শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৪ নভেম্বর ২০১৬
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে জমজমাট আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। ঘরোয়া ক্রিকেটের এই আসরে অনেকের গায়ে লাগিয়ে দেয় তারকা খ্যাতি। অনেকে নজরকাড়া পারফর্ম করে টোকা মারেন জাতীয় দলের দরজায়। বিপিএলকেও তাই ক্রিকেটাররা পাখির চোখ করে এখানে পারফর্ম করার মরিয়া চেষ্টা করেন।
বিপিএলের চতুর্থ আসরেও নিশ্চয় কোন না তারকার জন্ম হবে। কেউ বা জাতীয় দলের ঢোকার দাবি জোরালো করবেন। আবার অনেকে জাতীয় দলে থিতু হয়ে আছেন, তারাও ব্যাট ও বলে জ্বলে উঠবেন।
শাহরিয়ার নাফীস (বরিশাল বুলস) : চট্টগ্রাম টেস্টে খেলার সম্ভাবনা জেগেছিল এক সময়কার বাংলাদেশের অপরিহার্য ওপেনার শাহরিয়ার নাফীসের। কিন্তু টিম কম্বিনেশনের কারণে দলে তার জায়গা হয়নি। এবার জাতীয় লিগের চারদিনের ম্যাচে দারুণ ধারাবাহিক ছিলেন নাফীস। এই ধারাবাহিকতারই সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলে ডাক পেয়ে। গতবার বরিশাল বুলসের হয়ে বিপিএল খেলা নাফীস এবারও খেলবেন সেই বরিশালেই। জাতীয় দলে ঢোকার মঞ্চ হিসেবে তিনি যে বিপিএলে বড় কিছুর চিন্তা করবেন সেটা না বললেও চলে।
মুমিনুল হক (রাজশাহী কিংস) : বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে গড় বেশি যে ব্যাটসম্যান তার নাম মুমিনুল হক। শুরুর দিকে কক্সবাজারের এই ব্যাটসম্যান টেস্টের পাশাপাশি ওয়ানডে খেললেও এখন শুধুই টেস্ট খেলছেন। ওয়ানডে বা টি২০ তে নির্বাচকরা মুমিনুলকে নিয়ে ভাবেন না! টিম কম্বিনেশনের কারণে হয়তো ওয়ানডে ও টি২০ দলে জায়গা হচ্ছে না তার। কিন্তু সুযোগ পেলেই ছোটখাটো গড়নের মুমিনুল জানিয়েছেন, তার সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে ফেরার কথা। এবার হয়তো বিপিএলে পারফর্ম করে চেষ্টা করবেন নির্বাচকদের নজরে আসার। এটা হলে রাজশাহীরও লাভা, বাংলাদেশেরও।
আবু হায়দার রনি (বরিশাল বুলস) : বিপিএলের গত আসরে সবচেয়ে বড় চমক ছিলেন পেসার আবু হায়দার রনি। অনেকে বলেছিলেন, বাংলাদেশ আরেকজন মোস্তাফিজুর রহমান পেয়ে গেল। জাতীয় দলে অভিষেক হলো রনির। কিন্তু তারপর থেকেই কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যে কারিগর। এখন আর কেউ তাকে নিয়ে মাতামাতি করেন না। রনিও নিশ্চয় বুঝেছেন, রাতারাতি তারকা হওয়া আর দলে জায়গা ধরে রাখা এক জিনিস নয়। তার সামনে বড় মঞ্চ হিসেবে এসেছে চতুর্থ বিপিএল। তবে এবার আর কুমিল্লা নয় রনি খেলবেন বরিশাল বুলসে। সেখানে নিশ্চয় চাইবেন নিজের সামর্থ্য আরেকবার প্রমাণ করতে।
মেহেদী হাসান মিরাজ : অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেই আলোয় এসেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে আরো একবার নিজেকে প্রমাণ করলেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। মূলত টেস্ট ক্রিকেটের নবীন সদস্য মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতেই হেরে যান ইংলিশরা। দুই টেস্টে নিয়েছেন ১৯ উইকেট। সেই মিরাজ এবার নামছেন বিপিএল মিশনে। নবাগত দল রাজশাহী কিংসের হয়ে খেলবেন তিনি। প্রথমবারের মতো এ টুর্নামেন্টে খেলতে আসা এ তরুণের কাছে ক্রিকেটভক্তদের প্রত্যাশাটা এখন অনেক বেশি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে না পারলেও বিপিএলে তিনি ব্যাটিংটা ভালো করবেন। দুই বিভাগেই সমান তালে পারফর্ম করতে দারুণ পারদর্শী ১৮ বছরের এই যুবা।
সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডাইনামাইটস) : স্থানীয় ক্রিকেটার নিয়ে এবার সবচেয়ে শক্তিশালী দল গড়েছে ঢাকা ডাইনামাইটস। পাশাপাশি বেশকিছু তারকা বিদেশি ক্রিকেটারের অন্তর্ভুক্তিতে কাগজে কলমে বাঘের কাতারেই নাম লিখিয়েছে দলটি। ঢাকার অধিনায়ক করা হয়েছে রংপুর রাইডার্স ছেড়ে আসা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এবারের বিপিএলে দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকটিও পাচ্ছেন এ অলরাউন্ডার। ব্যাটে-বলে আলো ছড়ানোই যার বড় শক্তি। আগের তিন আসরের মতো এবার নজর কাড়বেন সবার। আর তাতে বিপিএল হয়ে উঠবে আরো বেশি জমজমাট।