শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১২ আগস্ট ২০১৬
সায়েন্স ফিকশন সিনেমার ফিকশনকে বুঝি আর ফিকশন বলার উপায় থাকবে না। কারণ যেভাবে সাইফাই সিনেমার দৃশ্যগুলো বাস্তবে চলে আসছে তাতে আর ফিকশন বলার কী আছে? বরং বলা যেতে পারে, সায়েন্স ফিউচার ফিল্ম।
হ্যাঁ, এটাই বোধহয় যোগ্য নাম হতে পারে। কেননা বেশির ভাগ আধুনিক প্রযুক্তি কিন্তু এসেছে এরকম বিজ্ঞান কল্পকাহিনি নির্ভর বই কিংবা সিনেমা থেকে। আমরা অনেক সময় দেখি নায়ক কিংবা ভিলেন এমন সব গাড়ি নিয়ে ছুটছেন যা বিমানকেও পিছনে ফেলে দিচ্ছে!
বাস্তবেও এমন যোগাযোগ ব্যবস্থা চলে আসছে। বিশ্ববিখ্যাত টেক প্রতিষ্ঠান টেসলা বা স্পেস এক্স এর পেছনের মানুষ এলন মাস্ক এই হাইপারলুপ প্রযুক্তির আবিষ্কারক। তিনি এমন এক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছেন যাতে করে মানুষ বা পণ্য গন্তব্যে পৌঁছবে বিমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে।
হাইপারলুপ একটি পাইপলাইনের মতো যোগাযোগ ব্যবস্থা। এখানে টিউবে করে যাত্রী বা পণ্য পরিবহন করা যাবে। অনেকটা ঢাকার শপিংমলগুলোর ক্যাপসুল লিফটের মতো। তবে পার্থক্য হলো এসব ক্যাপসুল আপনাকে নিয়ে যায় ওপরে বা নিচে আর হাইপারলুপ আপনাকে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নিয়ে যাবে গন্তব্যে।
হাইপারলুপের স্রষ্টা এলন মাস্কের মতে, এটা যেমন দ্রুতগতির ট্রেনের চেয়ে খরচ কম পরবে তেমনি দ্রুতগতির ট্রেনের চেয়ে এর গতিও বেশি হবে। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় শহরগুলো ঝুঁকে পড়ছে এর সুবিধা নিতে।
হাইপারলুপ এরই মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, সেখানে দ্রুতগতির যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। মরু শহর দুবাইও চাচ্ছে আধুনিক ভবিষ্যত যোগাযোগ গড়ে তুলতে। তাদের আমিরাত অব ফুজাইরাহ শহরে দুবাই থেকে যেতে লাগে দুই ঘণ্টারও বেশি। দূরত্ব ১০২ মাইল বা ১৬৫ কি.মি.।
দুবাই কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে এই পথ ১০ মিনিটেরও কম সময়ে পাড়ি দিতে! এবং ব্যাপারটা মোটেও দিবাস্বপ্ন নয়, এটা সম্ভব। কারণ হাইপারলুপ সিস্টেমে প্রতি ঘণ্টায় ৭৪০ মাইল অতিক্রমের আশা করছে।
তারমানে দাঁড়াল, হাইপারলুপের এই ব্যবস্থা জেট বিমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে পথ পাড়ি দেবে। যা একসময় কল্পনাও করা যেত না। সড়ক পথে সম্ভবত এটাই হবে সবচেয়ে দ্রুতগতির বাহন। দুবাই কর্তৃপক্ষ তাই ভবিষ্যত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। সেখানে বিশ্বের সব বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে তাদের আইডিয়া প্রদর্শনের জন্যে।
দ্য দুবাই ফিউচার ফাউন্ডেশন এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে যাচ্ছে যার নাম দেয়া হয়েছে, বিল্ড আর্থ লাইভ। এই প্রতিযগিতায় বিশ্বের বড় বড় বিশেষজ্ঞরা তাদের ভবিষ্যত যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকতম প্রযুক্তি উপস্থাপন করতে যাচ্ছে।
ধারণা করা যাচ্ছে এতে হাইপারলুপ বা এ ধরনের কোনো প্রযুক্তিকেই দায়িত্ব দেয়া হতে পারে ভবিষ্যত দুবাই গড়ে তোলার জন্যে। সেপ্টেম্বরেই এই আয়োজন হওয়ার কথা।
দ্য দুবাই ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আল জারগাউই বলেন, এই প্রতিযোগিতা আবিষ্কারকদের জন্যে একটি বিরাট প্ল্যাটফর্ম তাদের মেধা প্রদর্শনের জন্যে। আইডিয়াটা আসলেই চমৎকার। দুবাই পৃথিবীর সব এক্সপার্টদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে।
আমাদের দেশও চাইলে এমন একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে পারে। সেখানে হয়তো এতো আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার আইডিয়া চাওয়া নাও হতে পারে, অন্তত বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে যানজট মুক্ত করা যায় সেটা পরীক্ষা করা যেতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের এক্সপার্টদের এক প্ল্যাটফর্মে আনার এই আইডিয়া চাইলে আমরাও নিতে পারি।
আমাদের এখানে হাইপারলুপ না হোক, অন্তত ভালো কোনো নতুন আইডিয়া দিয়ে ঢাকার যানজট দূর করার পরিকল্পনা আহবান করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ১০২ মাইল পথ আমরা দশ মিনিটে নয়, অন্তত ষাট মিনিটে যেতে পারলেও আমাদের জন্যে তা হবে স্বপ্নের।
দুবাইর জন্যে যা বর্তমান, আমাদের জন্যে তা ভবিষ্যত হলেও আমাদের জন্যে তা বিরাট কিছু! আর অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কোনো ‘এলন মাস্ক’ এর অপেক্ষায় রইলাম, যেকিনা আমাদের উপহার দিতে পারবেন সুপার হাইপারলুপ।
হাইপারলুপ: বিমানের চেয়েও দ্রুতগতির সড়কপথ!
শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১২ আগস্ট ২০১৬
মো. রায়হান কবির : সায়েন্স ফিকশন সিনেমার ফিকশনকে বুঝি আর ফিকশন বলার উপায় থাকবে না। কারণ যেভাবে সাইফাই সিনেমার দৃশ্যগুলো বাস্তবে চলে আসছে তাতে আর ফিকশন বলার কী আছে? বরং বলা যেতে পারে, সায়েন্স ফিউচার ফিল্ম।
হ্যাঁ, এটাই বোধহয় যোগ্য নাম হতে পারে। কেননা বেশির ভাগ আধুনিক প্রযুক্তি কিন্তু এসেছে এরকম বিজ্ঞান কল্পকাহিনি নির্ভর বই কিংবা সিনেমা থেকে। আমরা অনেক সময় দেখি নায়ক কিংবা ভিলেন এমন সব গাড়ি নিয়ে ছুটছেন যা বিমানকেও পিছনে ফেলে দিচ্ছে!
বাস্তবেও এমন যোগাযোগ ব্যবস্থা চলে আসছে। বিশ্ববিখ্যাত টেক প্রতিষ্ঠান টেসলা বা স্পেস এক্স এর পেছনের মানুষ এলন মাস্ক এই হাইপারলুপ প্রযুক্তির আবিষ্কারক। তিনি এমন এক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছেন যাতে করে মানুষ বা পণ্য গন্তব্যে পৌঁছবে বিমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে।
হাইপারলুপ একটি পাইপলাইনের মতো যোগাযোগ ব্যবস্থা। এখানে টিউবে করে যাত্রী বা পণ্য পরিবহন করা যাবে। অনেকটা ঢাকার শপিংমলগুলোর ক্যাপসুল লিফটের মতো। তবে পার্থক্য হলো এসব ক্যাপসুল আপনাকে নিয়ে যায় ওপরে বা নিচে আর হাইপারলুপ আপনাকে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নিয়ে যাবে গন্তব্যে।
হাইপারলুপের স্রষ্টা এলন মাস্কের মতে, এটা যেমন দ্রুতগতির ট্রেনের চেয়ে খরচ কম পরবে তেমনি দ্রুতগতির ট্রেনের চেয়ে এর গতিও বেশি হবে। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় শহরগুলো ঝুঁকে পড়ছে এর সুবিধা নিতে।
হাইপারলুপ এরই মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, সেখানে দ্রুতগতির যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। মরু শহর দুবাইও চাচ্ছে আধুনিক ভবিষ্যত যোগাযোগ গড়ে তুলতে। তাদের আমিরাত অব ফুজাইরাহ শহরে দুবাই থেকে যেতে লাগে দুই ঘণ্টারও বেশি। দূরত্ব ১০২ মাইল বা ১৬৫ কি.মি.।
দুবাই কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে এই পথ ১০ মিনিটেরও কম সময়ে পাড়ি দিতে! এবং ব্যাপারটা মোটেও দিবাস্বপ্ন নয়, এটা সম্ভব। কারণ হাইপারলুপ সিস্টেমে প্রতি ঘণ্টায় ৭৪০ মাইল অতিক্রমের আশা করছে।
তারমানে দাঁড়াল, হাইপারলুপের এই ব্যবস্থা জেট বিমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে পথ পাড়ি দেবে। যা একসময় কল্পনাও করা যেত না। সড়ক পথে সম্ভবত এটাই হবে সবচেয়ে দ্রুতগতির বাহন। দুবাই কর্তৃপক্ষ তাই ভবিষ্যত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। সেখানে বিশ্বের সব বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে তাদের আইডিয়া প্রদর্শনের জন্যে।
দ্য দুবাই ফিউচার ফাউন্ডেশন এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে যাচ্ছে যার নাম দেয়া হয়েছে, বিল্ড আর্থ লাইভ। এই প্রতিযগিতায় বিশ্বের বড় বড় বিশেষজ্ঞরা তাদের ভবিষ্যত যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকতম প্রযুক্তি উপস্থাপন করতে যাচ্ছে।
ধারণা করা যাচ্ছে এতে হাইপারলুপ বা এ ধরনের কোনো প্রযুক্তিকেই দায়িত্ব দেয়া হতে পারে ভবিষ্যত দুবাই গড়ে তোলার জন্যে। সেপ্টেম্বরেই এই আয়োজন হওয়ার কথা।
দ্য দুবাই ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আল জারগাউই বলেন, এই প্রতিযোগিতা আবিষ্কারকদের জন্যে একটি বিরাট প্ল্যাটফর্ম তাদের মেধা প্রদর্শনের জন্যে। আইডিয়াটা আসলেই চমৎকার। দুবাই পৃথিবীর সব এক্সপার্টদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে।
আমাদের দেশও চাইলে এমন একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে পারে। সেখানে হয়তো এতো আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার আইডিয়া চাওয়া নাও হতে পারে, অন্তত বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে যানজট মুক্ত করা যায় সেটা পরীক্ষা করা যেতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের এক্সপার্টদের এক প্ল্যাটফর্মে আনার এই আইডিয়া চাইলে আমরাও নিতে পারি।
আমাদের এখানে হাইপারলুপ না হোক, অন্তত ভালো কোনো নতুন আইডিয়া দিয়ে ঢাকার যানজট দূর করার পরিকল্পনা আহবান করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ১০২ মাইল পথ আমরা দশ মিনিটে নয়, অন্তত ষাট মিনিটে যেতে পারলেও আমাদের জন্যে তা হবে স্বপ্নের।
দুবাইর জন্যে যা বর্তমান, আমাদের জন্যে তা ভবিষ্যত হলেও আমাদের জন্যে তা বিরাট কিছু! আর অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কোনো ‘এলন মাস্ক’ এর অপেক্ষায় রইলাম, যেকিনা আমাদের উপহার দিতে পারবেন সুপার হাইপারলুপ।