মমতা তিস্তা চুক্তিতে এখনও নারাজ

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ১৪   অক্টোবর  ২০১৬

মমতা তিস্তা চুক্তিতে এখনও নারাজ

মমতা তিস্তা চুক্তিতে এখনও নারাজ

ভারতের সার্ক বয়কটের সিদ্ধান্তকে প্রথম সমর্থন করেছিল বাংলাদেশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার চাচ্ছে ভারত যেন এবার অবিলম্বে তিস্তা চুক্তিতে সই করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজি থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও তিস্তা চুক্তিতে নারাজ।

গোয়ায় ‘ব্রিকস’ সম্মেলনে যোগ দিতে রোববার ভারত যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। ১৬ অক্টোবর গোয়ায় নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে তিস্তা নিয়ে মমতার মতামত জানতে তার সঙ্গে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

মমতা তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নন। ছিটমহল বিনিময়ের ক্ষেত্রে তিনি সম্মতি দিয়েছিলেন। মোদী যখন শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন, তখন তিনিও হাসিনার আমন্ত্রণে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বিশে করে উত্তরবঙ্গের কথা ভেবেই তিনি এখনও তিস্তা চুক্তিতে সই করতে রাজি নন।

মমতা কেন্দ্রকে জানিয়েছেন, ঢাকা সফরের সময় তিস্তা নিয়ে কথা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের সমস্যার কথা উঠেছিল। তারপর এত দিন হয়ে গেছে। কিন্তু মোদী সরকার তিস্তা চুক্তি রূপায়ণের আগে পশ্চিমবঙ্গের কথা ভেবে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।

তিস্তা নিয়ে মমতার আপত্তির কারণ কী? মমতার অভিযোগ, সিকিমে মুড়ি-মুড়কির মতো অসংখ্য জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। তার মধ্যে ১০ মেগাওয়াট, এমনকী ৪ মেগাওয়াটের মতো প্রকল্পও আছে! তিস্তার উপর এ ধরনের প্রায় শতাধিক প্রকল্প তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি ৮টি বড় বাঁধ তৈরি হয়েছে। সিকিম এভাবে এলোপাথাড়ি বাঁধ দেওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানির সঙ্কট হচ্ছে। আর বর্ষায় সিকিম বাঁধ বাঁচাতে জল ছাড়লে ভেসে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিঙের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন মমতা। প্রধানমন্ত্রী, সুষমা, রাজনাথকেও জানিয়েছিলেন। ঢাকার সেই সফরের পরে এক বছরেরও বেশি কেটে গেলেও সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে এক সঙ্গে বসিয়ে তিস্তা নিয়ে কোনও বৈঠক করেননি মোদী। সিকিমকেও কেন্দ্রের তরফে বাঁধ নিয়ে সতর্ক করা হয়নি।

দ্বিতীয়ত, শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানির সঙ্কটের জন্য উত্তরবঙ্গে পানির সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য ছোট ছোট জলাধার গড়ার কথা বলা হয়েছিল। মমতা নিযুক্ত নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র কমিটি এই প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু এখনও কেন্দ্র এ নিয়ে উদ্যোগী হয়নি। উত্তরবঙ্গে বিকল্প জলপ্রকল্পের জন্য কোনও বিশেষ আর্থিক বরাদ্দও হয়নি।

মমতার বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে তিস্তা নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি আগে মেটাক কেন্দ্র। তার পর অন্য কথা। মমতার নির্দেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে এই পরিস্থিতি জানিয়ে চিঠিও লিখেছেন মুখ্যসচিব।

সব মিলিয়ে তিস্তা জট কাটার পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। মোদী চাইলেও মমতা সায় না দিলে এই চুক্তি সই হবে না। সূত্র : আনন্দবাজার।

 

Related posts