‘মঙ্গা’ শব্দটা কুড়িগ্রাম বাসীকে আর শুনতে হবে না: প্রধানমন্ত্রী

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৬  সেপ্টেম্বর   ২০১৬

‘মঙ্গা’ শব্দটা কুড়িগ্রাম বাসীকে আর শুনতে হবে না: প্রধানমন্ত্রী

‘মঙ্গা’ শব্দটা কুড়িগ্রাম বাসীকে আর শুনতে হবে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মঙ্গা’ শব্দটা যেন কুড়িগ্রাম বা রংপুরবাসীকে আর না শুনতে হয় সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই অঞ্চলে আর কোনো দিন মঙ্গা হবে না। মানুষ না খেয়ে মরবে না। তারা যেন স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে পারে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশে যারা হতদরিদ্র কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাদের ১০ টাকা কেজি দরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। বুধবার কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ‘খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি’ উদ্বোধন করতে এসে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোটা বাংলাদেশে যে মাসে কাজ থাকে না সেই সব সময়ে বছরে পাঁচবার চাল বিতরণ করা হবে। জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন করা হয়েছে। বাংলাদেশের একটি মানুষও না খেয়ে মরবে না। যারা গৃহহারা হয়েছে, ঘর নাই তারা ঘর পাবে। কেউ বিনা চিকিৎসায় মরবে না। সকল ছেলেমেয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে।

বুধবার কুড়িগ্রামের চিলমারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি’র আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় জঙ্গিবাদের বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনার সন্তানের বিষয়ে খবর রাখুন, সন্তান স্কুল-কলেজে যাচ্ছে কিনা, তার খোঁজখবর নিন। আপনার সন্তান অসুস্থ হয়ে স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। অন্য কোথাও যাচ্ছে কিনা তার খোঁজ নিন।

বিএনপি ভারতের কাছে ছিটমহল বিনিময় ও সীমানা নির্ধারণের কথা উচ্চারণ করার সাহস পায়নি। কিন্তু আমরা শান্তিপূর্ণভাবে স্থল সীমানা চুক্তি বাস্তবায়ন করি। আমরা ছিটমহল বিনিময় করেছি। সাো বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। বাংলাদেশের জন্য এটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে বিশাল সমুদ্র এলাকা বাড়িয়েছি। যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে তাদের বিচার করেছি। ’৭১ সালে যারা নির্যাতন, হত্যা ও লুটপাট করেছে সেসব যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর করা হয়েছে। বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের প্রজন্মকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চাই। আমরা বিনামূল্যে বই তুলে দিচ্ছি। বাবা-মাকে আর কষ্ট করতে হবে না। এছাড়াও শিক্ষাসহায়তা ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি কলেজ ও একটি স্কুলকে সরকারীকরণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চিলমারী বন্দরের পুরনো ঐহিত্য ফিরে আনার জন্য কাজ করা হবে। চিলমারী থেকে পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হবে। কুড়িগ্রামের ১৬টি নদীর নাব্যতা দূর করার জন্য ড্রেজিং করা হবে। এজন্য সমীক্ষার কাজ চলছে। এছাড়াও দ্বিতীয় ধরলা ব্রিজ ও রাস্তা নির্মাণে কাজ করা হচ্ছে। রেল সংযোগ আরো উন্নত করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম এমপি বলেন, বর্তমান সরকারের নেয়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অন্যান্য কর্মসূচীর সাথে যোগ হল খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি। ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ।’ এই শ্লোগান সামনে রেখে দরিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কাজ চলছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্য রপ্তানি করে। আমরা নেপালসহ বিভিন্ন দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্য সহায়তা পাঠিয়েছি । নতুন এ কর্মসূচি ভুল ক্রটি ছাড়াই করতে চাই। এ জন্য চাই সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ। প্রতি ৫০০ উপকার ভোগীর বিপরীতে একজন করে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে বক্তব্য শেষ করেন। তারপর আবার বলেন, আমি এরশাদের দল জাতীয় পার্টি করি। আমার দলের প্রেসিডেন্ট এরশাদ। এরশাদ দীর্ঘজীবী হোক। এসময় উপস্থিত সবাই হেসে ওঠে।

২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলবো। এজন্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে দিতে। আওয়ামী লীগের হাতকে শক্তিশালী করুন। আওয়ামী লীগের পতাকাতলে সমবেত হোন।

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সংস্কৃতিমন্ত্রী অাসাদুজ্জামান নূর, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদ, অাওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, কুড়িগ্রাম-৪ অাসনের সংসদ সদস্য রুহুল অামিন, জেলা অাওয়ামী লীগের সভাপতি অামিনুল ইসলাম মঞ্জু মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক জাফর অালী, চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা অাওয়ামী লীগ সভাপতি শওকত অালী সরকারসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা অাওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

Related posts