শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৩১ আগস্ট ২০১৬
পবিত্র ঈদুল উল আজহা উপলক্ষে কমলাপুর রেল স্টেশনে তৃতীয় দিনের মত আজো (বুধবার) সকাল ৮টা থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ দেয়া হচ্ছে ৯ সেপ্টেম্বরের টিকিট। বিগত দুইদিনের তুলনায় টিকিট প্রত্যাশীদের আজ অনেক বেশি ভিড় দেখা গেছে।
বুধবার ভোর থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে টিকিট প্রত্যাশীদের। অনেকে আবার মঙ্গলবার দিনগত রাত থেকেই দাঁড়িয়েছেন লাইনে। গত দুই দিনের তুলনায় আজ যাত্রীর চাপ অনেক বেশি বলে মনে করছেন কমলাপুর স্টেশনে দায়িত্বরত রেলওয়ের কর্মকর্তারাও।
প্রতি বছর প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে নাড়ির টানে মানুষ ঘরে ফেরে। কিন্তু অগ্রিম টিকিট পেতে বিড়ম্বনা, পথে সীমাহীন ভোগান্তি, ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়, সড়ক পথে যানজট বা দুর্ঘটনায় সেই আনন্দ পরিণত হয় বিষাদে।
তারপরও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ পালন করতে বুধবার টিকিট-প্রত্যাশীরা লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছেন আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের টিকিটের জন্য। মূল অপেক্ষা কখন তার কাঙ্ক্ষিত সময় আসবে? হাতে পাবেন দীর্ঘ প্রতিক্ষার কাঙ্খিত দিনের টিকিট!
৯ তারিখে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের জন্য কমলাপুর স্টেশনের কাউন্টারের সামনে ভোর থেকে অপেক্ষমাণ মেহেদি হাসান বলেন, স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে টিকিট যুদ্ধে এসেছি। কিন্তু আজ যত বড় লাইন দেখছি। টিকিট পাবো কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত। এক বন্ধুর সঙ্গে টিকিট কাটতে গতদিনও এসেছিলাম, কালকের তুলনায় আজ টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড় কয়েকগুন বেশি।
রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের জন্য আপেক্ষমান বেসরকারি চাকুরীজীবী সাইদুর রহমান বলেন, ঈদ আসলেই আনন্দযাত্রা ভোগান্তি দিয়ে শুরু হয়। বাসের টিকিটের চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছি। তাই কমলাপুর এসেছি কাঙ্খিত দিনের টিকিটের আশায়। তবে যে দীর্ঘ লাইন, টিকিট পাবো বলে মনে হয় না।
কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, মোট ২৩টি কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এই কাউন্টার গুলোর সামনে থেকে মানুষের দীর্ঘ লাইন কমলাপুর রেলওয়ে থানার সামনে পর্যন্ত পৌঁছেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ বলেন, টিকিটের জন্য এত বড় লাইন আগে কখনও দেখিনি। আজই এতবড় লাইন দেখলাম।
তিনি আরো বলেন, কাউন্টারের প্রতিটি লাইনে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। এছাড়া আমারা নিজেরা সার্বক্ষনিক ভিডিও করছি। যে কারো আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে জিজ্ঞাসাবাদ করছি আমরা। কালোবাজি রোধে আমরা সার্বক্ষনিক সচেষ্ট আছি।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ২৯ আগস্ট থেকে ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। অগ্রিম টিকিট ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টায় বিক্রি শুরু হচ্ছে।
আজ (৩১ আগস্ট) বিক্রি হচ্ছে ৯ সেপ্টেম্বরের টিকিট। ১ ও ২ সেপ্টেম্বর যথাক্রমে দেয়া হবে যথাক্রমে ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর টিকিট।
এছাড়া ঈদ-পরবর্তী সময়ে রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট স্টেশন হতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ৫ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অগ্রিম বিক্রি হবে যথাক্রমে ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ এবং ১৮ সেপ্টেম্বরের টিকিট।
একজন যাত্রী সর্বাধিক চারটি টিকিট কিনতে পারবেন এবং বিক্রিত টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না। তবে ঈদে উপলক্ষে ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা পথে মৈত্রী ট্রেন চলাচল করবে না।