করা হবে, সেগুলো দলীয় বা দলের অঙ্গসংগঠন হবে না।
আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনে জেলা প্রশাসকদের সাথে মতবিনিময় শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর ওই সব কমিটি সক্রিয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কমিটিগুলোকে সচল করার তাগিদ দিয়েছেন।
এর আগে ২০১৩ সালে মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ইউনিয়ন পর্যায়ে সন্ত্রাস ও নাশকতাবিরোধী কমিটি করে সরকার।
দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সন্ত্রাস ও নাশকতাবিরোধী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, অবকোর্স করা হবে, অবকোর্স করা হবে। অন্য দল থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও এসব কমিটিতে থাকবেন। আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে মাঠপর্যায়ে সন্ত্রাস ও নাশকতাবিরোধী কমিটি গঠন করছে। এটা আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে যে কমিটি হবে, সেগুলো দলীয় হবে না।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার, সিটি করপোরেশন, মিউনিসিপ্যালটি, ইউনিয়ন পরিষদ- সবাই এর ভেতরে অন্তর্ভুক্ত হবে। এটা কোনো দলীয়, কোনো দলের কোনো অঙ্গ-সংগঠন হবে না।
জাতীয় ঐক্যে বিএনপি-জমায়াতের প্রতিনিধিদের রাখা হবে কি না- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তো রাজনৈতিক প্লার্টফর্ম নয়, তাই ব্যাপারটা এখানে উল্লেখই না করলাম। নিশ্চয় কালকে বা পরশু দিন পাবেন, এ বিষয়টা আলোচনা হবে।
সন্ত্রাসবিরোধী কমিটিতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বাইরে বিএনপি-জামায়াতের কাউকে রাখার সুযোগ আছে কি না- এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এটা তো এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি যে রাজনৈতিক দল নিয়ে হবে, না প্রশাসন নিয়ে হবে, না কি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার দিয়ে করা হবে, না পৌরসভার মেয়র? এটার একটা নির্দেশনা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আছে- আওয়ামী লীগ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় এসব কমিটিগুলো করার। প্রশাসনের ব্যাপারে যখন সিদ্ধান্ত হবে, উদ্যোগ নেওয়া হবে, তখন প্রশাসনিক আওতার ভেতরে কমিটিগুলো ভবিষ্যতে করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিসিরা কোনো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন কি না- এ প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেন, এটা তো পুলিশ প্রশাসনের কাজ। প্রশাসন যাতে সব সময় গতিশীল থাকে, সেজন্য জেলা প্রশাসকদের কিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ করে না। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিভিন্ন কাজে নেতৃত্ব দেন এবং জনমত সৃষ্টি করেন। এটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
পুলিশের সাথে জেলা প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা আছে কি না-এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ে পুলিশের সাথে জেলা প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা আছে বলে মনে হয় না।
সৈয়দ আশরাফ জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় তৃণমূল পর্যায়ে কাজের উপর জোর দিয়ে বলেন, সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয়ভাবে তাদের (জঙ্গি) নিরস্ত্র করা অথবা তাদের গতিবিধি পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা, এগুলো তৃণমূল পর্যায়েই সব চেয়ে বেস্ট।
বৈঠকে জেলা প্রশাসকরা বাসস্থান, পরিবহন, চালকদের বেতনসহ ছোটখাটো কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলেও তিনি জানান।
এর আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে কোর কমিটির সভায় পুলিশ সুপার (এসপি), আনসার, বিজিবির প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।