শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১২ মার্চ ২০১৭
জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জঙ্গিসঙ্গী খালেদা জিয়া জঙ্গির সঙ্গীত্ব ত্যাগ করেনি। জঙ্গি উৎপাদন-পুনরুৎপাদনের কারখানা বিএনপি এখনও প্রকাশ্যেই জঙ্গির সঙ্গী হয়েই আছে বলেছেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি এবং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ।
আজ শনিবার বিকেলে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাসদ আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, দেশ জঙ্গি দমনের যুদ্ধ পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। জঙ্গিবাদী নেটওয়ার্কগুলো চিহ্নিত হয়েছে। জঙ্গিবাদী নেটওয়ার্কগুলো ধ্বংসের অভিযান চলছে। তবে জঙ্গিরা এখনও সম্পূর্ণ পরাজিত হয়নি। আত্মসমর্পন করেনি।
তিনি বলেন, জঙ্গি দমনের যুদ্ধের চশমা দিয়ে দেশের চলমান রাজনীতি ও ভবিষ্যত রাজনীতির গতি-প্রকৃতি দেখতে হবে।
হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে সমাবেশে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, কার্যকরী সভাপতি এডভোকেট রবিউল আলম, সহ-সভাপতি মীর হোসাইন আখতার, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন খান, রেজাউল করিম তানসেন এমপি, আফরোজা হক রীনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন খান জকি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন,এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান যেমন অপরিহার্য ঠিক তেমনই জঙ্গিদের সম্পূর্ণ পরাজিত করা এবং জঙ্গির সঙ্গীকেও গণতান্ত্রিক রাজনীতির মাঠ থেকে বর্জন ও বিদায় করাও অপরিহার্য।
তিনি বলেন, নির্বাচন বা কোনো অজুহাতেই জঙ্গি ও জঙ্গি-সঙ্গীর সাথে আপস, সমঝোতা বা মিটমাটের সুযোগ নেই। নির্বাচন এবং জঙ্গি ও জঙ্গির সঙ্গীকে হালাল করা দলকষাকষির বিষয় না। জঙ্গি দমনের এ যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই জাতিকে রাজনীতি ও অর্থনীতির দুইটি অংক মেলাতে হবে।
জঙ্গি ও জঙ্গিসঙ্গীকে কোনো ছাড় না দিয়ে শুন্য সহিষ্ণ নীতির ভিত্তিতে দমন অভিযান অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, দুর্নীতির বিচার, আগুনে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিচার অব্যাহত রাখতে হবে। শান্তি ও উন্নয়নের ধারা বেগবান করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।
জাতীয় অর্থনীতিকে সাবলম্বিতা ও সমৃদ্ধির পথে আরেক ধাপ এগিয়ে নেয়ার আহবান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সুফল সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে শোষণ-বৈষম্য-দারিদ্র-দুর্নীতির অবসান এবং সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের পথে বাংলাদেশ পরিচালিত করতে হবে।
ইনু বলেন, নির্বাচন কখনই বিএনপির আসল এজেন্ডা না। বিএনপি ‘নির্বাচন’ বা ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার’ এর কথা বলে তাদের দিকে জনগণের অভিযোগের আঙ্গুল অন্যদিকে ঘুরাতে চায়। বিএনপি ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ নামে দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দিয়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে অস্বাভাবিক সরকার আনতে চায়। বিএনপির ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ দাবি দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেয়ার পাতা ‘ফাঁদ’, সংবিধান ও গণতন্ত্রের জন্য ‘গলার ফাঁস’।
জাসদ কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, জাসদ নেতার দল না, কর্মীদের দল। জাসদ নেতাদের ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতির হিসাব নিকাষ না করে, জাতীয় কর্তব্য ও জনগণের স্বার্থের হিসাব করে রাজনৈতিক নীতি-কৌশল প্রণয়ন করে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ বিরোধী চলমান যুদ্ধে বিজয় অর্জন এবং বাংলাদেশকে সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের পথে পরিচালিত করতে জাসদের নেতা-কর্মীরা সংগ্রামের পথে বলিষ্ঠভাবে এগিয়ে যাবে।
বৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে দুপুর ২টা থেকেই জাসদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন-পতাকা হাতে নিয়ে ক্যাপ মাথায় মিছিল করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থলে সমবেত হতে থাকেন।