শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৮ জানুয়ারি ২০১৭
গণমানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তাঁর সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বলেছেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষক-শ্রমিকসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নই আমাদের মূল লক্ষ্য এবং এই লক্ষ্য অর্জনেই আমরা নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে সুইডিশ সংসদ সদস্য জেন্স হোমের নেতৃত্বে সুইডিস বামপন্থী দলের তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাতে এলে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
দরিদ্র ও বিপন্ন জনগোষ্ঠীর কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের কর্মসূচির আওতায় দরিদ্রদের জন্য বিভিন্ন প্রকার ভাতার ব্যাবস্থা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত আট বছরে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে দারিদ্র্যের হার ৪৭ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অতি দারিদ্র্যের হার ২৪ শতাংশ থেকে নেমে ১২ শতাংশ হয়েছে।
নারী উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের সময়ে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
দেশের নারীরা এখন সমাজের সর্বস্তরে অধিষ্ঠিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, শিক্ষা খাত, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমনকি সশস্ত্র বাহিনীতেও নারী সদস্যরা সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।
দেশের সর্বক্ষেত্রেই নারীরা সফল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা, ক্রীড়া এবং সৃজনশীল কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা পুরুষেরও সমকক্ষ।
নারীর ক্ষমতায়নের প্রশ্নে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচনে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকারের সর্বনি¤œ ধাপ ইউনিয়ন পরিষদের ১২ হাজার পদের জন্য ৪৫ হাজার নারী নির্বাচনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকদের প্রায় ৬০ শতাংশই নারী শিক্ষক।
দেশের অর্থনৈতিক খাতকে তাঁর সরকারের নেতৃত্বে এগিয়ে নেয়ার তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত অর্থবছরে আমাদের জিডিপি ছিলো ৭ দশমিক ১ শতাংশ। একই সঙ্গে আমরা মুদ্রাস্ফীতিও উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি’।
’৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তর-পরবর্তী দীর্ঘ সময় দেশে সেনা শাসন বলবৎ থাকায় আমরা দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হই এবং দেশকে পুনরায় গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে আমাদের বহু সংগ্রাম করতে হয়েছে।’
সুইডিশ প্রতিনিধিদলটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে নবায়োনযোগ্য জ্বালানি এবং বায়োগ্যাস প্লান্টে সহযোগিতা জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে জানায়- ‘আমরা এই খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি।’
প্রতিনিধিদলটি প্রধানমন্ত্রীকে আরো জানায়, তাঁরা জলবায়ু পরিবর্তন, শহর উন্নয়ন এবং লিঙ্গ সমতার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের সঙ্গে পর্যালোচনা করেছেন।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, জাতির পিতার বিভিন্ন স্মারক দেখে তারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী উপস্থিত ছিলেন।