পাতালরেল রাজধানীর চার রুটে

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ৭  নভেম্বর  ২০১৬

পাতালরেল রাজধানীর চার রুটে

পাতালরেল রাজধানীর চার রুটে

ঢাকা শহরে পাতাল রেলপথ (সাবওয়ে) নির্মাণের জন্য চারটি রুট চিহ্নিত করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।  এ লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি বা সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।

প্রথম রুটের মোট দৈর্ঘ্য ৩২ কিলোমিটার। এটি টঙ্গী-কাকলী-মহাখালী–মগবাজার-পল্টন-শাপলা চত্বর-সায়েদাবাদ হয়ে নারায়ণগঞ্জের বোর্ড পর্যন্ত যাবে। দ্বিতীয় রুটের মোট দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার। এটি আমিনবাজার-গাবতলী-আসাদগেট-নিউমার্কেট-টিএসসি-ইত্তেফাক মোড় হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।

তৃতীয় রুটটি গাবতলী-মিরপুর ১-মিরপুর ১০, কাকলী-গুলশান ২-নতুন বাজার-রামপুরা টিভি স্টেশন-খিলক্ষেত-শাপলা চত্বর-জগন্নাথ হল হয়ে কেরাণীগঞ্জ পর্যন্ত যাবে। চতুর্থ রুটটি রামপুরা টিভি স্টেশন-নিকেতন-তেজগাঁও-সোনারগাঁও-পান্থপথ-ধানমণ্ডি ২৭-রায়েরবাজার-জিগাতলা-আজিমপুর-লালবাগ হয়ে সদরঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। তবে তৃতীয় এবং চতুর্থ রুটের দৈর্ঘ্য এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২৪১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা শহরে সাবওয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো) নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ পরিচালনা করা হবে। চলতি সময় থেকে ২০১৭ সালের জুন মেয়াদে এ সমীক্ষা চলবে। এরপরই মূল প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যেই সমীক্ষা প্রকল্পের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের পাঠানো হয়েছে।

সেতু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ওবায়দুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘সাবওয়ে নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে। আমরা চারটি রুট নির্ধারণ করেছি। সমীক্ষা শেষ করেই পূর্ণাঙ্গভাবে বলা যাবে, প্রাথমিকভাবে কোন কোন রুটে সাবওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। তার আগে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী খুঁজতে হবে। কারণ, এ প্রকল্পের ব্যয় হবে কল্পনাতীত, যা সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন’।

‘তবে প্রাথমিক কাজ যখন শুরু করেছি, তখন এ কাজ শেষ করতে পারবো’।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সমীক্ষা প্রকল্পের আওতায় সাবওয়ের অবস্থান, অ্যালাইনমেন্ট ও মোট দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা হবে। মূল প্রকল্পের বিভিন্ন উপাঙ্গগুলোর নির্মাণ পদ্ধতি নির্ধারণ, জিওটেকনিক্যাল ইনভেস্টিগেশন, সিসমিক স্ট্যাডি ও সার্ভে পরিচালনা করা হবে। ট্রাফিক কার্ভে পরিচালনার পাশাপাশি প্রকল্প এলাকায় কি পরিমাণে পুনর্বাসন করা হবে, তা নির্ধারণ করা হবে। প্রাথমিক নকশা প্রস্তুতের ওপর ভিত্তি করে প্রাক্কলিত সম্ভাব্য ব্যয়ও নির্ধারণ করা হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা শহরে বর্তমানে মোট জনসংখ্যা এক কোটি ৭০ লাখ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৮ হাজার মানুষের বসবাস। মোট সড়কের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ২৮৬ কিলোমিটার। যে কারণে যানজট এ শহরের নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা।  যানজটের কারণে প্রতি বছর ৫৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে সেতু বিভাগের মাধ্যমে সাবওয়ে নির্মাণ করা হবে।

সূত্র জানায়, সড়কপথে যেখানে ১০০ বাসে ঘণ্টায় ১০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারেন, সেখানে সাবওয়েতে ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করা সম্ভব। মাটির নিচে সাবওয়ে বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো নির্মাণ করা হলে জনসংখ্যার বিরাট একটি অংশ মাটির নিচ নিয়ে চলাচল করবে। ফলে ভূমির উপরিভাগে জনসংখ্যার চলাচল কমার ফলে যানজট অনেকাংশে কমবে।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ঢাকায় মেট্রোরেলের পাশাপাশি পাতালরেল নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিগগিরই এর সমীক্ষা চালানোর কথাও বলেছিলেন তিনি।

 

Related posts