শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২২ জানুয়ারি ২০১৭
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে হাঁটছি, সে পথ ধরেই বাংলাদেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ।
রোববার নতুন বছরের শুরুতে দশম জাতীয় জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিকেল ৪টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। এরপর রাষ্ট্রপতির নির্ধারিত ভাষণ শুরু হয় ৬টা ১৩ মিনিটে। তার আগে তিনি ৬টা ৭মিনিটে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন। এসময় বিউগল বেজে ওঠে এবং রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানানো হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশন শেষে রাষ্ট্রপতি তার লিখিত বক্তব্য শুরু করেন।
তিনি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে সরকারি দল ও বিরোধী দলসহ সকলকে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- ও পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরে রাাষ্ট্রপতি বলেন, শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাঁটছি, সে পথ ধরেই বাংলাদেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশ হিসেবে আপন মহিমায় অধিষ্ঠিত হবে।
রাষ্ট্রপতি ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জল রাখতে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করতে, দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে এবং শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।
একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আসুন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষ এবং দল মত পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং দিনবদলের সনদের ভিত্তিতে প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং এ কার্যক্রমে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা।’
‘রূপকল্প-২০২১’, দিনবদলের সনদ ও এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং বিভিন্ন পরিকল্পনায় গৃহীত কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির এ প্রত্যাশা অবশ্যই পূরণ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী যে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে সুশাসন সুসংহতকরণ, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ এবং জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা এসব লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবো।’
জাতীয় সংসদ দেশের আপামর জনসাধারণের আশা-আকাঙ্খার কেন্দ্রবিন্দু বলে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আলোকিত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্খা বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।’