ভোটের দরকার নেই আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করুন

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ২৯  অক্টোবর  ২০১৬

ভোটের দরকার নেই আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করুন

ভোটের দরকার নেই আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করুন

মার্কিন নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগেই নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করার জন্য দাবি করলেন রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ভোটের দরকার নেই, নির্বাচন বাদ দিন, আমাকে প্রেসিডেন্ট পদে বিজয়ী ঘোষণা করুন। ওহাইও রাজ্যের টলেডোতে বৃহস্পতিবার এক সমাবেশে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করে এমন অদ্ভুত দাবি করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, এই মুহূর্তে আমি ভাবছি, আমাদের নির্বাচন বাতিল করা উচিত এবং ট্রাম্পকে এ পদ দেয়া হোক। খবর সিএনএনের।

সমাবেশে মার্কিন বাণিজ্য নীতি নিয়ে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারির কঠোর সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। সে সময় তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট পদে যোগ্য বলে আবারও দাবি করেন। এর আগে কয়েকবার হিলারির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্প। হিলারির বাণিজ্য নীতি সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, তার বাণিজ্য নীতি খুবই খারাপ। তার সঙ্গে আমাদের ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।

এ সময় হিলারির স্বামী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের স্বাক্ষরিত নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (নাফটা) প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ওই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে ওহাইও থেকে হাজার হাজার চাকরি মেক্সিকোতে চলে যায়। হিলারি ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে জিতলে যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমবাজারের স্থানান্তর ঠেকিয়ে দেবেন। ট্রাম্প বলেন, আমাদের উচিত এখনই নির্বাচন বাতিল করা এবং আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করা। ঠিক? আমরা এখনও কেন নির্বাচন করছি? তার নীতি অত্যন্ত বাজে। এ সময় ট্রাম্প সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন।

ট্রাম্প আরও বলেন, হিলারি এখন ওবামার স্বাক্ষরিত ১২ রাষ্ট্রের ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপের বিরোধিতা করলেও নির্বাচিত হলে ঠিক ওই চুক্তি বাস্তবায়নের পথ খুঁজবেন। নির্বাচনী প্রচারণায় নানা ধরনের বিতর্কের মুখেও সমর্থকদের মধ্যে নিজের অবস্থানকে সংহত করতে প্রতিদ্বন্দ্বীর সমালোচনা করে যাচ্ছেন ট্রাম্প।

১০ জনের মধ্যে ৬ জনের বিশ্বাস হিলারি জিতবে : নিজেকে প্রেসিডেন্ট পদে বিজয়ী দাবি করা ট্রাম্প গত কয়েক সপ্তাহ থেকে ভোটার সমর্থনে হিলারির চেয়ে পিছিয়ে আছেন। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসি নিউজের জরিপে উঠে এসেছে, নির্বাচনের জরিপগুলোতে সমর্থন দেয়া ভোটারদের ১০ জনের মধ্যে ৬ জন মনে করেন হিলারিই প্রেসিডেন্ট হবেন। ভোটের মাত্র ৯ দিন আগেও নির্বাচনী জরিপে হিলারির চেয়ে কম সমর্থন পেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ওয়াশিংটন পোস্টের জরিপে দেখা গেছে, হিলারি ৪৮ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪৪ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন।

রোববার এবিসি নিউজের এক পৃথক জরিপে দেখা গেছে, হিলারি ৫০ শতাংশের সমর্থন পেয়ে ১২ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন। সেখানে ট্রাম্প ৩৮ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন। এদিকে, ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসি নিউজের জরিপে দেখা গেছে, ৫৯ শতাংশ ভোটার মনে করেন হিলারি প্রেসিডেন্ট হবেন। ২৭ শতাংশের বিশ্বাস সহজেই জিতবেন তিনি এবং ৩২ শতাংশ মনে করেন নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। অন্যদিকে, ৩০ শতাংশ ভোটার মনে করেন ট্রাম্প জয়ী হবেন। ৯ শতাংশের বিশ্বাস সহজেই জিতবেন তিনি এবং ২১ শতাংশ ভোটার মনে করেন নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।

 

সবগুলো জরিপে পিছিয়ে থাকায় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। তার দাবি, প্রেসিডেন্ট পদ তার কাছ থেকে চুরি করে নেয়া হবে। কারণ নির্বাচনী ব্যবস্থা কারচুপিপূর্ণ। এই অভিযোগ তুলে নির্বাচনের ফল বর্জন করার ইঙ্গিতও দেন ট্রাম্প। হিলারি পাল্টা অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মহান গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন ট্রাম্প।

১০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অক্টোবরেই ৩৩ হাজার ডলার ব্যয় ট্রাম্পের : চলতি মাসেই নির্বাচনী প্রচারণায় ৩৩ হাজার ডলার ব্যয় করেছেন ট্রাম্প। যদিও তিনি ১০ কোটি ডলার ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে ৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার নিজের পকেট থেকে খরচ করেছেন ট্রাম্প। নির্বাচনের আর ৯ দিন বাকি। প্রতিশ্রুতি পূরণে এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনী বিজ্ঞাপন, সাক্ষাৎকার ও বিভিন্ন প্রচারণায় আরও ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার প্রয়োজন রয়েছে। বুধবার সিএনএনকে তিনি বলেন, নির্বাচনে নিজের পকেট থেকে এ পর্যন্ত ১০ কোটি ডলার ব্যয় করেছি। প্রয়োজন পড়লে আরও করব। রিপাবলিকান দল এ পর্যন্ত ১০০ কোটি ডলার খরচ করছে। প্রতি মাসে ২০ লাখ ডলার ব্যয় হয় বিজ্ঞাপন ও প্রচারণায়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রিপাবলিকান দলের খরচের নথিতে দেখা গেছে, অক্টোবর মাসের প্রথম ১৯ দিনে ৩১ হাজার ডলার ব্যয় করেছে রিপাবলিকান শিবির। এছাড়া ২০ তারিখেই ট্রাম্প বিভিন্ন সমাবেশ ও অন্যান্য কাজে ব্যয় করেছেন ২ হাজার ৬০০ ডলার।

 

Related posts