জঙ্গিদের ল্যাপটপে পাওয়া গেছে জান্নাতে যাওয়ার যে ছক

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ০৮  আগস্ট ২০১৬

জঙ্গিদের ল্যাপটপে পাওয়া গেছে জান্নাতে যাওয়ার যে ছক

জঙ্গিদের ল্যাপটপে পাওয়া গেছে জান্নাতে যাওয়ার যে ছক

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা, শোলাকিয়া এবং কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর থেকেই আলোচনায় আসে কী করে শিক্ষিত তরুণরা জঙ্গি হয়ে উঠছে। কল্যাণপুরে অপারেশন স্টর্ম-২৬ পরিচালনার পর গোয়েন্দা সংস্থা জব্দ করে জঙ্গিদের বেশ কয়েকটি ডিজিটাল ডিভাইস। সেখান থেকে পাওয়া যায় একটি ছবি।

ছবিটিতে ফ্লো-চার্টের মাধ্যমে ভুল ব্যাখ্যায় সাজানো হয়েছে জান্নাতে যাওয়ার ছক। দেখা যায় ছয়টি পদ্ধতিতে একজন মানব সন্তানের জান্নাত কিংবা জাহান্নাম নির্ধারণ হয়। জঙ্গিদের তৈরি ছকে উল্লেখ করা আছে, যদি ‘শহীদ’ হয় তবে সরাসরি জান্নাত।

হাতে লেখা জিহাদের কথা

পুরো ছবিটি ব্যাখ্যা করলে দেখা যায়, প্রথমেই রুহ জগত থেকে মানব সন্তান আসবে মায়ের গর্ভে। সেখান থেকে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই লাভ করবে মানবজীবন। জঙ্গিদের আঁকা ছকে দেখা যায়, মৃত্যুর পাশেই রেডমার্ক করা আছে ‘শহীদ’, যা সরাসরি সংযুক্ত জান্নাতের সঙ্গে।

এছাড়াও দেখা যায়, জাহান্নামে দুই ধরনের মানুষের অবস্থান হবে। এদের মধ্যে কেউ হবে স্থায়ী এবং কেউ হবে অস্থায়ী। কাফির, মুশরিক, মুনাফিক, মুরতাদ কোনোদিন পাবে না জান্নাতের স্বাদ। তবে জাহান্নামী মুসলিমরা একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ঠিকই পৌঁছে যাবেন জান্নাতে। এছাড়া সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবেন মুসলিমরা।

ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের লিফলেট

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, কতিপয় দুষ্কৃতকারী হীনস্বার্থ চরিতার্থের উদ্দেশ্যে কুরআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে ইসলামের নামে বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। মানুষের চোখে ইসলামকে একটা বর্বর নিষ্ঠুর ও সন্ত্রাসী ধর্মরূপে চিত্রিত করছে।

তিনি মনে করেন, এতে সরলমনা কেউ কেউ বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছে।কিন্তু এটা পরিস্কার, মানুষ হত্যা করে জান্নাত নয়, জাহান্নামের পথ তৈরি হবে। মানুষকে দ্বীনের পথে, শান্তির পথে আহ্বান জানিয়েই জান্নাতের স্বপ্ন দেখা যায়; নিরীহ মানুষকে অতর্কিতভাবে হত্যা করে নয়।

আবু আকীবের বই

উল্লেখ্য, জুলাইয়ের প্রথমদিনই হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ২২ জন সাধারণ মানুষ; যাদের মধ্যে ১৭ জন ছিলেন বিদেশি নাগরিক। এরপর শোলাকিয়াতেও হামলার চেষ্টায় নিহত হন দুজন। এসব ঘটনার পর থেকেই জঙ্গিবিরোধী তৎপরতা চালাতে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী; যার ফলে কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অপারেশন স্টর্ম-২৬ পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানে নিহত হয় নয় জঙ্গি; যাদের অধিকাংশই উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান।

 

 

Related posts