রোহিঙ্গাদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটবে’

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ২১  নভেম্বর  ২০১৬

রোহিঙ্গাদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটবে’

রোহিঙ্গাদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটবে’

‘এখানকার অবস্থা খুবই খারাপ’- ৭৭ বছর বয়সী রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা লা অংয়ের এ কথা বলার সময় গলা কাঁপছিল। বাঁশের তৈরি এক ক্যাম্পের ভেতরে বসে রাখাইনে সেনা নির্যাতনের গল্প বলছিলেন তিনি।

মিয়ানমারের সাবেক সামরিক জান্তা সরকারের আমলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য বহুবার জেল খেটেছেন সাবেক এ আইনজীবী। সেনা নজরদারির সঙ্গে তিনি অভ্যস্ত। কিন্তু লা অং বলছেন, ‘এবার সবকিছু আলাদা।’

তিনি বলেন, ‘সামরিক বাহিনী এসেছিল। তারা সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলছে অপরিচিত কাউকে যাতে এখানে না রাখা হয়।’ সন্দেহ এড়াতে বিভিন্ন শিবিরের রোহিঙ্গারা জড়ো হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে এসব শিবিরে আটক রাখা হয়েছে। অন্তত একটি গ্রামে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের নির্দেশ দিয়েছে বাড়ির চারপাশের বেড়া সরিয়ে ফেলতে। এখান থেকে কয়েক মাইল উত্তরে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলীয় মংডু শহরে সামরিক বাহিনী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাত বাড়ছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর প্রাণঘাতী কয়েকটি হামলার ফলে নতুন এ বিদ্রোহের সৃষ্টি। ধারণা করা হচ্ছে, এসব হামলার পেছনে রয়েছে প্রবাসী রোহিঙ্গারা। হামলার পরপর মারাত্মক দমন-পীড়ন শুরু হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কিছু স্যাটেলাইট থেকে ধারণকৃত ছবি প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, অনেক বাড়িঘর মাটিতে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। অনেক এলাকায় রোহিঙ্গা নারীরা সৈন্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে।

সেনারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রাষ্ট্রীয় মিডিয়াগুলোতে বলা হচ্ছে, ধর্ষণের অভিযোগ ভুয়া। এমনকি নিজেদের ঘরবাড়ি রোহিঙ্গারা নিজেরা পুড়িয়েছে বলে মিডিয়াতে দাবি করা হচ্ছে। বিদেশী সাংবাদিকদের এসব এলাকায় যেতে দেয়া হচ্ছে না।

লা অং বলেন, ‘এখন এমন অবস্থা ও দুর্দশার মধ্যে ৪ বছর পার করেছে মানুষ। অনেক তরুণ তাদের কৈশোর ও যৌবন পার করছে কিছু না করেই। ‘একে বিদ্রোহ মনে করেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, না। কিন্তু তারা কেবল যন্ত্রণাই ভোগ করছে আর করে যাচ্ছে। তাই তারা আর বইতে পারছে না। এক পর্যায়ে এ ক্ষোভ বিস্ফোরিত হবে।’

 

Related posts