শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২৯ আগস্ট ২০১৬
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)জঙ্গিবিরুধী অভিযান নিয়ে খালেদার বক্তব্যের নিন্দা প্রকাশ করে বলেছন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
রোববার সন্ধ্যায় ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে গুলশান ও কল্যাণপুরের ঘটনার পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরা হয়।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, গুলশান কল্যাণপুর ও নারায়ণগঞ্জে তিনটি অভিযানই দিনের আলোতে হয়েছে। এসব অভিযানের কার্যক্রম স্থানীয় জনগণ সরাসরি দেখেছে। অভিযানের পর মানুষ পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছে। জনগণের জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেখানে আত্মোৎসর্গ করেছে, সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের এ ধরনের বক্তব্য শুধু পুলিশকেই নয় বরং সমগ্র জাতিকে হতাশ করেছে। আমরা মনে করি, বিএনপি চেয়ারপারসনের এ ধরনের বক্তব্য কুরুচিপূর্ণ, দূরভিসন্ধিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাই তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।
নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ডিএমপি থেকে বলা হয়, গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে নিহত জঙ্গিদের হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা আত্মোৎসর্গ করেছেন এবং ২০ জন দেশি-বিদেশি মানুষ নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন। পরে যৌথ বাহিনীর সফল অভিযানে সব জঙ্গি নিহত হয় ও ৩২ জন দেশি-বিদেশি জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র-গুলি, গ্রেনেড, ছোরা ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত আলামত বিশ্লেষণ করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে গুলশান হামলার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন বাসস্থানের অবস্থান, অর্থদাতা, অস্ত্রদাতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। উক্ত বাসস্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন পোশাক ও গ্রেনেড সংরক্ষণে ব্যবহৃত বালুভর্তি বস্তাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ এসব ঘটনার মাস্টারমাইন্ডদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জে সোয়াটের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে নিহত হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এদিকে কল্যাণপুরে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলিবিনিময়ে ৯ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনায় কল্যাণপুরে তাদের আস্তানা থেকে অস্ত্র-গুলি, গ্রেনেড, ছোরা ইত্যাদি অস্ত্র ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত আলামত ইলেকট্রনিক ডিভাইসে আত্মস্বীকৃত জঙ্গিদের বিভিন্ন ধরনের অডিও, ভিডিও ও স্থিরচিত্র পাওয়া গেছে। যা ওই ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে জড়িত থাকার পক্ষে প্রমাণ। এ অভিযানে জীবিত আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন আছে।
‘যেকোনো ঘটনায় পুলিশের উদ্দেশ্য থাকে- সকল আসামিকেই জীবিত গ্রেপ্তার করা। কিন্তু যখন কোন অভিযানে পুলিশের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয় বা সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি অথবা বোমা ছোড়ে তখন অবশ্যই পুলিশ আইনগতভাবে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে বাধ্য হয়। পুলিশ জানমাল রক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের প্রতি গুলি ছুড়েছে, যাতে নয় সন্ত্রাসী নিহত ও একজনকে জীবিত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদি ঘটনা সাজানো হতো তাহলে রিগ্যানকে জীবিত রাখা হতো না।