শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১৩ জানুয়ারি ২০১৭
আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। রাজধানীর উপকণ্ঠে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুক্রবার ফজর নামাজের পর প্রথম পর্বের শুভ সূচনা হয়।
ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের এ বৃহৎ জমায়েত উপলক্ষে দেশ বিদেশের বিপুলসংখ্যক মুসুল্লি ইজতেমা ময়দানে জমায়েত হতে শুরু করেছেন। প্রচণ্ড শীতকে উপেক্ষা করে বয়ান শুনতে ছুটে আসছেন তারা।
রোববার আখেরি মোনাজাতের দিন পর্যন্ত আরও বিদেশি মেহমান আসছেন। প্রথম পর্বের তিন দিনব্যাপী ইজতেমায় অংশ নিতে ইতোমধ্যে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে দেশের নির্দিষ্ট ১৬টি জেলা থেকে আসছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তাদের নিয়ে মাঠে চলছে আলাদা আলাদা বয়ানও।
আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে। এরপর চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবে বাকি ১৫ জেলার তাবলিগ অনুসারীরা। ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।
আগত মুসুল্লিতের সুবিধার্থে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক চিহ্ন তৈরি করা হয়েছে। ৫২তম এ বিশ্ব ইজতেমায় তুরাগ তীরের প্রায় ১৬০ একর জমিতে স্বেচ্ছাশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে মুসুল্লিদের জন্য।
আগত লাখো মুসুল্লিদের সেবা দিতে মাঠের চার পাশে প্রস্তুত করা হয়েছে ২৮টি তিনতলা বিশিষ্ট টয়লেট। আশুলিয়ার রাস্তা থেকে সরাসরি মাঠে প্রবেশ করতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তুরাগ নদীতে নির্মাণ করা হয়েছে ৭টি অস্থায়ী সেতু।
এবার বাংলাদেশ ছাড়াও প্রায় ৩০টি দেশ থেকে আসা মুসল্লিরা এ ইজতেমায় অংশ নেবেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, তরুণরা যাতে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যায় আর বিপথে না যায় সে বিষয়ে ইজতেমায় বিশেষ বয়ান রাখা হবে।
সুষ্ঠুভাবে বিশ্ব ইজতেমার অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে বিপুল সংখ্যক র্যা ব, পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দেশি বিদেশি লাখো মুসল্লির নিরাপত্তায় ইজতেমা মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ হাজার সদস্য নিয়োজিত করার পাশাপাশি মাঠ পর্যবেক্ষণে থাকছে নয়টি ওয়াচ টাওয়ার। প্রতিটি মোড়ে বসানো হয়েছে চারমুখী সিসি ক্যামেরা।
সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বোম ডিস্পোজাল এবং ডগ স্কোয়াড ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ এবং র্যা বের একাধিক টিমকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তুরাগ নদীতে র্যা বের দুটি স্পিড বোট টহল দেবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হেলিকপ্টার ইজতেমা মাঠের আকাশে টহল দেবে।
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো গত বছর থেকে শুরু হয় দেশের ৬৪ জেলাকে চার ভাগ করে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন। ওই বছর মোট ৩২টি জেলা নিয়ে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয় ইজতেমা। এ বছর দুই পর্বে বাকি ৩২ জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন।
প্রথম পর্বে অংশ নেবে ঢাকার একাংশসহ ১৭টি জেলার মুসুল্লিরা। অবশিষ্ট ১৫ জেলার মুসুল্লিরা আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবে। তবে বিদেশি মুসল্লিরা প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারবে। স্থান সংকুলান ও নিরাপত্তার কথা ভেবে এ পরিবর্তন আনা হয়। বিশ্ব ইজতেমার শীর্ষ পর্যায়ের মুরুব্বিরা ইজতেমার এ তারিখ নির্ধারণ করেন।