শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৪জুন ২০১৭
শিক্ষা বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার। আর শিক্ষার অগ্রাধিকারের অগ্রাধিকার হলো কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা। এর প্রসারে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। তিনি বলেন, “কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমেই দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা সম্ভব। এ দক্ষ জনশক্তি দেশের উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। দেশের বাইরেও দক্ষ জনবল কাজ করার সুযোগ পাবে”বলেছেন,শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি ।
তিনি আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত আইডিইবি’র মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রাইভেট পলিটেকনিক ওনার্স এসোসিয়েশনের (বিপিপিওএ) দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
বিপিপিওএ-এর সভাপতি প্রকৌশলী মো. শামসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, কারিগরী ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আলমগীর, কারিগরী শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানযানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিপিপিওএ-এর সাধারণ সম্পাদক সোহেলি ইয়াসমিন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, মানসম্পন্ন পলিটেকনিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক শিক্ষা ব্যবস্থা একই মানে নিয়ে আসতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষা হবে দক্ষতামুখী। সনদভিত্তিক শিক্ষা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও জাতির জন্য বোঝা তৈরি করে। সরকার পর্যায়ক্রমে শিক্ষাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সমৃদ্ধ দেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক কারিগরি প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার যুগোপযোগী কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০২০ সালের মধ্যে দেশের মোট শিক্ষার্থীর ২০ ভাগ কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় উপনীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সরকারের নানাবিধ উদ্যোগ ও কর্মপরিকল্পনার ফলে ইতিমধ্যে এই হার ১৪ভাগে উন্নীত হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তরুণ সমাজ কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় সুশিক্ষিত হলে বেকারত্বের হার যেমন কমবে, তেমনি সমাজে স্বচ্ছলতার পরিমাণ বাড়বে, দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে। তিনি বলেন, কারিগরী শিক্ষার হার ২০৩০ সালে ৩০ ভাগ ও ২০৪০ সালে ৫০ ভাগে উন্নীত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। আমরা এখাতকে ৬০ ভাগে নিয়ে যেতে চাই। শিক্ষার গুনগতমান বজায় রেখে সরকারের এই অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উদ্যোক্তাগণ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন বলে তিনি দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে মাত্র ৪৯টি সরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে। সরকারী উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের ৪৬৭টি বেসরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভূমিকার প্রশংসার দাবী রাখছে উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিশেষ করে বেসরকারী পলিটেকটিক ইনস্টিটিউটসমূহে প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থীর ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির সুযোগ সৃস্টি করেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বেসরকারী ১৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩০ হাজারের বেশী শিক্ষার্থীকে ৮০০ টাকা করে আমার বৃত্তি দিচ্ছি। আমরা ৭ হাজার ৭৫৩টি ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিয়েছি। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য আমরা ২০ হাজারের বেশী শিক্ষককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তিনি প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অদীনে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে আমরা যথাসম্ভব দ্রুত ১০ হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো। তিনি বলেন, শিক্ষায় মুনাফার কোন স্থান নেই। উদ্যোক্তা হিসেবে আপনাদেরকে জনকল্যাণে কাজ করতে হবে।
ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, বর্তমান সরকার কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং সকলের প্রচেষ্টায় এ কার্যক্রমের অভীষ্ট ফসল জাতি অচিরেই পাবে।
নজরুল ইসলাম বাবু এমপি বলেন, কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে বেসরকারি উদ্যোগকে সরকারের পক্ষে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
অশোক কুমার বিশ্বাস বলেন, কারিগরি শিক্ষা সরকারের অগ্রাধিকারসমূহের মধ্যে একটি অগ্রাধিকার বিষয়। এখাতকে এগিয়ে নিতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকার অধিক সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে আসার জন্য জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।