নদীর দূষণরোধ করতে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে : এলজিআরডি মন্ত্রী

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নদীর দূষণরোধ করতে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে : এলজিআরডি মন্ত্রী

নদীর দূষণরোধ করতে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে : এলজিআরডি মন্ত্রী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন মাস্টার প্ল্যান তৈরির মাধ্যমে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন।

আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরী সংক্রান্ত উচ্চ কমিটির এক সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ আহবান জানান।

মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন সভায় আরো বলেন, ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ফলে পানির স্তর প্রতিনিয়ত নীচে নেমে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে নদীর পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিড ও তরল বর্জ্য এবং মানব বর্জ্যরে কারণে ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের পানি প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে। এ সকল বর্জ্যরে কারণে নদীর পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকাকে ক্লিন সিটি করতে হলে ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের পানি দূষণমুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। তবে এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ সকল নদীর পানি দূষণমুক্ত, পরিষ্কার, স্বচ্ছ ও ব্যবহার উপযোগী রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক মাস্টার প্ল্যান তৈরির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৮০ ভাগ পানি ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে সরবরাহ করা হয়। আর ২০ ভাগ ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে করা হয়। এ কারণে আমাদের পানির স্তর নিচে চলে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পুরো দেশ এক সময় মরুভূমি হয়ে যাবে। এসব বিবেচনায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে ৮০ ভাগ পানি ভূ-উপরিস্থ উৎস হতে সরবরাহ করা হবে। এরপরও পানির যদি প্রয়োজন হয় তাহলে ২০ ভাগ ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে সরবরাহ করা হবে। এজন্য মেগা পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকার ইতোমধ্যে সারা দেশব্যাপী ৩ হাজার পুকুর খননে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত এ কমিটি একটি যুগোপযোগী ও কার্যকর মাস্টার প্ল্যান তৈরির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে কর্নফুলী ও ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনবে।

পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বলেন, পানি দূষণ বন্ধ করতে না পারলে যমুনা নদী থেকে পানি এনেও কোন লাভ হবে না।

কমিটির সদস্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনিসুল হক বলেছেন, কার্যকর মাস্টার প্ল্যান তৈরি ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ জন্য আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন।

কমিটির সদস্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, বুড়িগঙ্গা নদী উদ্ধারে প্রয়োজনে ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে সকলকে কাজ করতে হবে। এজন্য সিটি কর্পোরেশনকে ক্ষমতা দিতে হবে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ. জ. ম. নাসির হোসেন বলেন, এখনই উদ্যোগ না নিলে কর্ণফুলি নদীও বুড়িগঙ্গার মতো দুষণ হয়ে পড়বে।

সভায় নদীর স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নৌ-বাহিনীর একশন প্ল্যান, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

আগামী ২ মার্চ মাস্টার প্ল্যান তৈরির জন্য গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বৈঠক দ্বিতীয় অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়র ও আশ-পাশের পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত করার জন্য সভায় আলোচনা করা হয়।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও কমিটির কো-চেয়ারম্যান শাহজাহান খান ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কমিটির সদস্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, নৌ-বাহিনী প্রধান এ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ. জ. ম. নাসির হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ারসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ।

 

 

Related posts