ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চের ছাদে না উঠার আহ্বান নৌমন্ত্রীর

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৪  সেপ্টেম্বর   ২০১৬

নদীর স্রোতের সঙ্গে আসছে ভারতীয় গরু নাজমুল হোসেন, কুড়িগ্রাম প্রকাশিত: ০৫:২৫ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, রোববার | আপডেট: ০৫:৩৯ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, রোববার নদীর স্রোতের সঙ্গে আসছে ভারতীয় গরু কুড়িগ্রামে ঈদুল আজহাকে ঘিরে জমে উঠেছে গরুর বাজার। এ উপলক্ষে সীমান্ত পথ দিয়ে আসছে হাজার হাজার ভারতীয় গরু। এসব গরুর ৭০ ভাগই করিডোর ছাড়া চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। একশ্রেণির অসাধু গরু ব্যবসায়ী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। করিডোর ফাঁকি দিয়ে গরু পারাপারের বিষয়টি স্থানীয়রা লিখিতভাবে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি। এতে সরকার রাজস্ব হারালেও গরু ব্যবসায়ীদের অবস্থা চাঙ্গা। দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম। জেলার তিনদিকে ২৭৩ কিলোমিটার ভারতীয় সীমান্ত এলাকা। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভারতীয় সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে নদ-নদীবেষ্টিত এলাকাগুলো। জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলা দিয়ে সরাসরি ভারত থেকে প্রবাহিত হচ্ছে ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদী। এসব নদ-নদী দিয়ে প্রতিদিন স্রোতের মতো আসছে ভারতীয় গরু। Indian এই বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণে কুড়িগ্রাম-৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে বিওপি ক্যাম্প রয়েছে ২৪টি। অপরদিকে রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার জন্য জামালপুর-৩৫ ব্যাটালিয়নের অধীনে ১০টি ক্যাম্প রয়েছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ৭টি উপজেলার নদী ও সড়ক পথে ২০টির অধিক পয়েন্ট দিয়ে গরু আসছে প্রতিনিয়তই। এসব অবৈধ কাজে জীবনবাজি রেখে জড়িয়ে পড়ছে শত শত সীমান্তবাসী। অধিকাংশ গরু করিডোর ছাড়াই সড়ক, নৌপথে চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। অবৈধ পথে আসা এসব গবাদিপশুর প্রতিটি ৫০০ টাকার বিনিময়ে কাস্টমস বিভাগের মাধ্যমে করিডোর করে দেয়া হয় বৈধ্যতা। সরেজমিনে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় গরু এই জেলার একমাত্র প্রবেশ পথ ধরলা ব্রিজ দিয়ে না এনে ভিন্ন পথে আনা হচ্ছে। ধরলা ব্রিজ গেটে বিজিবি ও কাস্টমস অফিস গরুগুলো করিডোর করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু অসাধু গরু ব্যবসায়ীরা ধরলা ব্রিজ দিয়ে করিডোর না করে কুড়িগ্রামকে ঘিরে যে ধরলা নদী প্রবাহিত হচ্ছে তারই বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে করিডোর ফাঁকি দিয়ে এসব গরু নদীর মাধ্যমে পাড় করে করিডোর ফাঁকি দিচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক গরু ব্যবসায়ী জানান, আমাদের দুই দিকেই লোকসান গুণতে হচ্ছে। অনুমোদনহীন গরুগুলোর জন্য স্থানীয় দালাল থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের এমনকি বিভিন্ন প্রশাসনের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা টাকা তুলছেন। ফলে আশাতীত লাভবান হচ্ছেন না তারা। Indian ব্যবসায়ীরা বলেন, গরু আনা, রাখা এবং তদারকির জন্য গরুপ্রতি বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে। গরু পারাপারের কাজে নিয়োজিত রাখালরা জানান, শেষ বিকেল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ধরলা নদী সাঁতরে গরু পারাপার করতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে নেন তারা। এছাড়াও পরিবহনে ৮০ টাকা এবং স্থানীয় দালালদের ৭০ টাকা দিতে হয়। ফলে কোথাও কোনো সমস্যা হয় না। গরু তদারকির দায়িত্বে থাকা কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা গাছবাড়ী এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, মসজিদ ও রাস্তা সংস্কারের জন্য গরুপ্রতি ৭০ টাকা নেয়া হয়। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সামিউল হক নান্টু জানান, হাজার হাজার গরু সীমান্ত গলিয়ে আসলেও এর মূল্য পরিশোধ করা হয় হুন্ডির মাধ্যমে। গরু আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো চুক্তি না থাকায় অর্থ লেনদেন হয় অবৈধ পন্থায়। এছাড়াও ধরলা ব্রিজ দিয়ে করিডোর না করে ধরলা নদীর উপর দিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ পন্থায় গরু পারাপার করা হচ্ছে। এটি দেখেও না দেখার ভান করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো। প্রশাসনের এদিকে নজর দেয়া দরকার। এ বিষয়ে রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহরীয়ার আহমেদ চৌধুরী, এনডিসি, পিএসসি, কুড়িগ্রামে সাংবাদিক ও গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে এসে জানান, গ্রাউন্ডে যারা আমাদের সঙ্গে কাজ করছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখি। কোনো সমস্যা থাকলে আমরা বিষয়টি বিচার বিবেচনা করে দেখবো।

নদীর স্রোতের সঙ্গে আসছে ভারতীয় গরু
নাজমুল হোসেন, কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৫:২৫ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, রোববার | আপডেট: ০৫:৩৯ পিএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬, রোববার
নদীর স্রোতের সঙ্গে আসছে ভারতীয় গরু
কুড়িগ্রামে ঈদুল আজহাকে ঘিরে জমে উঠেছে গরুর বাজার। এ উপলক্ষে সীমান্ত পথ দিয়ে আসছে হাজার হাজার ভারতীয় গরু। এসব গরুর ৭০ ভাগই করিডোর ছাড়া চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। একশ্রেণির অসাধু গরু ব্যবসায়ী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। করিডোর ফাঁকি দিয়ে গরু পারাপারের বিষয়টি স্থানীয়রা লিখিতভাবে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি। এতে সরকার রাজস্ব হারালেও গরু ব্যবসায়ীদের অবস্থা চাঙ্গা।
দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম। জেলার তিনদিকে ২৭৩ কিলোমিটার ভারতীয় সীমান্ত এলাকা। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভারতীয় সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে নদ-নদীবেষ্টিত এলাকাগুলো।
জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলা দিয়ে সরাসরি ভারত থেকে প্রবাহিত হচ্ছে ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদী। এসব নদ-নদী দিয়ে প্রতিদিন স্রোতের মতো আসছে ভারতীয় গরু।
Indian
এই বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণে কুড়িগ্রাম-৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে বিওপি ক্যাম্প রয়েছে ২৪টি। অপরদিকে রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার জন্য জামালপুর-৩৫ ব্যাটালিয়নের অধীনে ১০টি ক্যাম্প রয়েছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ৭টি উপজেলার নদী ও সড়ক পথে ২০টির অধিক পয়েন্ট দিয়ে গরু আসছে প্রতিনিয়তই। এসব অবৈধ কাজে জীবনবাজি রেখে জড়িয়ে পড়ছে শত শত সীমান্তবাসী। অধিকাংশ গরু করিডোর ছাড়াই সড়ক, নৌপথে চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। অবৈধ পথে আসা এসব গবাদিপশুর প্রতিটি ৫০০ টাকার বিনিময়ে কাস্টমস বিভাগের মাধ্যমে করিডোর করে দেয়া হয় বৈধ্যতা।
সরেজমিনে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় গরু এই জেলার একমাত্র প্রবেশ পথ ধরলা ব্রিজ দিয়ে না এনে ভিন্ন পথে আনা হচ্ছে। ধরলা ব্রিজ গেটে বিজিবি ও কাস্টমস অফিস গরুগুলো করিডোর করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু অসাধু গরু ব্যবসায়ীরা ধরলা ব্রিজ দিয়ে করিডোর না করে কুড়িগ্রামকে ঘিরে যে ধরলা নদী প্রবাহিত হচ্ছে তারই বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে করিডোর ফাঁকি দিয়ে এসব গরু নদীর মাধ্যমে পাড় করে করিডোর ফাঁকি দিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক গরু ব্যবসায়ী জানান, আমাদের দুই দিকেই লোকসান গুণতে হচ্ছে। অনুমোদনহীন গরুগুলোর জন্য স্থানীয় দালাল থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের এমনকি বিভিন্ন প্রশাসনের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা টাকা তুলছেন। ফলে আশাতীত লাভবান হচ্ছেন না তারা।
Indian
ব্যবসায়ীরা বলেন, গরু আনা, রাখা এবং তদারকির জন্য গরুপ্রতি বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে।
গরু পারাপারের কাজে নিয়োজিত রাখালরা জানান, শেষ বিকেল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত ধরলা নদী সাঁতরে গরু পারাপার করতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে নেন তারা। এছাড়াও পরিবহনে ৮০ টাকা এবং স্থানীয় দালালদের ৭০ টাকা দিতে হয়। ফলে কোথাও কোনো সমস্যা হয় না।
গরু তদারকির দায়িত্বে থাকা কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা গাছবাড়ী এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, মসজিদ ও রাস্তা সংস্কারের জন্য গরুপ্রতি ৭০ টাকা নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সামিউল হক নান্টু জানান, হাজার হাজার গরু সীমান্ত গলিয়ে আসলেও এর মূল্য পরিশোধ করা হয় হুন্ডির মাধ্যমে। গরু আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো চুক্তি না থাকায় অর্থ লেনদেন হয় অবৈধ পন্থায়। এছাড়াও ধরলা ব্রিজ দিয়ে করিডোর না করে ধরলা নদীর উপর দিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ পন্থায় গরু পারাপার করা হচ্ছে। এটি দেখেও না দেখার ভান করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো। প্রশাসনের এদিকে নজর দেয়া দরকার।
এ বিষয়ে রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহরীয়ার আহমেদ চৌধুরী, এনডিসি, পিএসসি, কুড়িগ্রামে সাংবাদিক ও গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে এসে জানান, গ্রাউন্ডে যারা আমাদের সঙ্গে কাজ করছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখি। কোনো সমস্যা থাকলে আমরা বিষয়টি বিচার বিবেচনা করে দেখবো।

ঈদে নৌপথে ঘরমুখো যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চের ছাদে না উঠার আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

রোববার সকাল ১০টার দিকে বরিশাল নদী বন্দর পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন নৌমন্ত্রী।

এ সময় তিনি বলেন, লঞ্চে যথেষ্ট বয়া রাখার কথা নৌযান মালিকদের বলা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে ইতোমধ্যে নৌমন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নৌমন্ত্রী আরো বলেন, বরিশাল নদী বন্দর উন্নয়নে সরকার বৃহৎ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে।

এর আগে মন্ত্রী বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল কার্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভোলা নাথ দে ও বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Related posts