শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ৮ জুন ২০১৬
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত অপশাসনের ফলে গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়। কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে আবারো ক্ষমতায় আসার জন্য তাদের আজ্ঞাবহ রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনকে প্রধান উপদেষ্টা করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠে, তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলে। পাশাপাশি ওয়ান-ইলেভেনের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম হয়।
বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্যে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল মেয়াদে বাংলাদেশকে পরিণত করেছিল হত্যা, অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়ন, দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র ও লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে। বাংলাদেশ পরিচালিত হয়েছিল দুর্নীতির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, সাংবাদিক নির্যাতন ও জঙ্গিবাদের দেশ হিসেবে।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন নির্বাচনমুখী না হয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তখনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ও অসুস্থ পুত্রবধূর পাশে থাকতে ২০০৭ সালের ১৫ মার্চ আমেরিকা যাই। আমেরিকায় থাকা অবস্থায় আমার বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাঁদাবাজি ও খুনের মামলা দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সকল অপচেষ্টা ও প্রতিবন্ধকতা সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করে ২০০৭ সালের ৭ মে দেশে ফিরে আসি।
তিনি বলেন, তখন চারদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যায় আর নির্মম নির্যাতনের ছোবল। সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা সকলেই অমানুষিকভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমনই এক দুর্বিসহ সময়ে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হয়। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। নির্বাচনের কথা বলা মাত্র ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোরে সুধাসদন থেকে আমাকে গ্রেফতার করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বার বার আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনে কারচুপি করেছে। ক্ষমতায় যাবার পথ বন্ধ করেছে। আবার হত্যার জন্য গ্রেনেড মেরেছে, তারপরও বেঁচে গেছি। এক এগারোর কুশীলবরা যখন জানে মারতে পারে নাই তখন মানে মারার জন্য, রাজনীতি থেকে সরাবার জন্য একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে চলছে। জাতীয় সংসদ এলাকায় উপ-কারাগার তৈরি করে নিঃসঙ্গ কারাবাস দেয়া হয়। ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টে’ প্রহসনের বিচারের মুখোমুখি করা হয়।
তিনি বলেন, অনির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে বার বার আপোষের প্রস্তাব আসে। প্রতিবারই প্রত্যাখ্যান করেছি এবং বলেছি একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ ব্যতিত অন্য কোনো বিষয়ে আমি আলোচনা করতে রাজি নই। গণমানুষের তীব্র আন্দোলন-সংগ্রামের ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার লেজ গোটাতে বাধ্য হয়। ২০০৮ সালের ১১ জুন আমি মুক্ত হই।