মেকআপের সহজ কৌশল

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ৩০  মে  ২০১৬

মেকআপের সহজ কৌশল

মেকআপের সহজ কৌশল

নিজে মেইকাপ নেওয়ার মধ্যে একটা আনন্দ আছে। বিশেষ করে কম বয়সে সেটা তো ভীষণ মজার। তবে নিজে মেইকআপ করতে গিয়ে অনেক ভুল হয়। আর সেই ভুল বড়বেলাতেও থেকে যায়।

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে জানানো হয়, মেইকআপের ক্ষেত্রে ছোটখাটো ভুলের কারণে সাজের বিষয়টা ঠিকভাবে ফুটে ওঠে না।

ভুলগুলো কী? আর কীভাবে সেগুলো শোধরাবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

আই ভ্রু যুগল যমজ বোন নয়: মেইকআপের একটা ধাপে আই ভ্রু এঁকে নেওয়ার সময় অনেকেই বিপাকে পড়েন। কারণ দুটি আই ভ্রুকে অনেক কসরতের পরও একই রকম করে আঁকতে ঘাম ঝরানোর জোগাড় হয়। এক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো যে ভ্রু দুটি যমজ বোন নয়, তারা দেখতে অনেকটা এক রকম, পুরোপুরি না। তাই যতটা সম্ভব সামঞ্জস্য থাকলেই চলবে।

প্রয়োজনের অতিরিক্ত কনসিলার ব্যবহার: ত্বকের রংয়ে সামঞ্জস্য আনতে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা হয়। এরপরও ত্বকের যে অবাঞ্ছিত দাগ ও ছোপগুলো দেখা যায় সেগুলো ঢেকে ফেলতে কনসিলার ব্যবহার করা হয়। এ জন্য সঠিক রংয়ের কনসিলার বেছে নিয়ে খুব অল্প পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে। অনেকেই ত্বকের রংয়ের থেকে অতিরিক্ত হালকা বা ভুল টোনের কনসিলার বেছে নেন। ফলে দেখতে খারাপ দেখায়।

ত্বকের দাগ-ছোপ ঢাকতে ফাউন্ডেশনের রংয়ের কনসিলার বেছে নিয়ে শুধু দাগের উপর দিয়ে আঙুল দিয়ে চেপে ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর ভেজা বিউটি স্পঞ্জ দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। তবে ত্বকের কোনো অংশ হাইলাইট করার ক্ষেত্রে ত্বকের রংয়ের তুলনায় এক থেকে দুই শেইড হালকা কনসিলার বেছে নিতে হবে।

মাস্কারা পাম্প করা: অতিরিক্ত মাস্কারা পাওয়ার জন্য বারবার মাস্কারার তুলি পাম্প করলে বোতলের ভিতরে বাড়তি বাতাস ঢুকে যায়। এতে দ্রুত মাস্কারা শুকিয়ে যায়। তাছাড়া অনেকে বেশি ঘনত্ব পাওয়ার জন্য অনেকে এক কোটের বেশি মাস্কারা ব্যবহার করে থাকেন।

প্রথমবার মাস্কারা দেওয়ার পর দ্বিতীয়বার মাস্কারা দিলে চোখের পাপড়ি একটা আরেকটার সঙ্গে আটকে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত মাস্কারা ব্যবহারের অভ্যাসও ত্যাগ করতে হবে। একাধিক কোট মাস্কারা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম কোট মাস্কারা শুকানোর পরই দ্বিতীয় কোট মাস্কারা দিতে হয়। তাছাড়া মাস্কারা ব্যবহারের আগে পাপড়ি ‘কার্ল’ করে নিতে হবে।

আইলাইনার ব্যবহারের ভুল: আইলাইনার এবং কাজল দুই ধরনের হয়, পেন্সিল এবং লিকুইড। পেন্সিল কাজল ব্যবহার করা হয় চোখের নিচের ‘ওয়াটার লাইনে’ এবং ‘স্মোকি লুক’ তৈরি করতে। তাই কেউ যদি পেন্সিল লাইনার দিয়ে চোখের উপর রেখা টানতে চান সেক্ষেত্রে কাজল ছড়িয়ে যেতে পারে।

তাছাড়া দীর্ঘদিন একই কাজল ব্যবহারও ভালো নয়। কারণ পেন্সিল কাজল শুকিয়ে যেতে পারে যা চোখের জন্য ক্ষতিকর।

অন্যদিকে লিকুইড লাইনার ব্যবহার করতে হয় চোখের উপর রেখা আঁকতে। তবে অনেকে নিখুঁত রেখা পেতে চোখের পাশের চামড়া টেনে ধরে থাকেন। এতে চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাছাড়া কখনও আইশ্যাডো দেওয়ার আগে লাইনার ব্যবহার করা উচিত নয়। তাই চোখের মেইকআপের শেষে লাইনারের রেখা টানতে হবে।

সরাসরি ফাউন্ডেশন ব্যবহার: মেইকআপের শুরুই ফাউন্ডেশন দিয়ে— এ ধরনের ধারনা ত্যাগ করতে হবে। কারণ সুন্দরভাবে ফাউন্ডেশন মুখে মিশে যাওয়ার জন্য অবশ্যই আগে ত্বক প্রস্তুত করে নিতে হবে। এ জন্য এক্সফলিয়েট করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। প্রাইমারও ব্যবহার করতে হবে যেন মেইকআপ দীর্ঘস্থায়ী হয়। সব শেষে ফাউন্ডেশন।

তাছাড়া অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন ব্যবহার বা ভুল শেইড বাছাই ইত্যাদি কারণেও মেইকআপ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ব্লাশ ও ব্রোঞ্জারের ব্যবহারে ভুল: ব্লাশ এবং ব্রোঞ্জার মুখের ঠিক কোন অংশে লাগাতে হয় সে সম্পর্কে অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না। ফলে মেইকআপ বেমানান দেখায়।

ব্লাশ ব্যবহার করতে হয় হাসলে গালের যে অংশটি ফুলে ওঠে সেখানে। প্রচলিত ভাষায় বলা হয় গালের ‘অ্যাপল’য়ের উপর খুব আলতোভাবে অল্প পরিমাণে। আর কখনও বেশি উজ্জ্বল বা গাঢ় রং ব্লাশন হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।

ব্লাশন ভালোভাবে ব্লেন্ড করে ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হয়।

অন্যদিকে ব্রোঞ্জার ব্যবহার করতে হয় কান থেকে গালের দিকে হাড়ের নিচের অংশে। ‘কন্টুয়ার’ করতে যেমন ম্যাট শেইডগুলো ব্যবহার করা হয় তেমনি ব্রোঞ্জারের জন্য হালকা শিমারযুক্ত শেইড ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্বাভাবিক গায়ের রংয়ের থেকে কয়েক শেইড গাঢ় ব্রোঞ্জার বেছে নিতে হবে এবং ব্যবহার করতে হবে খুব অল্প পরিমাণে।

চোখে বয়সের ছাপ: গাঢ় রংয়ের শ্যাডো ব্যবহারের ফলে চোখ দেখতে বয়স্ক মনে হয়। তাই পুরো চোখে কখনও গাঢ় কালো শ্যাডো ব্যবহার করা ঠিক না।

আর গাঢ় রংগুলো সবসময় বাইরের দিকের কোনায় ব্যবহার করতে হয়। যাতে ‘স্মোকি ইফেক্ট’ তৈরি হয়। আর চোখের ভেতরের কোনায় অবশ্যই উজ্জ্বল রংয়ের শ্যাডো ব্যবহার করতে হবে। এতে চোখ উজ্জ্বল ও তারুণ্যদীপ্ত লাগবে।

ত্বকের বয়স বাড়িয়ে ফেলা: বাড়তি গ্লিটারযুক্ত মেইকআপ ব্যবহারের ফলে ত্বকের যে কোনো রেখা বেশি ফুটে ওঠে। অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন ও কনসিলার ব্যবহারের ফলেও ত্বকে রেখা তৈরি হতে পারে। অর্থাৎ ত্বকের উপর পুরু ফাউন্ডেশনের পরত দেওয়া হলে হাসলে বা কথা বলার কারণে মেইকআপের কিছু সময় পর মেইকআপ ফেটে যেতে পারে। আর এতে দেখতে মনে হবে ত্বক বুড়িয়ে গেছে।

তাই সবসময় অল্প পরিমাণে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে হবে। প্রতিদিনের মেইকআপে ‘বিবি ক্রিম’ বেছে নিতে হবে। আর হাইলাইটার ব্যবহার করতে হবে শুধু গালের উঁচু অংশে, নাকের উপরে এবং ঠোঁটের উপরের ভাঁজে।

 

Related posts