আলাউদ্দিন মার্কেটে আগুন মারা গেলেন ভবনের প্রকৌশলী মাহমুদুল

 

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২৫  জুন ২০১৬

আলাউদ্দিন মার্কেটে আগুন মারা গেলেন ভবনের প্রকৌশলী মাহমুদুল

আলাউদ্দিন মার্কেটে আগুন
মারা গেলেন ভবনের প্রকৌশলী মাহমুদুল

মারা গেলেন ভবনের প্রকৌশলী মাহমুদুলঢামেকে স্বজনদের আহাজারী। রাজধানীর উত্তরার ট্রপিক্যাল আলাউদ্দিন টাওয়ার নামে একটি বহুতল শপিং কমপ্লেক্সে লিফট ছিঁড়ে বিস্ফোরণ ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর আহত প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান মারা গেছেন।

শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যার এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ জনে। এছাড়া আগুনে পুড়ে এবং হুড়োহুড়ি করে বের হতে গিয়ে কমপক্ষে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার মারা যান- মিজানুর রহমান (৫০), কামরুন্নাহার লতা (১৯), সালমা আক্তার (৩৩), রেজাউল করিম রানা (৩০), জসিম (২৪) ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তি।

এদের মধ্যে মিজানুর ট্রপিক্যাল আলাউদ্দিন টাওয়ার শপিং কমপ্লেক্সের সিকিউরিটি ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লতা এই কমপ্লেক্সের বিক্রয়কর্মী। তিনি মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের প্রয়াত দিল মোহাম্মাদের মেয়ে।

সালমা শেরপুরের আনিসুর রহমানের স্ত্রী। রানা ফরিদপুরের নগরকান্দার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। জসিমের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। সাতজনের মরদেহই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল রাতেই আশংকাজনক অবস্থায় প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান, তার মেয়ে মেহনাজ হাসান মাইসা ও ছেলে মুস্তাকিম হাসানকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল।

এদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান মারা গেলেন। তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন। এছাড়া মাহমুদুল হাসানের ছেলে মুস্তাকিম হাসানের শরীরের ২৩ শতাংশ পুড়ে গেছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান ওই ভবনেরই প্রকৌশলী। নিচেই তার অফিস। সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে যান। সেখানেই তারা দুর্ঘটনায় পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তরার রাজলক্ষ্মী মার্কেট সংলগ্ন তিন নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর সড়কে মার্কেটটির অবস্থান। ১৫ তলা ভবনের ৬ তলা পর্যন্ত মার্কেট। ওপরের ৯টি ফ্লোরে আবাসিক ভবন। ইফতারের আগমুহূর্তে মার্কেটের লিফটে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত লোক ওঠে। এতে লিফটি ছিঁড়ে বিকট শব্দে আগুন ধরে যায়। লিফটের কাচ ও অন্যান্য সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে এতে লোকজন আহত হয়। গুরুতর আহত ও নিহতরা সবাই লিফটের ভেতরে ছিলেন।

আগুনে মার্কেটের ভেতরে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বাইরে কিছু দোকানের কাচ ভেঙে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজে অংশ নেন।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, ভবনে মার্কেট ছাড়াও কয়েকটি অফিস ও আবাসিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের ১৫ ইউনিট আগুন নেভানো ও উদ্ধারকাজ করে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মোজাম্মেল হককে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি-অপারেশন্স) মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ।

শুক্রবার পাঠানো এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার ইফতারের পরপরই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট এক ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় প্রথমে ৪ জন মারা গেলেও পরে আরও দু’জন বেড়ে মোট ৬ জন মারা যায়।

 

 

Related posts