শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক। ফেসবুকের মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত অনেক কিছুই বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে থাকি। কখন কি করছি, কোথায় যাচ্ছি সব কিছুই আমরা ফেসবুকে জানাচ্ছি। কিন্তু আমাদের একটু ভেবে দেখা দরকার এই যে, আমরা সচারাচর নিজেদের যে ব্যক্তিগত বিষয়গুলো ফেসবুকে শেয়ার করছি সেটা আমাদের জন্য কতোটা নিরাপদ?
ফেসবুকের মাধ্যমের আমাদের অনেক বিষয়ই বাইরের লোকজন জেনে যাচ্ছে। এতে করে চাইলেই যে কেউ যে কোনো সময় দুর্বলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনাকে হেনস্তা করতে পারে। নিজেকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখতে তাই এখনি কিছু বিষয় ফেসবুকে শেয়ার করা বাদ দিন। অথবা কিছু বিষয় ফেসবুক থেকে এখনি মুছে ফেলুন।
ফেসবুকে শেয়ার করা বিভিন্ন তথ্য থেকে যে কেউ হিংসা পরায়ন হয়ে আপনার ক্ষতি করতে পারে। তাই আপনি মানুষকে কোন বিষয়গুলো জানাবেন আর কি জানাবেন না তা আপনাকেই চিন্তা করতে হবে।
আপনার আগ্রহ :
ফেসবুকে আপনার আগ্রহের কথা কখনোই শেয়ার করবেন না। এতে করে আপনার পছন্দ অপছন্দ অন্যরা জেনে যাবেন। এতে আপনার হয়তো খুব একটা ক্ষতি হবে না। তবে সময়ে অসময়ে এই বিষয় নিয়ে যে কেউ আপনাকে বিরক্ত করতে পারে।
আপনার জন্ম তারিখ :
অনেকেই নিজের জন্ম তারিখ ফেসবুকে উন্মুক্ত করে রাখেন। এটি আপনার জন্য অনিরাপদ। কারণ তথ্য প্রযুক্তির যুগে জন্ম তারিখ থেকেই অনেক তথ্য সংগ্রহ করেন হ্যাকারা। অথবা যেকোনো শত্রু এই বিশেষ দিনে টার্গেট করে আপনার ওপর হামলা চালাতে পারে। তাই ফেসবুকে জন্মতারিখ উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
বাড়ির ঠিকানা :
ফেসবুকে কখনো নিজের বাড়ির ঠিকানা শেয়ার করবেন না। এতে করে আপনি না চাইলেও অপরিচিত যে কেউ আপনার বাসার ঠিকানা জেনে যাবে। তাই কেউ যদি আপনার ক্ষতি করতে চায় তাহলে এই ঠিকানাটাই তার জন্য যথেষ্ট হবে।
আপনার কর্মস্থল :
ফেসবুকে কখনোই নিজের কর্মস্থল শেয়ার করবেন না। এতে বিপত্তি বাড়তে পারে। অনাকাঙ্খিত যে কেউ আপনার অফিসে হাজির হতে পারে।
আপনার শিশুর স্কুল :
গত কয়েক বছরের যৌন ও শিশু বিষয়ক অপরাধগুলো গবেষণা করে ইংল্যান্ডের শিশু বিষয়ক সংস্থা এনএসপিসিসি জানিয়েছে, অধিকাংশ অভিভাবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অসচেতন ছিলেন।
অনেক অভিভাবক শিশুদের নিয়ে অবেগাপ্লুত হয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। সেইসঙ্গে স্ট্যাটাসে তার শিশু কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে সেটাও জানিয়ে দেন অনেক বাবা-মা। এটি শিশুর জন্য নিরাপদ নয়। এতে শিশু অপহরণের ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে।
আপনার শিশুর ছবি :
অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বলেন, শিশুদের নিয়ে যেকোনো তথ্য শেয়ার করার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। যদিও অনেকেই শিশুদের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ে। দেখা গেল, শত্রুরা আপনার শিশুকে চিনে রাখলো। এরপর সুযোগ বুঝে শিশুটিকে ক্ষতি করলো।
বর্তমান অবস্থান :
যেখানে সেখানে সেলফি তুলে লোকেশন ট্যাগ করে দেওয়াটা অনিরাপদ। এর মাধ্যমে যে কেউ আপনার সর্বশেষ অবস্থান জানতে পারে। ফলে আপনার নিরাপত্তা আপনি নিজেই নষ্ট করছেন।
মোবাইল নম্বর :
অনেকেই মোবাইল কিংবা ফোন নাম্বার ফেসবুকে উন্মুক্ত করে রাখেন। যা সম্পূর্ণভাবে অনিরাপদ। যে কেউ আপনার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে সময়ে অসময়ে কল দিয়ে বিরক্ত করার সুযোগ পায়। মোবাইল বা ফোন নম্বর ব্যক্তিগত বিষয়। পরিচিত ব্যক্তিরা ছাড়া কাউকে মোবাইল নম্বর দেওয়া নিজের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়।