শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২৫ জুলাই ২০১৬
মোঃ আল আমিন, মাধবদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা :
বৈরী আবহাওয়ার কারনে নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানার পৌর শহর সহ আশপাশের গ্রাম মহল্লায় শতশত নারী পুরুষ ও শিশুদের মাঝে দেখা দিয়েছে ভাইরাস জ্বরের প্রাদুর্ভাব। ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শত শত রোগী প্রতিদিনই জ্বর, সর্দি, পেটের পিঁড়া, মাথা ব্যাথা ও ডায়রিয়া জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও প্রইভেট হাসপাতাল গুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকে আবার গ্রাম্য চিকিৎসকেরও শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা গ্রহন করছেন। জানাগেছে, গত এক পক্ষকাল যাবৎ মাধবদীতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তন ও দুষিত পানির কারণেই মুলত ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই এক বা একাধিক মানুষ ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তবে এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। এই জ্বর এক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে। আবার অনেকের জ্বর ৮/১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার পরে টায়ফ্রয়েট জ্বরে রূপ নিচ্ছে। স্থানীয় একজন চিকিৎসক জানান এ জ্বরে ভয়ের কোনো কারণ নেই। এটা এক ধরনের ভাইরাস জ্বর। একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে এ ধরনের বেশির ভাগ রোগীকে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এ জ্বর কোন পরিবারের একজনের হলেই বাকী সদস্যরাও এর শিকার হচ্ছেন। এছাড়াও হাসপাতাল, ডাক্তারের চেম্বার ও প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোতে ব্যাপক হারে ভীড় করছে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা। হাসাপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন আনাচে কানাচে থেকে প্রতিদিন গড়ে শত শত জ্বরে আক্রান্ত রোগী আসছেন চিকিৎসা নিতে। এ জ্বরে বেশী আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধরা কস্ট পাচ্ছে বেশী। জ্বর হলে শরীরের প্রচন্ড তাপে রোগীরা বেশী দূর্বল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে জ্বরের প্রচন্ড তাপ মাত্রায় এমন অনেক শিশু রয়েছে যাদের খিচুনী পর্যন্ত হয়ে থাকে। স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মাধবদী পৌর শহরের বিরামপুর মহল্লার শিরিয়া বেগম জানান, তিনি ৪ দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে, তার শরীরে প্রচন্ড ব্যথা সেই সাথে মাথা ব্যাথাতো আছেই যা কোন ভাবেই কমছে না। শরীরে প্রচন্ড জ্বালা পোড়া হচ্ছে। মাঝে মাঝে শরীরে কাঁপুনি দিয়ে প্রচন্ড জ্বর আসছে। শরীর দুর্বল লাগছে, শক্তি পাচ্ছেন না। চিকিৎসা চলছে ক’দিন ধরেই। কিন্তু তার জ্বর কমছে না। ডাক্তারের চিকিৎসায় কোন পরিবর্তন আসছেনা। নওপাড়া গ্রামের শাহানা রহমান শিল্পী জানান, ডায়রিয়া জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে মুলত ডায়রিয়া ও জ্বরসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। শরীরে অস্বাভাবিক তাপমাত্রার কারণে রোগী খুব দুর্বল হয়ে পড়ছে। হাসপাতালে রোগীদের প্রতিদিনই চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ কমে আসবে বলে জানান চিকিৎসক বেলায়েত হোসেন।