শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ১৫ জুলাই ২০১৬
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনের সরকারি সফরে ১১তম এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনে (আসেম) যোগদানের জন্য সন্ধ্যায় উলানবাটোর পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরের শাংরি-লা হোটেলে দু’দিনব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে উলানবাটোরের চেঙ্গিস খান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
মঙ্গোলিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম এবং মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ ও এ্যাম্বাসেডর এট লার্জ পি. সাগান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
পরে মঙ্গোলিয়ার সশস্ত্রবাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দর থেকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে আসেম ভিলায় নিয়ে যাওয়া হবে। এ সফরকালে সেখানেই তিনি অবস্থান করবেন।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী এই শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন।
শেখ হাসিনা সম্মেলনস্থলে পৌঁছলে সেখানে তাকে স্বাগত জানাবেন মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্ট তাসখিয়াজিন এলবেগদর্জ।
শেখ হাসিনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম ও দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করবেন এবং আসেম অংশীদারিত্ব ও যোগাযোগ বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন।
প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার সুইস প্রেসিডেন্ট জোহান স্লাইডার, রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেব, জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো জেন্টিলোনির সাথে বৈঠক করবেন।
তিনি অতিথিদের সম্মানে আসেম ভিলেজের মঙ্গোলজেন-এ মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠেয় এক ভোজসভায়ও অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন কিয়াও, ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারী, ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি ডোনাল্ড টাস্ক ও ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি জেন ক্লাউড জুনকারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি আসেম নেতাদের সাথে অবকাশকালীন বৈঠকেও অংশগ্রহণ করবেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠেয় এসব বৈঠকে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশে সাম্প্রতিক দু’টি সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ মোকাবেলায় সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের বিষয় তুলে ধরবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আসেম হচ্ছে- ৫১টি এশিয়া ও ইউরোপের দেশ ও দু’টি আঞ্চলিক সংস্থার একটি ফোরাম।
আরো বেশি ভারসাম্যপূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈশ্বিক শৃংখলা অর্জনের লক্ষ্যে ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে প্রয়োজনীয় সকল পর্যায়ে সম্পর্ক গভীর করতে এটি গড়ে তোলা হয়েছে।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত প্রথম সম্মেলনে ১৯৯৬ সালের ১ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে এশিয়া-ইউরোপ ফোরাম প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আসেম সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বাংলাদেশ, বেলজিয়াম, ব্রুনাই দারুস সালাম, বুলগেরিয়া, কম্বোডিয়া, চীন, ক্রোয়েশিয়া, সাইপ্রাস, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রীস, হাঙ্গেরি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, জাপান, কাজাখস্তান, লাও পিডিআর, লাতভিয়া, লিথুনিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মাল্টা, মঙ্গোলিয়া, মায়ানমার, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, কোরিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনাম। দু’টি আঞ্চলিক সংস্থা হচ্ছে- ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আশিয়ান। বাংলাদেশ ২০১২ সালে এই ফোরামে যোগ দেয়।