শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
যকৃতে চর্বি জমেছে চিকিৎসকের মুখে এ কথা শুনে আপনি চিন্তায় পড়ে গেলেনতো। এখন আপনার মনে প্রশ্ন এলো কেন এ চর্বি হয় এবং এতে কী ক্ষতি হতে পারে, এর চিকিৎসাই বা কি?
জীবনাচরণ ও খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব রয়েছে এ সমস্যার মূলে। অ্যালকোহল সেবনকারী এবং স্থূল ব্যক্তিদের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৭৫ শতাংশ। নারী-পুরুষ উভয়ই এতে আক্রান্ত হতে পারেন। শিশু-কিশোররাও এ থেকে মুক্ত নয়।
শরীরে চর্বি বিপাকপ্রক্রিয়ার অসামঞ্জস্য এবং ইনসুলিন অকার্যকারিতার জন্য যকৃতের কোষগুলোতে অস্বাভাবিক চর্বি, বিশেষ করে ট্রাইগ্লিসারাইড জমে। এতে যকৃতের ওজন হিসেবে ৫ থেকে ১০ শতাংশ চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। মোটামুটি ১০ থেকে ২৪ শতাংশ ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত।
যকৃতে চর্বি বা চর্বিজনিত রোগ মোটা দাগে দুই রকম অ্যালকোহলজনিত এবং অন্যান্য কারণজনিত। উভয় ক্ষেত্রেই, সাধারণ চর্বি জমা থেকে শুরু করে রোগটি নানা জটিল ধাপে অগ্রসর হতে পারে, যেমন- যকৃতের প্রদাহ, যকৃতের প্রদাহজনিত ক্ষত বা সিরোসিস, যকৃতের অকার্যকারিতা ইত্যাদি।
অ্যালকোহলজনিত কারণে এ থেকে যে সিরোসিস হয়, তাতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি, প্রায় ১০ শতাংশ।
আসুন জেনে নেই কারা ঝুঁকিতে আছেন?
* টাইপ ২ ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরল বা চর্বির আধিক্য, স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তি।
* যেসব পুরুষ দৈনিক ৩০ গ্রামের বেশি এবং নারী ২০ গ্রামের বেশি অ্যালকোহল সেবন করেন, সপ্তাহে অন্তত দুই দিন বা তার অধিক।
* পাকস্থলি ও পরিপাকতন্ত্রে অস্ত্রোপচারজনিত জটিলতা, অপুষ্টি, অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস।
* যকৃতের উইলসন্স ডিজিস, পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ, হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত ব্যক্তি।
* বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও চর্বি জমে; যেমন- স্টেরয়েড, এমিওডেরন, মিথোট্রেক্সেট, ডিলটিজেম, টেট্রাসাইক্লিন, কিছু অ্যান্টিভাইরাস ইত্যাদি।
* ক্ষতিকারক বিভিন্ন রাসায়নিক, যেমন- ফসফরাস, কীটনাশক, বিষাক্ত মাশরুম ইত্যাদি।
রোগ নির্ণয় : সাধারণত শুরুর দিকে এবং কোনো জটিলতা না থাকলে কোনো উপসর্গই থাকে না। অন্য কোনো কারণে পরীক্ষা করতে গিয়ে রোগ ধরা পড়ে। পেটের একটি আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে যকৃতের চর্বি সহজেই শনাক্ত করা যায়। টিস্যু পরীক্ষার মাধ্যমে কখনও রোগের শ্রেণি ও ধাপ নির্ণয় করা হয়।
যকৃতে চর্বি জমার ঝুঁকি ও কারণগুলোকে কেবল প্রতিরোধের মাধ্যমেই এ রোগের প্রতিকার সম্ভব।
মেডিসিন বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল