পচা আলু জন্য এক পরিবারের চার জনের মৃত্যু

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

পচা আলু জন্য এক পরিবারের চার জনের মৃত্যু

পচা আলু জন্য এক পরিবারের চার জনের মৃত্যু

মারিয়ার বাবা যান আন্ডারগ্রাউন্ড সেলার থেকে সঞ্চিত আলুর কিছুটা নিয়ে আসতে। তিনি আর ফেরেননি। স্বামীর কী হল তা দেখতে তারপর ভূগর্ভস্থ সেলারে প্রবেশ করেন মারিয়ার মা। তিনিও ফিরছেন না দেখে একে একে সেখানে যান মারিয়ার ঠাকুমা আর দাদা।

রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের বাসিন্দারা প্রতি বছরই শীত আসার আগে শীতের জন্য শাকসবজি স়ঞ্চয় করে রাখেন। ৮ বছরের মারিয়া চেলিশেভার বাবা-মা-ও তেমনটাই রেখেছিলেন। বাড়ির ভূগর্ভস্থ একটি ঘরে রাখা ছিল কয়েক বস্তা আলু। দিন কয়েক পরে বাড়িতে ভাঁড়ারে রাখা আলু যখন শেষ হয়ে যায় তখন মারিয়ার বাবা যান আন্ডারগ্রাউন্ড সেলার থেকে সঞ্চিত আলুর কিছুটা নিয়ে আসতে। তিনি আর ফেরেননি। স্বামীর কী হল তা দেখতে তারপর ভূগর্ভস্থ সেলারে প্রবেশ করেন মারিয়ার মা। তিনিও ফিরছেন না দেখে একে একে সেখানে যান মারিয়ার ঠাকুমা আর দাদা। কিন্তু তাঁরা কেউই ফেরেননি। আতঙ্কিত মারিয়া চেঁচামিচি শুরু করলে ছুটে আসেন পাড়া-প্রতিবেশী। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। পুলিশ সন্দেহবশত মুখে গ্যাস মাস্ক পরে ঢোকে মারিয়াদের বাড়ির সেলারে। দেখা যায়, পরিবারের চার সদস্য সেখানে মরে পড়ে রয়েছেন।

পুলিশ প্রথমটা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছুই বুঝে উঠতে না পারলেও পরে ফরেনসিক বিশেষ়জ্ঞরা বুঝতে পারেন, আসলে ওই আলুই মৃত্যুই কারণ। সঞ্চিত আলুর মধ্যে একাংশ পচে গিয়েছিল, এবং তার ফলেই তা থেকে বের হয় একধরনের বিষাক্ত গ্যাস। যা নিঃশ্বাসের ফলে শরীরে প্রবেশ করে মৃত্যু ঘটায় একই পরিবারের চার সদস্যের।

কিন্তু কীভাবে এমনটা সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আলুতে থাকে গ্লাইকোঅ্যালকয়েড নামের এক ধরনের সিন্থেটিক এক্সকারবেট। সাধারণত মাটির তলায় হওয়া শাকসবজিতেই এগুলি বেশি পরিমাণে থাকে। আলুতেও এই গ্লাইকোঅ্যালকয়েডের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় আলুতে এই গ্লাইকোঅ্যালকয়েড শরীরের পক্ষে সহনীয় মাত্রাতেই থাকে। কিন্তু আলু পচে গেলে এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এবং পচা আলু থেকে নির্গত হয় এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাস, যা বিশেষ অবস্থায় মানুষের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। যেমনটা হয়েছিল মারিয়াদের পরিবারের ক্ষেত্রে।

২০১৪ সালে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা আলুর ব্যবহার সম্পর্কে খুব জরুরি একটি সতর্কবার্তা দেয়— পচা আলু কখনওই বাড়িতে রাখা উচিৎ নয়। আলু পচে গেলে মায়া না করে তা তৎক্ষণাৎ ফেলে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

 

 

 

Related posts