শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২১ এপ্রিল ২০১৬
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ব্যাংক রশিদের মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা আদায় করা হচ্ছে। এতে আয় বাড়ছে ঢামেকের। পরীক্ষামূলকভাবে হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকে পূবালী ব্যাংকের একটি বুথের মাধ্যমে এ লেনদেন চলছে।
পর্যায়ক্রমে জরুরি বিভাগ, হাসপাতাল-২, প্যাথলজি ও রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগসহ আরো চারটি কাউন্টার চালুর প্রক্রিয়া চলছে। পাঁচটি কাউন্টারের মধ্যে জরুরি বিভাগের কাউন্টারটি ২৪ ঘণ্টাই খোলা রাখার পরিকল্পনা চলছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাসপাতাল স্টাফদের বদলে ব্যাংক রশিদের মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদনে শুরুর ফলে আয় রোজগার আগের তুলনায় ক্রমেই বাড়ছে। সুনির্দিষ্টভাবে আয়কৃত টাকার পরিমাণ জানা সম্ভব না হলেও দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, গত মাসে ১ কোটি ৯২ লাখ টাকার রাজস্ব জমা হয়েছে। গত বছরের এ সময়ে রাজস্ব জমার পরিমাণ ছিল দেড় কোটি টাকারও কম।
হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিজানুর জানান, প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে স্থাপিত পূবালী ব্যাংকের একটি কাউন্টারের মাধ্যমে অর্থ আদায়েই বেশ ভাল সুফল পাওয়া যাচ্ছে, আয় রোজগার ক্রমেই বাড়ছে।
তিনি জানান, ২৬শ’ বেডের ঢামেক হাসপাতালের আউটডোরে গড়ে প্রতিদিন ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার, জরুরি বিভাগে ১ হাজার থেকে ১২শ’ ও ইনডোরে সাড়ে ৩ হাজার রোগী চিকিৎসাধীন থাকছে। এত বিপুল সংখ্যক রোগীর বিভিন্ন ধরনের ক্লিনিক্যাল ও প্যাথালজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে টাকা পয়সার নিয়মিত লেনদেন হয়। ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে হাসপাতাল স্টাফদের মাধ্যমে লেনদেন করতে হতো বিধায় টাকা-পয়সার হিসাব রাখা, জমা দেয়াসহ বিভিন্ন কাজে বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োজিত থাকতে হতো। ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় লেনদেনে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের রোগীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ এক শ্রেণির অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী সুকৌশলে তছরূপ করে আসছিল বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। নানা টালবাহানায় টাকা নিজেদের কাছে রেখে বিলম্বে জমা দেয়ার মাধ্যমে অপব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছিল। বিগত দুই-তিন বছরে এ ধরনের কার্মকাণ্ডে জড়িতের অভিযোগে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ জারিসহ লঘু দণ্ড দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে আগত রোগীরা মোট ৩০টি খাতে অর্থ পরিশোধ করছে। খাতগুলো হলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এক্সরে (বহিঃবিভাগ), এক্সরে (জরুরি বিভাগ), আলট্রাসনোগ্রাম (এফএনএসি), কার্ডিওলজি (ইসিজি), এনজিওগ্রাম, ইকোগ্রাম, ইটিটি, রেডিওথেরাপি বিভাগ, ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি বিভাগ, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ, হিমোডায়ালাইসিস, এন্ডোসকপি, হেমাটোলজি (ল্যাব), কলোন্সোকপি, চক্ষু বিভাগ, এবিজি (আইসিইউ), শিশু অনকোলজি, কেবিন চার্জ, পেয়িং বেড চার্জ, অপারেশন চার্জ, টিকেট ফি (বহিঃবিভাগ), ভর্তি ফি (বহিঃবিভাগ), টিকেট ফি (জরুরি বিভাগ) ভর্তি ফি (জরুরি বিভাগ), টিকেট ফি (বার্ন ইউনিট), টিকেট ফি (হাসপাতাল-২), অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ও লিথট্রিপসি অপারেশন ইত্যাদি।
মোট খাত ৩০টি হলেও প্রধানত পাঁচটি খাতে রেডিওলজি, ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি, রেডিওথেরাপি, কেবিন ভাড়া ও পেয়িং বেড ভাড়া থেকে এসেছে।