বাংলাদেশের ওষুধ দখল করছে বিশ্ব বাজার

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশের ওষুধ দখল করছে বিশ্ব বাজার

বাংলাদেশের ওষুধ দখল করছে বিশ্ব বাজার

উৎপাদন ব্যয় কম হওয়ায় বাংলাদেশের ওষুধ দখল করছে বিশ্ব বাজার। অন্যান্য দেশে ওষুধের মূল্য যখন তুঙ্গে ঠিক সেই সময়ই ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। সস্তায় ওষুধ কিনতে সবার নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। দাম এতটাই কম যে অনেকেরই কাছে তা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না।

বিশ্ব বাজারে যে ওষুধের দাম ৪২৫ ডলার; বাংলাদেশে তা পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩২ ডলারে। ওষুধের এ সস্তা মূল্যে বিস্মিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং অন্যান্য দেশ।

কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকা, ব্রিটেনের আবিষ্কার করা ওষুধ বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে নামমাত্র মূল্যে। মিশন পরিষ্কার, বিনা ওষুধে কেউ যেন না মরে। বিশ্বের ১১৩ দেশ বাংলাদেশের মুখাপেক্ষী। রোগী বাঁচাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা ওষুধে। অনেক দেশ চাইছে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানি তাদের দেশে গিয়ে ওষুধ তৈরি করুক। তাদের সব রকম সুবিধা দেওয়া হবে। কারখানার জমি, কাঁচামাল, বিনিয়োগের অভাব হবে না। আপত্তি বাংলাদেশ সরকারের। ওষুধ শিল্পের সমৃদ্ধিতে দেশের লাভ। কর্মসংস্থান প্রচুর। বিদেশি মুদ্রার আয় বৃদ্ধি। স্বদেশে সস্তায় ওষুধ পাওয়ার সুযোগ।

২৭৮টি কোম্পানির ওষুধ বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাচ্ছে। বছরে তৈরি করছে ১৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার ওষুধ। শুধু অ্যালোপ্যাথিক ওষুধে আটকে নেই। রয়েছে ২৬৬ ইউনানি, ২০৫টি আয়ুর্বেদিক, ৭৯টি হোমিওপ্যাথিক আর ৩২টি হারবাল ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠান। তাদের উৎপাদন বছরে ৮৫০ কোটি টাকার।

সব কাঁচামাল দেশেই তৈরি হলে উৎপাদন খরচ আরও কমবে। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় তৈরি হচ্ছে পার্ক। ওষুধের সব কাঁচামাল সেখানেই হবে। দু’বছরেই কাজ শুরু। দামের সঙ্গে গুণগত মান যাতে বজায় থাকে সেদিকে নজর। বাংলাদেশের ওষুধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়াটা সহজ হয়নি।

ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট জানিয়েছেন, আমেরিকায় ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) ছাড়পত্র পাওয়া দুরূহ, সময়সাপেক্ষ। বাংলাদেশের ওষুধ তাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। গুণ প্রশ্নাতীত না হলে সেটা হত না। প্রয়োজনের ৯৮ শতাংশ ওষুধ বাংলাদেশ তৈরি করছে সব মান বজায় রেখেই।

ক্যান্সারের ওষুধের সঙ্গে বাংলাদেশ তৈরি করছে হেপাটাইটিস সি`র ওষুধ। বিশ্ববাজারে চাহিদা একচেটিয়া। ৮৪ ডোজের চিকিৎসায় এক ডোজের খরচ এক হাজার ডলার। পুরো কোর্সে খরচ ৮৪ হাজার ডলার। বাংলাদেশে তৈরি তার এক ডোজের দাম মাত্র ৮০০ টাকা। ওষুধের সঙ্গে গোটা চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি বাংলাদেশে। আগে দূরারোগ্য ব্যাধি নিরাময়ে বাংলাদেশের রোগীরা ছুটত ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, ব্রিটেনে। দিন বদলেছে। এখন বিদেশিরাই পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে চিকিৎসা করাতে। তাতে সুবিধা দু’দিকে। সস্তায় ওষুধ, ভাল চিকিৎসা। একমাত্র পাকিস্তানের রোগীরাই বাংলাদেশ বিমুখ।

 

Related posts