শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২৮ জুলাই ২০১৬
বাংলাদেশের ‘জীববৈচিত্র্য’ রক্ষায় ‘বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য বিল-২০১৬’ নামে একটি বিল জাতীয় সংসদ অধিবেশনে উত্থাপন করা হয়েছে। বিলে এ আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। এরপর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলটি সংসদে উত্থাপনের বিরোধীতা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম।
উত্তরে মন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এখানে বাধ্যবাধকতা আছে। এছাড়া এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ ‘কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভার্সিটি’তে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর করেছে। এ হিসেবেও দায়বদ্ধতা আছে। তাই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও তার উপাদান সমূহের টেকসই ব্যবহার, জীবসম্পদ ও তদসংশ্লিষ্ট জ্ঞান ব্যবহার হতে সুফলের সুষ্ঠু ও ন্যায্য হিস্যা বন্টন এবং আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান করতে বিলটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা অনুমতি ছাড়া দেশের কোনো ‘জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ’ এর বিষয়ে তথ্য বা জ্ঞান সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা বা বাণিজ্যিক ব্যবহার করতে পারবে না। এই বিধি-নিষেধ প্রযোজ্য হবে বিদেশি নাগরিক বা অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে। আর এই আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে জীববৈচিত্র্য বা এ সম্পর্কিত জ্ঞান ব্যবহারের অনুমতি দিতে একটি জাতীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৯ সদস্যের এই কমিটির সভাপতি হবে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব। এছাড়া কমিটি প্রয়োজনীয় যে কাউকে কো-অপ্ট করতে পারবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, গবেষণা করে নতুন কিছু আবিস্কার করতে পারলে মেধাস্বত্ত্বের জন্য জাতীয় কমিটির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। কমিটিকে এড়িয়ে কোনো দেশি বা বিদেশি সংস্থার কাছে মেধাস্বত্ত্বের জন্য আবেদন করা যাবে না। আর কমিটির অনুমোদন ছাড়া কারো কাছে নিজের মেধাস্বত্ত্ব বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না।
বিলে জাতীয় কমিটির কাজগুলো তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভাগ করে দিতে স্থানীয় পর্যায়ে কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।