শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ২৫ জুলাই ২০১৬
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) এ.এস.এম হাফিজুর রহমান বলেন, সোমবার বিকেলে ডিএমপি সদর দফতরে কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া প্রত্যেকটি থানায় জিডি বুক উদ্বোধন করেছেন ও তা সরবাহ করেছেন। আজ থেকেই জিডি করার এ নতুন প্রক্রিয়া চালু হলো।
হুমকি, নিখোঁজ কিংবা হারানো বস্তুর উদ্ধারসহ বিভিন্ন কারণে পুলিশি সহযোগিতার আশায় নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। কিন্তু থানায় গিয়ে কিভাবে জিডি করতে হয়, তা অনেকেরই অজানা। ঢাকা মহানগর পুলিশ এই জিডি লেখার ক্ষেত্রে যুগোপযুগী পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। প্রত্যেকটি থানায় জিডি বুক সরবরাহ করতে যাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের কাছ থেকে আইনি সহযোগিতা পেতে জিডি করতে আসা ভুক্তভোগীরাই অনেক সময় ভোগান্তিতে পড়েন। কলম নেই, সাদা খাতা নেই। অনেক সময় ডুপ্লিকেট কপির জন্য ফটোকপিও করতে হয়।
অনেক সময় কোনো কোনো থানা পুলিশের বিরুদ্ধে জিডি বাবদ সকল প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য ৫০/১০০ টাকা নেয়ারও অভিযোগ উঠে। এখন আর এসবের কিছুই করতে হবে না। জিডি বুকে সবই থাকবে। ভুক্তভোগীরা জিডি বুকে নিজেদের সমস্যার কথা উল্লেখ করে স্বাক্ষর করে জমা দেবেন। জিডি বুকের মাধ্যমে কার্বন কপিও পেয়ে যাবেন সহজেই। ফটোকপির ঝামেলাও আর থাকছে না।
ঢাকা মহানগর পুলিশ মনে করছে, এতে করে ভোগান্তি যেমন কমবে তেমনি ভুক্তভোগীরা খুব কম সময়ে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে পুলিশি সহযোগিতা পেতে পারেন।
যেসব কারণে জিডি করা যাবে
বিভিন্ন কারণে জিডি করা হয়। যেমন কেউ ভয় দেখালে বা হুমকি দিলে, নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে থানায় জিডি করতে পারেন। শুধু তাই নয়, কোনো ব্যক্তি বা তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা থাকলে জিডি করা যায়। এসবের বাইরেও কোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, যেমন পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, চেকবই, লাইসেন্স, শিক্ষাসংক্রান্ত সনদ, দলিল ইত্যাদি হারিয়ে গেলে জিডি করা যায়। এ ছাড়া কেউ কারো সম্পদের ক্ষতি করলে বা প্রাণনাশের হুমকি দিলে, দলিল হারিয়ে গেলে, বাসার কেউ নিখোঁজ হলে বা পালিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে জিডি করার দরকার হয়। জিডি করা জরুরি।
কারো পক্ষ থেকে হামলা আশঙ্কা বা ক্ষতি করতে পারে, তাহলেও জিডি করা হবে। এক্ষেত্রে দোষী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সহজ হয়। আইনি সহায়তার জন্য জিডি খুবই কার্যকর একটি পদক্ষেপও বটে।
তিনি বলেন, জিডি করার ক্ষেত্রে সাধারণত ঘটনাস্থলকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। ঘটনার এলাকা বা ঘটার আশঙ্কা এলাকার থানাতেই জিডি করা উচিত। অন্য থানায় জিডি করলে আইনি সহায়তা নিতে ঝামেলা হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, থানায় জিডি হয় দরখাস্ত আকারে। দরখাস্ত সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বরাবর ও নিচে থাকে ভুক্তভোগীর নাম। থানার নাম। বিষয় হিসেবে উল্লেখ করতে হবে যে ব্যাপারে জিডি করতে চান তার নাম। এর সবই থাকবে। থাকবে না শুধু দরখাস্ত পদ্ধতি। নির্ধারিত জিডি বুকেই এখন জিডি করা যাবে। এক্ষেত্রে ভোগান্তি কমবে ও অল্প সময়েই সম্পাদন হবে জিডি।
জিডির সকল প্রক্রিয়া শেষ হলে জিডি নম্বর, তারিখ এবং অফিসারের স্বাক্ষর ও সিল সংযুক্ত জিডি কপিটি নথিভুক্ত করা হবে। এর একটি কপি ভুক্তভোগী সংরক্ষণ পাবেন।