২৬২০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা বদলে যাবে

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ১৮  ডিসেম্বর  ২০১৬

২৬২০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা বদলে যাবে

২৬২০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা বদলে যাবে

কপাল খুলছে নতুন জাতীয়করণকৃত ২৬ হাজার ২০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এসব স্কুলের অবকাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে ৫ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার।

এজন্য সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুসারে চলতি বছর থেকে ২০২২ সাল নাগাদ এসব বিদ্যালয়ের চেহারা বদলে যাবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি ‘চাহিদাভিত্তিক জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক এক প্রকল্প প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে এই প্রকল্প শিগগিরিই চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে।

নতুন জাতীয়করণকৃত যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে সেগুলোর উন্নয়নে এই যে প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে, তাতে ব্যয় ধরা হচ্ছে ৫ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা।

এ প্রকল্পের আওতায় ২৫ হাজার অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, ৫ হাজার বিদ্যালয়ে পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা, ২৩ হাজার শ্রেণিকক্ষে ও ২ শিক্ষক কক্ষে চেয়ার টেবিল ও আলমারি স্থাপন এবং শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর চলতি বছর থেকে ২০২২ সাল নাগাদ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৮১ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যায়লয়ে প্রায় ২ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে। সম্প্রতি সরকার ২৬ হাজার ৬০০টি নিবন্ধিত ও কমিউনিটি বিদ্যালয়কে শিক্ষকসহ জাতীয়করণ করেছে।

এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে সরকারি বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার পরিবেশ কিছুটা ভালো। কিন্তু এগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অত্যাধিক। ফলে শিক্ষার মান ঠিক রাখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার সার্বজনিনকরণ ও ৫ম শ্রেণিতে সমাপনী পরীক্ষাজনিত কারণে শিক্ষার সময় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যমান কাঠামোয় কার্যকরী ভূমিকা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এ অবস্থায় প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ৩০ শতাংশ বিদ্যালয়ের অবকাঠামো যুগোপযোগী করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জিয়াউল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে অবকাঠমো সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। এছাড়া ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার চাহিদা বাড়ছে। এ অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষার অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে যুগোপযোগী করা দরকার।

 

প্রকল্পের আওতায় ১০০০টি সোলার ইলেকট্রিক প্যানেল, ৫০০ বিদ্যালয়ে জমি অধিগ্রহন, ২৫ হাজার বিদ্যালয়ে জমি অধিগ্রহন সুবিধা, ১৫০০ বিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড রেইজিং, ১৮০০ বিদ্যালয়ে শিশুদের প্লে-কর্নার, ১০০০ বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেয়া হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এর আগে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় পিইডিপি-৩ এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে; যা নীতি নির্ধারণীসহ সব মহলে গৃহীত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, নতুন জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা সরকারি বিদ্যালয়গুলোর তুলনায় অনেক খারাপ। এ অবস্থায় শিক্ষার মান ধরে রাখা ও সার্বজনীন শিক্ষা নিশ্চিতে এসব বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি।

তিনি বলেন, পিইডিপি-৩ এর আওতায় এ ধরনের আরো কয়েকটি প্রকল্প রয়ে গেছে; যা সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে এসব প্রকল্প যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার সহায়ক হবে।

 

 

 

Related posts