শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৮ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রেশার নার্ভের খেলা, যে দল তা ধরে রেখে আমাদের সবাই ম্যাচ উইনার সাকিব সাকিবের মত খেলেনি। যে সাকিবকে আমি চিনি সবাই জানে সেই সাকিবের দেখা মেলেনি। রাজশাহী খুব ভালো দল। ছন্দে আছে। কার শক্তি কোথায়?
ফাইনালে এগিয়ে কোন দল, ঢাকা ডায়নামাইটস নাকি রাজশাহী কিংস?
চারিদিকে গুঞ্জন। জল্পনা-কল্পনা। আগামীকাল সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় খেলা শুরুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত চলতে থাকবে এ আলোচনা-পর্যালোচনা। ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। ভক্ত-সমর্থকরা নিজ দলকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। ঢাকার সমর্থকদের চোখে ফেবারিট সাকিব আল হাসানের দল। আর রাজশাহী ভক্তরা মনে করেন ড্যারেন স্যামি বাহিনীই এগিয়ে।
এতো গেল ভক্তদের চোখে। দু`দলের শক্তি-সামর্থ্য ও সম্ভাবনার কথা জানতে চান? আসুন, ঢাকা কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন আর রাজশাহী প্রশিক্ষক সারোয়ার ইমরান নিজ দল ও প্রতিপক্ষ নিয়ে কি ভাবছেন? তা শুনি। দু`জনই নিজ নিজ দলকে এগিয়ে রাখতে চেয়েছেন।
ঢাকা ডায়নামাইটস কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করেন, ঢাকা অবশ্যই এগিয়ে। তার ব্যাখ্যা, ‘আমার দল কাগজে-কলমে অবশ্যই এগিয়ে। দেশি-বিদেশি এক ঝাঁক তারকা আছেন। সাঙ্গাকারা, ডোয়াইন ব্রাভো ও আন্দ্রে রাসেলদের সাথে সাকিব আল হাসানের মতো তারকায় ঠাসা। দেশেরও বেশ কিছু মেধাবী ও কার্যকর ক্রিকেটারের সমন্বয়ে একটা সত্যিকার ব্যালেন্সড দল। আমার মনে হয় সর্বাধিক ম্যাচ উইনারও আছে আমাদের। আমাদের প্রায় সবারই ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য আছে।`
ওদিকে রাজশাহী কোচ সারোয়ার ইমরানও নিজ দল নিয়ে আশাবাদী। এ অভিজ্ঞ দ্রোণাচার্য্যর মতো, ‘কাগজে-কলমে হয়তো অনেকেই এগিয়ে ঢাকাকে এগিয়ে রাখবেন। আমিও সেটা অস্বীকার করবো না। ঢাকা শক্তিশালী দল।
তবে মাঠের হিসাব ভিন্ন। আমার দলে সে অর্থে বড় তারকা কম। কিন্তু দল আছে দারুণ ছন্দে। টিম স্পিরিটও তুঙ্গে।
পুরো দল এক সাথে যেন এক সুঁতোয় গাথা। ড্যারেন স্যামির গতিশীল নেতৃত্ব একটা প্লাস পয়েন্ট। সবাই দলের জন্য খেলছে। ক্রিকেট ১১ জনের খেলা। সবাই যখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের জন্য খেলে তখন, অবশ্যই টিম পারফরম্যান্স হয়।
আমাদেরও তা-ই হচ্ছে। তাই আমি রাজশাহীকেই এগিয়ে রাখতে চাই।’
তবে ঢাকা খালেদ মাহমুদ সুজন একটা তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেছেন। তার শেষ কথা, ‘ফাইনাল মানেই বাড়তি উত্তেজনা। অন্যরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুব স্বাভাবিকভাইে বাড়তি চাপ। যে দল সেই মানসিক ও স্নায়ু চাপ সামলে নিজেদের সেরাটা উপহার দিতে পারবে, তাদের সম্ভাবনাই বেশি থাকবে।’
দু’দলের কোচ যাই বলুন না কেন, বাস্তবতা হলো, কাগজে-কলমে ঢাকাই এগিয়ে। তারকায় ঠাসা। মাহেলা জয়াবর্ধনের মতো বড় মাপের ক্রিকেটার, শ্রীলঙ্কা তথা বিশ্ব ক্রিকেটের উজ্জ্বল তারকা ড্রেসিং রুমে বসা। কুমারা সাঙ্গাকারা, ডোয়াইন ব্রাভো, আন্দ্রে রাসেল, এভিন লুইস, রবি বোপারা, সেকুগে প্রসন্ন; কত নাম! সঙ্গে সাকিব আল হাসান- সন্দেহাতীতভাবেই যিনি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দেশের তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা পারফরমার। বড় তারকা। যাদের নাম বলা হলো, তারা সবাই ম্যাচ ভাগ্য গড়ে দিতে পারেন।
এছাড়া নাসির হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন ও মেহেদী মারুফও কম যান না। তাদের সামর্থ্যও কম নয়। কাগজে-কলমে সবার চেয়ে সমৃদ্ধ। সবচেয়ে শক্তিশালী। অন্যদিকে রাজশাহী সে তুলনায় কমজোরি। ঐ মানের তারকা নেই একজনও।
ড্যারেন স্যামিই শীর্ষ তারকা। দলটির অন্যতম চালিকাশক্তিও এ ক্যারিবীয়ান। ড্যাশিং সাব্বির রহমান রুম্মনও রাজশাহীর বড় সম্পদ। সাথে ইংলিশ অলরাউন্ডার সামিত প্যাটেল। মূলত এ তিনজন কেন্দ্রিক দল রাজশাহী।
সে কারণেই কাগজে-কলমে এবং সব হিসাব-নিকাশেই এগিয়ে ঢাকা ডায়নামাইটস। তারপরও খেলাটা ক্রিকেট। এবং টি-টোয়েন্টি। যার পরতে পরতে অনিশ্চয়তা। ওঠা নামার পালা। এখানে অনেক সময়ই মাঠের বাইরের হিসাব-নিকাশের সাথে মাঠের চালচিত্র মেলে না। তা যে মেলে না, তার প্রমাণ জানতে চান? তাহলে জেনে নিন বলেই এ আসরেই এখন পর্যন্ত যে দুইবার দেখা হয়েছে ঢাকা ও রাজশাহীর। দু’বারই অনেক তারকার দল ঢাকা হেরেছে শক্তি ও সামর্থ্যে পিছিয়ে থাকা রাজশাহীর কাছে।